হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি বা হোমিও আসলে এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে কোনো মিথ্যা নেই। হোমিওপ্যাথি আদর্শ ডাক্তারগণ প্রতিটি রোগীর চিকিৎসা খুব সুক্ষ্মভাবে করে থাকেন।
আজ আমরা তিনজন স্বনামধন্য হোমিও চিকিৎসকের মর্মবানী জানবো অর্থাৎ উনারা ব্যক্তি জীবনে কিভাবে প্রতিটি রোগীর চিকিৎসা করে সফল হয়েছেন তা জানবো।
আপনারা যারা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তারা এখানে উল্লেখিত চিকিৎসা পদ্ধতি অবশ্যই প্রয়োগ করতে পারেন কিন্তু যারা ছাত্র কিংবা সাধারন মানুষ তারা অনুগ্রহ করে নিজের উপর নিজেই ওষুধ প্রয়োগ করতে যাবেন না।
এতে আপনার ক্ষতি হতে পারে। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. ডা. উইলিয়ামসন
আর্টিকা ইউরেন্স: সব ধরনের আমবাতেই আর্টিকা ইউরেন্স উপকারী। বিশেষ চিংড়ি ইত্যাদি খোলসযুক্ত মাছ খাওয়ার পর আমবাত হলে অর্থাৎ আক্রান্ত স্থানে চুলকানি , জ্বালা ও হুল ফোটানো ব্যথা থাকলে এবং ব্যথার স্থানে রোগী বার বার হাত বুলাতে চাইলে, ত্বক ফুলে উঠলে এবং সেখানে ফুসকুড়ির মতো উদ্ভেদ বের হলে এই ওষুধ তাৎক্ষণিক ক্রিয়া করে।
এন্টিম ক্রড: গ্যাস্ট্রিক লক্ষণের সাথে আমবাত হলে এন্টিম ক্রড বিশেষ উপকার দর্শে।
এপিস মেলা: কোনো উদ্ভেদ বসে গিয়ে মেনিনজাইটিস হলে বা মস্তিষ্ক সম্বন্ধীয় অন্য কোনো রোগ হলে এপিস মেলা উপকারী।
ককুলাস: রাতে ট্রেনে বা জাহাজে চলাকালীন যে কোনো অসুস্থতায় ককুলাস ২০০ এক বা দুই ঘন্টা পর পর প্রয়োগ করলে অব্যর্থ ফল দেয়।
কোনিয়াম ম্যাক: টিউমার সৃষ্টি হলে কোনিয়াম ম্যাক স্মরণীয়। এটি ২০০ থেকে প্রয়োজনে উচ্চশক্তিতে ব্যবহার্য।
গসিপিয়াম হর্বেশিয়াম: গসিপিয়াম হার্বেশিয়াম ওষুধ ব্যবহার করে আমি রজঃবিলোপ, রজঃশূল ও অতিরজঃরোগ আরোগ্য করেছি।
মাইগেল ল্যাসিওডোরা: আমি একজন বালককে কিছুকাল মাইগেল ল্যামিওডোরা ওষুধ নিম্নক্রমে সেবন করিয়ে বালকের আক্ষেপিক লক্ষণের প্রকাশকালীন তার বক্র লিঙ্গোদ্রেক সমস্যার ফলপ্রাপ্ত হয়েছি। পরবর্তীকালে উচ্চক্রমেও উপকার পাওয়া গেছে।
২. ডা. উডিয়েট:
আর্জেন্ট নাইট: অক্ষিপুটের পেশির পক্ষাঘাতজনিত দুর্বলতাবশত সম্যক দৃষ্টির প্রতিবন্ধকতায় আর্জেন্ট নাইট বিশেষ উপকারী। কোথাও যাওয়ার প্রক্কালে মলত্যাগের বেগ হয় লক্ষণে আর্জেন্ট নাইট ফলপ্রদ।
এমিল নাইট্রেট: চোখের নিচের পাতা থলির মতো ফুলে গেলে এমিল নাইট্রেট উপকার দেয়।
ক্যালি কার্ব: চোখের উপরের পাতা থলির মতো ফুলে গেলে ক্যালি কার্ব বিশেষ উপকারী।
জেলসিমিয়াম: পক্ষাঘাতের মতো দুর্বলতা বা ভারবোধ ও তন্দ্রাচ্ছন্নতা বিশেষ করে চোখের পাতায় ভারবোধ লক্ষণে জেলসিমিয়াম বিশেষ উপকার দর্শে।
নাক্স ভম: অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম বা ইন্দ্রিয় সেবা, রাত জাগার কারণে অসুস্থ হওয়া, স্ত্রী সহবাসে অধিক দুর্বল হওয়া, মাদক দ্রব্য সেবনে বা গুরুপাক দ্রব্য ভোজনে অসুস্থ রোগীদের জন্য নাস্ক ভম উপযোগী।
রুটা গ্র্যাভিওলেন্স: মাংস খাওয়ার পর আমবাত রোগ হলে রুটা গ্র্যাভিওলেন্স প্রয়োগ করা যেতে পারে।
লিলিয়াম টিগ: অক্ষিপুটের আক্ষেপে লিলিয়াম টিগ যে ফলাফল প্রদান করে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
সিনা: শিশুর লিঙ্গ নিয়ে খেলা করলে বা লিঙ্গ নাড়াচাড়ার মতো বদঅভ্যাস থাকলে হোমিও ওষুধ সিনা ভালো ফল দেয়।
৩. ডা. উলফ:
এপিস মেল: গুটিকাবিহীন মস্তিষ্কঝিল্লি-প্রদাহের ক্ষরিতস্রাব দূরীকরণে এপিস মেলের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে।সদ্যজাত শিশুর নাভীচ্ছেদের পর বিসর্পে এপিস মেল অতিশয় ফলপ্রদ।
এপিস মেল: জিহ্বায় ফোস্কার মতো ঘা, মুখ গোলাপি লাল ও ফোলা, ঘায়ে হুল ফোটানো ব্যথা , জিহ্বার ধার ওও সমস্ত মুখের ভেতর হেজে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণে এপিস মেল বিশেষ উপকার দর্শে।
মেডোরিনাম: গনোরিয়াজনিত বাতরোগে বা গনোরিয়া রুদ্ধ হয়ে বাতরোগ হলে সেক্ষেত্রে মেডোরিনাম ব্যবস্থেয়।
টিউবারকুলিনাম বোভি: টিউবারকুলিনাম বোভি ঘন ঘন প্রয়োগ করা নিষেধ , এতে রোগীর হিতের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়।
স্পঞ্জিয়া: স্পঞ্জিয়া প্রয়োগকালে রোগীকে মিষ্টি, কোমল পানীয়জাতীয় খাবার খেলে বিরত থাকার নির্দেশনা দিতে হবে।
ফসফরাস: চোখের সমস্ত পাতা থলির মতো ফুলে গেলে ফসফরাস বিশেষ উপকার দেয়।
পরিশেষে বলা যায়, যেকোন রোগের চিকিৎসায় হোমিও চিকিৎসার উপর আপনি নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারেন। উপকার কম হলেও ক্ষতি হবে না।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণসমূহ এবং চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জেনে নিন।