হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা বর্তমানে আগের মতো নেই। এখন আপনি যখন একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের কাছে যাবেন তখন দেখবেন যে, অ্যালোপ্যাথির মতো করে ওষুধ দিচ্ছে। এই বিষয়গুলো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরুপ। আজ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থার বর্তমান উন্নতি বনাম অবনতি নিয়ে কিছু বাস্তবসম্মত/চোখে দেখা বিষয় নিয়ে কথা বলবো।
ছোটবেলায় হয়তো মাঝে-মধ্যে বাবা-মা ওষুধ নিয়ে আসতেন সেটা আমার মনে নেই। তখন তো আর অতকিছু বুঝতাম না। ধীরে ধীরে যখন বড় হতে থাকলাম তখন আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি। আমিও ভাবতাম যে, হোমিও শুধু বাচ্চাদের ওষুধ। আপনারা হয়তো জানেন বা অনেকেই পড়েছেন আমার আর একটি লিখা যেটা সোরিয়াসিস রোগ নিয়ে লেখা। ‘দূরারোগ্য ব্যাধি’ নামক মিনুতে সার্চ করলেই পাবেন।
আমি ২০১৬ সালের দিকে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম। প্রথমদিকে আমিও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাই করেছি। কিন্তু শেষে ব্যর্থ হয়ে হোমিওপ্যাথিতে যাই। আর সেই হোমিওপ্যাথির আদলে আজ পর্যন্ত আমি সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন-যাপন করছি। আমি ভালো আছি এ কথা আমি দ্ব্যর্থহীনভাবেই বলতে পারি। তো, মূল কথায় আসি। আমি আজ যে ব্যাপারটি তুলে ধরতে চাচ্ছি সেটা হলো – হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের চিকিৎসা পদ্ধতি যেটা আমার চোখে ধরা পড়েছে।
যারা হোমিওপ্যাথি নিয়ে পড়াশোনা করছেন কিংবা করেছেন তারা তো অবশ্যই জানেন যে, হোমিওপ্যাথি রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা করে এবং এটা পুরোটাই লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা। অর্থাৎ রোগ যেমনই হোক না কেন, লক্ষণ যেমন থাকবে রোগীর চিকিৎসা’ও তেমন হবে। আর সুক্ষ্যমাত্রার কথা বলা হয়েছে হোমিওপ্যাথিতে। মহাত্মা হ্যানিম্যান/হানিমান তিনিও এই সুক্ষ্যমাত্রার কথা বলে গেছেন অনেক বার।
অর্থাৎ একজন রোগীকে একটি মাত্র ওষুধ দেয়ার নিয়ম। এটাই কিন্তু হোমিওপ্যাথির মূল নিয়ম। কিন্তু চারপাশে তাকালে দেখা যায়, এই নিয়ম আস্তে আস্তে যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ দুই একজন ডাক্তার এই নিয়ম মানছেন কিন্তু বাকি’রা কেউ মানছেন না। রোগী কিন্তু সবার কাছেই কম বেশি ভালো/সুস্থ্য হচ্ছেন। যিনি একই রোগের জন্য রোগীকে কয়েক প্রকার ওষুধ দিচ্ছেন তার ফলাফলটা যে খারাপ আসছে তা কিন্তু নয়।
আবার, যিনি একটি মাত্র ওষুধ দিচ্ছেন তার ফলাফলও খারাপ নয়। আমি আমার আশেপাশের কথা যদি বলি, সেখানে প্রায় ১৫ জন ডাক্তার রয়েছে। আমি স্থানের নাম বলছি না। কোনো ডাক্তারের নামও মেনশন করছি না। তারা কেউ সুক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সচেতন নয়। একদিন এক হোমিও দোকানে বসে আছি। হঠাৎ একজন ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ মানুষ আসলো।
আমি তো মনে করছি তিনিই রোগী। তো রোগী আসলে তিনি নয়। তিনা’র বউ রোগী। কি হয়েছে? হয়েছে লিউকোরিয়া। খুব সাদাস্রাব যাচ্ছে সাথে প্রচন্ড ব্যথা। কোনভাবেই থামছে না। এর কয়েকদিন আগে ঐ লোক ওষুধ নিয়ে গিয়েছিলেন। শুনলাম ৫ প্রকারের ওষুধ উনি নিয়েছেন। আজ আবার উনাকে আরও ৪ প্রকারের ওষুধ দেয়া হচ্ছে।
তখন ঐ লোক বলছে ‘কি ব্যাপার ডাক্তার সাহেব, ওষুধ কিন্তু ৯ প্রকার হয়ে গেল’। তখন ডাক্তার সাহেব বলল যে, ‘সমস্যা নেই এগুলো খেতে হবে’। আসলে উনাকে ডাক্তার বলাটা ঠিক হবে না। ৯ প্রকারের ওষুধ দিয়েছে এজন্য নয়। আসলে উনি কোনো মেডিকেল কলেজে পড়ে না। উনি ঐ ওষুধের দোকানে ১০ বছর থেকে কাজ করেন। তাতে উনার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে।
সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই উনি চিকিৎসা দেয়। বয়স খুব বেশি নয় – এই ধরুন ২৫ বছরের মতো। অন্যদিকে, আমার ওয়াইফকে কোন এক সময় রংপুরে নিয়ে গিয়েছিলাম সিটি স্ক্যান করার জন্য। সিটি স্ক্যান করার পর যে রেজাল্ট আসলো তাতে কোনো সমস্যা উল্লেখ ছিল না। অর্থাৎ রেজাল্ট ছিল নরমাল। আমার ওয়াইফ এর খুব মাথা ব্যথা হতো।
এই জন্যই সিটি স্ক্যান করিয়েছিলাম। যখন রেজাল্ট নরমাল আসলো তখন ভাবলাম, অ্যালোপ্যাথিতে আর কি চিকিৎসা করবো? কোনো সমস্যাই তো ধরা পড়লো না। মানে ১ বছর থেকে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাই করতেছিলাম। কিন্তু ফলাফল মোটেও ভালো ছিল না।
পরে রংপুর থেকে ফেরৎ এসে আমার কাছের শহরে নামার পরে সেখানকার এক হোমিও ডাক্তারের কাছে যাই। তিনি রিপোর্টটা দেখলেন। তেমন কোনো মন্তব্য করলেন না। তবে আমাদের প্রতিদিনকার চলাফেরা, খাদ্যাভাস এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অনেক কথা বললেন। বুঝালেন, এসব কারণেই এই রোগগুলো হয়ে থাকে।
আমার তেমন ভালো লাগছিল না। কারণ, আমার ওয়াইফকে নিয়ে আমি সত্যিকার অর্থে অতীষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলাম। পরে ঐ ডাক্তার সাহেব আমাকে ৭০০ টাকার ওষুধ দিলেন। বেশ কয়েক প্রকারের ওষুধ। সাথে কয়েকটি ফাইলও ছিলো। ওষুধগুলো নিয়ম করে আমার ওয়াইফকে খাওয়ালাম।
মোটামুটি আরাম পেয়েছিল। বেশ কিছুদিন সুস্থ্যও ছিলো। তারপর আবার আগের মতো হয়ে যায়। এখানে কি বুঝলেন? এক প্রকারের একটি মাত্র ওষুধ দিলে আমার আসলে পছন্দও হতো না। যদিও হোমিওপ্যাথিতে পছন্দ অপছন্দের কোনো স্থান নেই। আমার ওয়াইফের আসলে সমস্যা ছিল অন্য জায়গায়।
আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, আমার ওয়াইফের জিন সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। আর মানুষে কিছু করে রাখছিল যেটাকে আমরা যাদু-টোনা বলে অভিহিত করি। পরে এসবের চিকিৎসা করলে সে সুস্থ্য হয়ে যায়। এখন পুরোপুরি ভালো আছে। তাহলে যারা এসব একেবারেই বিশ্বাস করেন না তারা আমার ওয়াইফ এর বিষয়টিকে কোন চোখে দেখবেন? প্রশ্ন রইল। কমেন্ট করে জানাবেন।
আবার, আরও একজন মহিলা ডাক্তারের কথা যদি বলি, আপনারা আরও কিছুটা হতবাক হবেন। ডাক্তার হিসেবে উনি হয়তো বা ভালো। কিন্তু, যে রোগীই উনার কাছে যাক না কেন, উনি ন্যূনতম ৫০০ টাকার ওষুধ দিয়ে দেন। তাছাড়া, ওষুধের দাম একটু বেশিই নেন। অনেকেই অভিযোগও করে।
কিন্তু, অভিযোগ করেও তো কোনো লাভ নেই। কারণ, সবাই তো আর ওষুধের দাম সম্পর্কে জানে না। সেখানে, সুক্ষ্যমাত্রা বলে কোনো কথা হয়তো উনার কাছে নেই। রোগী যে ভালো হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। রোগী ভালো হচ্ছে এবং বাজারের অন্যান্য ডাক্তারের তুলনায় ইনার কাছে রোগীও বেশি। তাহলে কি বুঝবেন? কিন্তু এখানে বোঝা-বুঝির কিছু নেই। বিভিন্ন ওষুধ একসাথে প্রয়োগ করলে এবং বেশি পরিমাণে প্রয়োগ করলে শরীরের জন্য তা ক্ষতিকর।
যদিও প্রথম দিকে তা বোঝা যায় না। ঐ মহিলা ডাক্তার যে হোমিওপ্যাথির বিরুদ্ধাচরণ করছে এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। আবার, আমার এক বড় ভাই যিনি সম্প্রতি রংপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে ডি,এইচ,এম,এস পাশ করেছেন তিনি একটু আলাদা রকম।
তিনি সুক্ষ্যমাত্রা ছাড়া কোনো ওষুধই প্রয়োগ করেন না। রোগী গেলে উনি একটু সময় বেশি নেন কিন্তু ওষুধ দেন সর্বোচ্চ ৫০ টাকার। মানে ভিজিট খরচ এখনও নেন না। হয়তো ভবিষ্যতে নিতে পারেন। উনার কাছেও কিন্তু যথেষ্ট রোগী যায়। উপকৃত হওয়া রোগীর সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। অনেক সময় আবার বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেখি, অনেক বিএইচএমএস ডাক্তারও একাধিক ওষুধ প্রয়োগ করছেন। আসলে, এটার ভালো-মন্দ বলার যোগ্যতা আমার এখনও হয়ে ওঠেনি।
আমি শুধু এই টুকু বলতে পারি যে, তারা তো আর না বুঝে ওষুধ প্রয়োগ করছেন না।
তবে কিছু কারণ আমি বলতে পারি। এটা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞাণের সামান্য অন্বেষণ বলা যেতে পারে। সেদিন আমার এক কলিগ ভাই (এসকেএফ কোম্পানীতে একসাথে চাকুরী করেছি) আমাকে ফোন করে বলল যে, উনার মায়ের নাকে পলিপাস হয়েছে। জটিল আকার ধারণ করেছে।
আমার কাছে পরামর্শ চাইছে আসলে এখন কি করা উচিত। আমার কাছে অবশ্য হোমিওপ্যাথি বিষয়েই পরামর্শ চাইছিল। আমি প্রথমে বিষয়টা পুরো জানতে চাইলাম। অর্থাৎ উনি কোনো ডাক্তারকে দেখাইছে কিনা তা জানতে চাইলাম। তখন উনি বললেন, অ্যালোপ্যাথি ডাক্তারের কাছে উনি উনার মা’কে নিয়ে গিয়েছিলেন।
৫০০০ টাকার মতো খরচ হবে এমন অনেকগুলো টেস্ট করতে দিয়েছেন। বিগত ৬ মাস থেকে অবশ্য অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাই কিন্তু করাচ্ছিলেন। কিন্তু উপকার তেমন হয়নি। তাহলে দেখুন, টেস্ট করতেই ৫০০০ টাকা। তারপর আবার ডাক্তারের ভিজিট, ওষুধের দাম এবং আরও কত কি! তাহলে কতো খরচ।
অথচ, একজন হোমিও ডাক্তার এর কাছে যদি এরকম রোগী নিয়ে যান এবং ডাক্তার সাহেব যদি সুক্ষ্যমাত্রার চিকিৎসা দেন তাহলে আপনি কি ডাক্তারকে বেশি টাকা দেবেন? ডাক্তার যা চাইবে তাই-ই দিবেন কিন্তু। সেটা কিন্তু ৫০০ টাকার উপরে হয়তো যাবে না।
তাহলে অ্যালোপ্যাথিতে অনর্থক অনেক সময় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায় কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে হয় না। আবার, হোমিওপ্যাথি ডাক্তার’রা অ্যালোপ্যাথি ডাক্তার এর তুলনায় এদিক থেকে কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে। আমি অর্থনীতির কথা বললাম। আবার, হোমিওপ্যাথি ডাক্তার সাহেব যখন আপনাকে একটি মাত্র ওষুধ দেবেন তখন আপনার পছন্দও হয়তো হবে না।
এটা সবার ক্ষেত্রে না। অনেকেই এরকম আছে যারা পছন্দ করবে না কিংবা বিশ্বাস-ই করবে না। হোমিওপ্যাথিতে বিশ্বাস বলেও একটা ব্যাপার আছে। তাহলে কেন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার’রা সুক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সচেতন হবেন? যদিও সচেতন হওয়া উচিত। কিন্তু, পরিস্থিতি তাদের বাধ্য করছে এমনটা করতে।
এখন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও অনেক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল, মলম, শরবত বা সিরাপ এবং পাউডার জাতীয় ওষুধ পাওয়া যায়। প্রায় অ্যালোপ্যাথির মতোই সিস্টেমে সেগুলো তৈরী করা। ঐ সব ওষুধের ক্ষেত্রে তো আর সুক্ষ্যমাত্রা বিবেচনা করা যাবে না। বিবেচনা করা গেলেও সেটা নিরুপণ করা খুবই কঠিন ব্যাপার। কারণ, সিরাপ ও ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে আপনি কিভাবে সু্ক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবেন? প্রশ্ন রইলো।
যখন একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার সুক্ষ্যমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করেন অনেক রোগী তা অগ্রাহ্য করে। ৩০/৫০ টাকা দিয়ে ওষুধটা বাড়িতে ঠিকই নিয়ে আসে কিন্তু ডাক্তার যেভাবে বলছে সেভাবে সেবন করে না, কিংবা একবারেই পানি মনে করে সেবন করে ফেলে কিংবা সেবন করেই না। পরের দিন অ্যালোপ্যাথি ডাক্তারের কাছে যায়।
মফস্বল শহরে কিংবা ছোট ছোট শহরের হোমিওপ্যাথি ডাক্তার’রা কিন্তু সাধারণত ভিজিট নেন না। তাহলে, যখন একজন ডাক্তারের কাছে দিনে মাত্র ১০ জন রোগী যায় উনি যদি সুক্ষ্যমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করেন তাহলে উনার কি পেট চলবে?
আমি কিন্তু হোমিওপ্যাথির বিরুদ্ধাচরণ করছি না। আমি নিজেও হোমিওপ্যাথির একজন ছাত্র। আমি বলছি, বাস্তবতার কথা, পরিস্থিতির কথা। সুক্ষ্যমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করে কিন্তু কোনভাবেই রোগীর কাছে বেশি টাকা চাওয়া যাবে না এবং চাইলেও রোগী’রা তা দিতে অস্বীকৃতি জানাবে।
অন্যদিকে, যারা বড় বড় শহরে বসেন এবং শুধু রোগী দেখেন এবং ভিজিট নেন তাদের হিসাবটা আলাদা। কারণ, তারা রোগী প্রতি ভিজিট নেন ৫০০-১০০০ টাকার মতো। তাহলে ৫টি রোগী দেখলেই উনার আর রোগী দেখার প্রয়োজন নেই। তাহলে, উনি যদি রোগীদের প্রেসক্রিপশনে সুক্ষ্যমাত্রার ওষুধ লিখে দেন কোনো সমস্যা নেই।
এখানেই ওষুধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে বড় শহরের ডাক্তারের তুলনায় ছোট শহরের ডাক্তারের বিস্তর তফাৎ বিদ্যমান। আবার অনেক সময় এমন রোগী আমরা দেখতে পাই, যার শরীরে এক সাথে ৫/৭ টি রোগ বিদ্যমান। তখন পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা করার নিয়ম।
কিন্তু রোগী ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলে। তখন একাধিক ওষুধ প্রয়োগের প্রয়োজন পড়তে পারে। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। বলছি না যে, এর কোনো রেফারেন্স আছে। তবে, যিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করে গেছেন অর্থাৎ মহাত্মা হানিমান তিনি কিন্তু সুক্ষ্যমাত্রার কথা এবং একটি ওষুধের কথা বরাবরই বলে গেছেন।
উনার সমগ্র জীবনের সাধ-সাধনার ফসল ও উদ্ভাবনকে আমরা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারি না। আবার, আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন, হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারকে একাধারে চিকিৎসক, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী সহ সব ধরণের জ্ঞাণী হতে হয়।
কিন্তু, বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক পড়াশোনার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, খুবই দুর্বল প্রকৃতির আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাছাড়া, খুব ভালো ভালো ছাত্রছাত্রীরা এদিকে টার্ন করতেই চায় না। একটি মাত্র সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল রয়েছে বাংলাদেশে। বাকিগুলো সব ডিপ্লোমা কোর্স করার জন্য।
কোনো কোনো জেলার কলেজগুলো মান সম্মত আবার কোনো কোনো জেলার কলেজগুলো একেবারেই অনুন্নত। এর ফলে, হোমিওপ্যাথির মূল জ্ঞান অর্জনে ছাত্রছাত্রীরা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সরকারকে এদিকটায় মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
পরিশেষে বলবো, উপরের কথাগুলো আমার ব্যক্তিগত অভিমত থেকে বলেছি। কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করতে পারবো না। তবে, সব ডাক্তারের উচিত, শুধু নিজের স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে একটু রোগীদের দিকেও তাকান। কেন ভুলে যান যে, সবাই রোগী হতে পারে কিন্তু সবার অর্থনৈতিক অবস্থা এক নয়।
কেউ গরীব, কেউ ধনী। আবার কেউ দিন আনে দিন খায়। সো, সবার উপর পাঁচ-মিশালী ওষুধ প্রয়োগ না করে কারও কারও ওপর সুক্ষ্যমাত্রার ওষুধও প্রয়োগ করুন। তাহলে, আপনার সম্মান কমবে না বরং বাড়বে। দয়া করে হোমিওপ্যাথির সাথে যায় না এমন কাজ করবেন না।
আরও পড়ুন: ফার্মেসী থেকে ভেজালমুক্ত ওষুধ কেনার উপায়।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আলোপ্যাথির সাথে তুলনা করবেন না। এটা আসলেই অ্যালোপ্যাথির মতো নয়। গরীবদের একটু ছাড় দিতে শিখুন। চিকিৎসা পেশা একটা মহান পেশা। এই পেশাকে স্বার্থের চোখে দেখবেন না। সবাই ভালো থাকুন। পরবর্তীতে হাজির হবো আরও কোনো নতুন বিষয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে।