সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা ইতিহাসে স্মরণীয় থাকবে। শুধু সিলেট ও সুনামগঞ্জ-ই নয়, দেশের আরও কিছু জায়গায় বন্যা হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে। তবে সিলেট ও সুনামগঞ্জের মতো এতোটা ভয়াবহ নয়।
সিলেটে ইতিপূর্বে এমন বন্যা কখনো হয়েছে কিনা তা কারও জানা নেই। কারন, পুরো সিলেট শহর ও সুনামগঞ্জ পানির তলে ডুবে গেছে। রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে অনেক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও পশুপাখি।
মানুষের জীবনে দূর্ভোগের শেষ নেই। একটি মোমবাতি সেখানে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকার ভাড়া সেখানে বর্তমানে ৫০০ টাকা।
মানুষের ঘরে যা ছিল সব নষ্ট হয়ে গেছে। শুকনো খাবার ও পানির বড়ই অভাব। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিত্তবান মানুষরা সিলেটবাসীর জন্য সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আপনারা নিশ্চয়ই ফেইসবুকে “এক টাকার আহার” নামক পেজটির কথা জানেন। তারা সবসময়ই অবহেলিত মানুষের পাশে দাড়ায় এবং খাদ্য সহায়তা দেয়। তাদের বেশ কয়েকটি টিম সেখানে কাজ করছে।
কতো মানুষ মারা গেছে তার কোনো হিসাব নেই। কারণ, সবাই যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। কে কার খোঁজ নেবে আর কে কাকে সহযোগিতা করবে সেটা খুব কঠিন ব্যাপার।
বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম সেখানে কাজ করছে। তারা মানুষের খাবার পানীয়, শুকনো খাবার এবং পয়নিঃষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল মঙ্গলবার (২১/০৬/২০২২ ইং) সিলেটে যাবেন। তিনি সেখানকার পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।
বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মানুষ পানি বন্দী। কিন্তু আজ থেকে পানি খানিকটা নামতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রতিনিয়ত সেখানকার বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর আমরা রাখছি।
বর্তমানে সেখানে প্রায় চারশোর বেশি পরিমাণে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে লাখ লাখ মানুষ অবস্থান করছে এবং কোনরকমে নিজের জীবন রক্ষা করছে।
পশুপাখিদের কথা যদি বিশেষ করে গৃহপালিত পশু যেমন- গরু, ছাগল, ভেড়া এদের খাদ্য সংকট চরম পর্যায়ে। যেখানে মানুষের জীবন নিয়েই টানাটানি সেখানে গরু ছাগল বাঁচানো তো গৌণ ব্যাপার।
সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ জায়গা-ই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। এখন পর্যন্ত জানা গেছে যে, বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বিবিসির বরাত দিয়ে জানা গেছে, সীমিত আকারে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেখানে কাজ করছে।
মানুষজন নৌকা দিয়ে সেখানে ভ্রমণ করছে। কিন্তু নৌকা অপ্রতুল সেখানে এবং ভাড়াও নেয়া হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।
পানির কারণে গত রবিবার সিলেটের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। কাচা রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যাচ্ছে, এখনো প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছে।
সিলেটের পরিস্থিতি নিয়ে আসলে নতুন করে কিছু বলার নাই। কারণ, টিভিতে কিংবা মোবাইলে ও ফেইসবুকে হাজার ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে একটু চোখ রাখলেই পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা নেয়া সম্ভব।
সিলেটে ও সুনামগঞ্জের এমন পরিস্থিতির জন্য কোটি কোটি টাকা হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ হারিয়েছে সম্পদ এবং স্বজন। অদূর ভবিষ্যতে সিলেটবাসীকে অবশ্যই বন্যা নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে অবশ্যই অনেক বেশি প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: মৌসুমী ও অমর সানির সংসার নিয়ে সর্বশেষ তথ্য জানুন।