করতোয়া
  • প্রচ্ছদ
  • খবর
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • চাকরি
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • খেলা
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • ধর্ম
  • কৃষি
  • মতামত
  • সম্পাদকীয়
  • আরও
  • English

ইমেইল সাবস্ক্রিপশন

সবার আগে সব খবর পেতে করতোয়ার নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

জনপ্রিয়

ঘুমের জন্য ঔষধ

ঘুমের জন্য ১০০% কার্যকরী হোমিও ঔষধ সম্পর্কে তথ্য

14 August 2023
টাক মাথা

টাক মাথায় চুল গজানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ জেনে নিন

31 July 2023
সহবাস

সহবাস এর ৭টি চরম উপকারিতা এবং সপ্তাহে কতবার করা উচিত

31 July 2023
Facebook X (Twitter) WhatsApp YouTube
শিরোনাম:
  • এসকেএস ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ব্র্যাক এনজিওতে ম্যানেজার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • শান্তি কোথায় পাওয়া যায়?
  • বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিন
  • খাদ্য অধিদপ্তর ১৩৭৭ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে
  • আবিষ্কার | কোরআন করেছে ১৪০০ বছর আগে, বিজ্ঞান করেছে সেদিন
  • কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলো – যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে
  • প্রাণ গ্রুপ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে
Facebook X (Twitter) WhatsApp
করতোয়াকরতোয়া
YouTube
Tuesday, September 26
  • প্রচ্ছদ
  • খবর
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • চাকরি
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • খেলা
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • ধর্ম
  • কৃষি
  • মতামত
  • সম্পাদকীয়
  • আরও
  • English
করতোয়া
প্রচ্ছদ > সরকারি হাসপাতাল – চিকিৎসা, মৃত্যু, অভিজ্ঞতা ও মতামত
মতামত

সরকারি হাসপাতাল – চিকিৎসা, মৃত্যু, অভিজ্ঞতা ও মতামত

Azgar AliBy Azgar AliUpdated:1 August 2023No Comments12 Mins Read1 August 2023
Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn WhatsApp Email
Share.
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email WhatsApp

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো। আমিও ভালো আছি। কথা বলবো সরকারি হাসপাতাল – চিকিৎসা, মৃত্যু অভিজ্ঞতা ও মতামত নিয়ে। আজ কিন্তু ঈদ-উল-আযহা। অর্থাৎ যেদিন এই পোষ্ট আমি লিখছিলাম সেদিন ছিল বড় ঈদ। আশা করি, সেই ঈদের দিনটা সবার ভালোই কেটেছে।

অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখা এ পর্বে আমি বিশেষ একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। বিষয়টি আমার এক আত্মীয়কে নিয়ে। তিনি হলেন আমার তাউই। তিনি বর্তমানে জীবিত নেই।

২০১৯ ইং সালে তিনি মারা গেছেন। উনার ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছিল। পুরো ঘটনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। অবশ্যই কিছু জানতে ও বুঝতে পারবেন। আপনাদের কতটুকু কাজে লাগবে তা জানি না তবে অভিজ্ঞতাটুকু নিয়ে যদি চিন্তা করেন তবে পরোক্ষভাবে হলেও কাজে লাগতে পারে।

কোন একদিন, আমি সকালে ঘুম থেকে উঠিইনি। তখন বৃষ্টি পড়ছিল বাইরে। সকাল সম্ভবত ৭.০০ টা বাজে। আমাদের বাড়ির শুধু আমার মা উঠেছিল। তিনি উঠান-ঘর ঝাড়ু দিচ্ছিলেন।

ঠিক এমন সময় আমার তাউই এর এক ছেলে আমার বড় ভাইকে ডাকতে এসেছে। ভাই ঘর থেকে বের হয়ে আমাকেও ডাক দিলো। আমিও সাথে গেলাম। তাউই এর ছেলেটা এসে তেমন কিছু বলতে পারলো না।

শুধু বললো, উনার বাবা অসুস্থ্য। তাই উনার বড় ছেলে অর্থাৎ আমার তাউই এর বড় ছেলে (বেলাল) আমাদের যেতে বললো। আমার কাছে তখন একটি অ্যান্ড্রুয়েড মোবাইল ফোন ছিল।

আমি মোবাইল ফোনটি সাথে নিয়ে ভাই এর সাথে তাউই এর বাড়িতে গেলাম। বাড়িটি খুব কাছেই ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে যেতে মাত্র ১/২ মিনিটের রাস্তা। যাওয়ার পরে দেখি, বড় ঘরে একটি খাটের উপরে তাউই শুয়ে আছে।

কোন কিছু বলতে পারছে না। কথা বলতে পারছে কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না। আর এক হাত ও এক পা অবশ হয়ে গেছে। পুরোপুরি হয়নি কিন্তু মোটামুটি হয়েছে।

কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না কি করবে? যারা তখন সেখানে উপস্থিত ছিল তাদের অধিকাংশই কবিরাজের কথা বললো। তারা ধারণা করলো যে, তাউই এর প্যারালাইসিস হয়েছে।

আমি তখনি ইন্টারনেট কানেকশন চালু করে মোবাইলের ব্রাউজারে গিয়ে লক্ষণটি লিখে সার্চ করলাম। আসলে আমারও তখন পুরোপুরি ধারণা ছিলো না।

পরে যা সার্চ করে পেলাম তা দেখে আমার মাথা ঘুরে গেল। দেখলাম, ব্রেইন স্ট্রোক হলে এরকম হয়। অর্থাৎ এরকম লক্ষণ দেখা দেয়। পরে আরও কয়েকটি ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক এর ব্যাপারে পড়লাম। সবই মিলে যাচ্ছে।

আমি মোটামুটি শিওর হয়ে গেলাম যে, তাউই এর ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছে। কিন্তু, এই কথাটি সেখানে বলতে পারলাম না বা ফাঁস করতে পারলাম না। হয়তো তারা কি মনে করবে তাই ভেবে।

পরে আমি অন্তত একথা বলেছি যে, তাউই কে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গেলে ডাক্তার’রা বুঝতে পারবে তাউই এর কি হয়েছে। এই কথা বলে আমি চলে আসলাম আর পরে ভাইকে বললাম যে, তাউই এর কিন্তু ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছে।

ভাই অবশ্য তাউই এর বড় ছেলেকে বলেছিল। কিন্তু ওরা সম্ভবত এটা বিশ্বাস করে নাই। আর তাই তারা তাউইকে প্রথমে কবিরাজের কাছেই নিয়ে গেল।

এভাবে প্রথমদিন কেটে গেল। তাউই এর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেল। তখন তারা পরেরদিন তাউইকে উপায় না পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেল।

কিন্তু উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরাসরি রংপুর সরকারি হাসপাতালে ট্রান্সফার করে দিল। যখন রংপুরে নিয়ে গেল তখন সিটি স্ক্যান সহ যাবতীয় পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট এলো।

কি রেজাল্ট এলো জানেন? আমি যা বলেছিলাম তাই। অর্থাৎ আমার তাউই এর ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছে। কিন্তু তারা খুব দেরি করে ফেলেছে। তারপরেও কিছু করার মতো অপশন আছে বলে ডাক্তার বলেছিল।

ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া শেষে রংপুর হাসপাতালে ১০ দিনের মতো রাখা হলো তাউইকে। তারপর থেরাপি দেয়া হলো। মোটামুটি একটু সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে এলো।

কিন্তু আগের মতো আর নেই। কথা ঠিক মতো বলতে পারে না। বললেও যারা শুনে তারা বুঝতে পারে না। বাড়িতে চিকিৎসা কন্টিনিউ করার কথা।

কিন্তু, ১ মাস বোধ হয় ঠিক মতো চিকিৎসা চলছিল। তারপর আর ঠিক মতো চিকিৎসা চলেনি। যার যার কাজে সে সে ব্যস্ত। কে রাখে কার খোঁজ। আমার তাউই এর মোট চার ছেলে।

তার মধ্যে এখন পর্যন্ত তিন ছেলে বিবাহিত। যাই হোক, তাউই এর দিন এভাবেই কাটছিল। এসব রোগীর কিন্তু আলাদাভাবে কেয়ার করতে হয়। কিন্তু, এই কেয়ারটা কেউ-ই করতো না। অর্থাৎ এসব রোগীকে উত্তেজিত হতে দেয়া যায় না।

নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হয়। ব্লাড প্রেসার চেক করতে হয় নিয়মিত। মাঝে-মধ্যে থেরাপি নিতে হয়। সব সময় খেয়াল রাখতে হয়। কিন্তু যিনি আমার মাউই অর্থাৎ তাউই এর স্ত্রী তিনিও একটু আনমনা ছিলেন।

আমার তাউইকে তিনি বোধ হয় খুব একটা ভালোবাসতেন না। পরের কাহিনী বা ঘটনাগুলো পড়লে আপনাদের কাছে এই বিষয়টি পরিস্কার হবে।

সো পড়তে থাকুন। এভাবেই দিন কাটছিল তাউই এর। কিন্তু, আমি লক্ষ্য করেছি – তিনি দিনের দিন শুকিয়ে যাচ্ছিলেন। স্বাস্থ্যহানি হচ্ছিল। কোনো চিকিৎসা’ও আর নেয়া হচ্ছিল না।

উনি তখনও ধুমপান করতো অথচ কেউ-ই কিছুই বলতো না। আমার মাউই-ও মাঝে মাঝেই তাউই এর সাথে ঝগড়া করতো। মন খারাপ করে থাকতো। তাউই কিন্তু সবই বুঝতো।

কিন্তু, বলতে পারতো না। শরীরে তেমন শক্তি-বল ছিলো না। আর কিছু বললেও কেউ তেমন কিছু বুঝতো না। কারণ, কথা অস্পষ্ট ছিল। সম্ভবত এভাবে প্রায় ১টা বছর কেটে গেলো।

এরপর, একদিনের ঘটনা। আমার মাউই একদিন তাউই এর সাথে রাগারাগি করে বাপের বাড়িতে চলে যায়। উনাদের দুজনারই বয়স হবে ৫০ এর উপরে।

অথচ, এরকম বয়সে মাউই এর কি একজন অসুস্থ্য মানুষের সাথে রাগ করে বাপের বাড়িতে চলে যাওয়াটা ঠিক হয়েছে? আপনারাই বলুন। আমার তাউই পারতো না গোসল করতে, পারতো না রাতে বের হতে, নিজ হাতে ঠিক মতো খেতেও পারতো না।

এই মানুষটার সাথে রাগ করাটা কি উনার ঠিক হয়েছে? সত্য কথা বলতে কি, আমি তো দেখেছি – আমার মাউই ছিল বদ-মেজাজি। তো যেদিন মাউই চলে যাচ্ছে সেদিন তাউই-ও কিন্তু মাউই এর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল আর ডাকছিল।

কিন্তু, মাউই শুনছিল না। ঘটনাটা আমার চোখের সামনে ঘটা। আমি আমার রুমের জানালা দিয়ে ঘটনাটা দেখছিলাম। তাউই এর সাথে আমার একটা ভাগনী ও তাউই এর আরও দু’জন নাতি-নাতনী যাচ্ছিল।

কিন্তু, কেউ-ই মাউই কে ধরতে বা আটকাতে পারছিল না। কারণ, মাউই খুব জোরে জোরে হাটছিল। পরে আমি তাৎক্ষণিক আমার মা’কে ঘটনাটা জানাই।

আমার মা তখন দৌড়ে যায় এবং যেভাবেই হোক আমার মাউই কে আটকায়। সেদিন মাউই আমাদের বাড়িতেই ছিল। তখন শীতকাল। মাউই মোটামুটি রাত ১১ টার পরে ঘুমিয়ে পড়লো। অথচ, আমার তাউই রাতে তিন বার এসেছিল মাউইকে নিতে।

কিন্তু সাহস করে আমাদের বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। আমরা তো এটা দেখিনি। পরেরদিন পাশের বাড়ির জলিল ভাই এর কাছে এই ঘটনা শুনেছি। আমি ভাবলাম, রাগারাগি হতেই পারে।

হয়তো সকাল হলে মাউই আগেভাগেই তাউই এর কাছে চলে যাবেন। কিন্তু, হলো তার উল্টাটা। অর্থাৎ সকাল হওয়া মাত্রই মাউই তার ছোট ছেলের মাধ্যমে বাপের বাড়িতে চলে গেলো।

আমাদের বাড়িতে সেদিন কিছু খেয়েও যায়নি। আমি ঘটনাটা শুনে আশ্চর্য হয়েছিলাম। কারণ, একটা অসুস্থ্য মানুষকে রেখে কোনো নারী তার বাপের বাড়িতে এভাবে চলে যেতে পারে না।

তারপরেও এটা তো কোনো সাধারণ রোগ ছিলো না। আমার তাউই যখন এই ঘটনা শুনলো তখন উনি আরও ভেঙে পড়লো। এভাবে সকাল পেরিয়ে বিকেল হলো।

বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে হঠাৎ শুনলাম, তাউই আবার আগের মতো হয়ে গেছে। তখন আমি এসকেএফ কোম্পাণী থেকে রিজাইন দিয়ে বাড়িতে এসেছি। আমি দৌড়ে গেলাম।

যাওয়ার পরে দেখি, অন্যরকম অবস্থা। বাম হাত আর বাম পায়ে কোনো শক্তি ছিল না। কোনো কথা বলতে পারছিল না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর কোনো কথা অবশ্য বলতে পারেনি।

চোখে দেখছে নাকি দেখছে না সেটাও বুঝতে পারেনি। অর্থাৎ উনি নিজে থেকে কিছুই করতে পারছে না। আমি ব্লাড প্রেসার মাপার জন্য বললাম এবং একজন ডাক্তারকে ফোন করলাম।

ব্লাড প্রেসার যখন মাপলো তখন দেখলাম যে, এটা এমন অবস্থানে গেছে যেটা কল্পনাতীত। ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলো। কিন্তু উনি খেতে পারছিলেন না।

পানি পর্যন্ত খেতে পারছিলেন না। জিহ্বায় কোনো শক্তি ছিলো না। তখন তাড়াহুড়ো করে দেবীগঞ্জ সদর মেডিকেলে নেয়া হলো। কিন্তু মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয়া হয়নি।

তারা শুধু একটা কাগজে রংপুর মেডিকেলে নেয়ার জন্য লিখে দিল। অর্থাৎ যাকে রেফারেন্স বা রেফার করা বুঝায়। আমি মেডিকেলে দেখতে গেলে তখন আমাকে সহ রংপুরে যাবে সিদ্ধান্ত নিল।

এমন পরিস্থিতিতে আমি আর না করতে পারলাম না। টাকা-পয়সা জোগাড় করে রংপুর মেডিকেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম আমরা কয়েকজন।

কিন্তু, তখন পর্যন্ত মাউই কিন্তু তাউই কে দেখতে আসেনি। দেবীগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে মাউই এর বাপের বাড়ি ছিল মাত্র হাফ কিলোমিটার। অথচ এই খবর পাওয়ার পরেও তিনি আসেননি।

আমি বুঝতে পারছি না, আমার মাউই আদৌ আমার তাউইকে ভালোবাসতো কিনা সন্দেহ আছে। পুরো লিখাটির মাধ্যমে আমি মূলত আপনাদের সাথে দুটো বিষয় শেয়ার করবো।

প্রথমত, একজন মানুষের জীবনী এবং দ্বিতীয়ত এসব রোগের ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমার দেখা বাস্তবতা। যখন রংপুরে পৌছলাম তখন একটি ক্লিনিকে ঢুকলাম।

আগেই সরকারি মেডিকেলে যাইনি আমরা। আর তখন রংপুরের বড় ডাক্তার ঐ ক্লিনিকেই ছিল। উনার ওখানে সিরিয়াল নিয়ে তাউইকে দেখাতে দেখাতে রাত ৭ টা বেজে গেল।

তাউই এর সাথে ভিতরে আমি ঢুকছিলাম। আর কেউ নয়। ডাক্তার সাহেব তাউই এর কানে সম্ভবত জোরে চিমটি দিলেন কিংবা ধরলেন। তাউই উঠার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু পারলেন না।

তখন, ডাক্তারকে আমি বললাম যে, এক বছর আগে প্রথম বারের মতো এরকম হয়েছিল। আবার আজকে হয়েছে। ডাক্তার সাহেব বললেন যে, উনার ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছে।

আমি তো সেটা জানতাম-ই। তখন তিনি কিছু পরীক্ষা লিখে দিলেন এবং কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। আমরা তাউইকে নিয়ে বের হয়ে আরেকটা ক্লিনিকে গিয়ে তাউই এর টেস্টগুলো করালাম।

বেজে গেল রাত ৯টা। ক্লিনিকগুলোতে জরুরী রোগী বলে কোনো কথা নেই। যাদের লোক আছে বা চেনাজানা আছে তারা একটু সুবিধা পায় কিন্তু যারা নিতান্তই বাইরে থেকে যায় তারা অবহেলা ছাড়া আর কিছুই পায় না।

সবগুলো টেস্ট করতে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেল। রিপোর্টগুলো নিয়ে আবার ঐ ডাক্তারের কাছে গেলাম (যে ডাক্তারকে প্রথমে দেখিয়েছিলাম) এবং আবার সিরিয়াল নিয়ে রিপোর্টগুলো দেখালাম।

তখন উনি আমাকে ১ মিনিটে বিস্তারিত বললেন। ডাক্তার সাহেব অবশ্য বলেননি, কারণ উনি ব্যস্ত অন্য রোগী নিয়ে। ডাক্তারের সহকারী বললেন।

উনি রংপুর সরকারিতে ভর্তি করাতে বললেন। কিন্তু রোগী ভালো হবে কিনা, চিকিৎসা করলে উন্নতি হবে কিনা কিংবা আসলে পরিস্থিতি কি এসব ব্যাপারে কিছুই বললেন না।

তখন সেখান থেকে তাউইকে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে গেলাম। সেখানে নিয়ে আবার আরেক কাহিনী। দেখুন, তখন রাত প্রায় ৯ টা বাজে। তখন পর্যন্ত শুধু তাউইকে এভাবেই ঘুরছিলাম।

কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা-ও কেউ দেয়নি। তাউই এর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেল। পরিশেষে সব ঝামেলা পেরিয়ে রংপুর মেডিকেলের ৫ তলায় একটি কক্ষের সামনে একটু জায়গা পেলাম। ওখানেই তাউইকে শুয়ালাম।

কোনো বেড ছিল না। আর পাশের কক্ষেই কাটা-ছেড়া করা হতো সেখান থেকে কি গন্ধ আসছিল যা কিনা সহ্য করার মতো না। তারপর অনেকক্ষণ পরে একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে সবকিছু বললাম।

তারা আরও কিছু ওষুধ লিখে দিলেন এবং সেগুলো আনতে বললেন। আসলে ওষুধ বলতে তেমন কোনো ওষুধ না। এই ধরুন, গ্যাসের ওষুধ, ব্যথার ওষুধ, স্যালাইন সহ আরও আনুষঙ্গিক।

এগুলো বাইরে থেকে আনার পরে প্রায় আধা ঘন্টা পরে একজন নার্স এসে সবকিছু লাগিয়ে দিলো। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত, রোগীর দিকে কারও কোনো নজর নেই।

আমার তাউই রাত ৯ টায় এই চিকিৎসাটুকু পেল। আমি বুঝলাম না, ৫ হাজার টাকা পরীক্ষার মধ্যে কি নিহিত ছিল? পরে রাতে আমি আর থাকতে পারিনি। পরেরদিন সকালে আমার জরুরী কাজ ছিল।

ওখানে তাউই এর বড় ছেলে ও সেজ ছেলে থেকে গেল। রাত এভাবে পার হলো। তাউই এর কোনো উন্নতি হলো না। মেডিকেলের নাম সরকারি কিন্তু একজন রোগীকে নিচ তলা থেকে ৫ তলায় উঠাতেও ২০০ টাকা গুণতে হয় রোগীর পরিবারকে।

আমার ভাষা নেই বলার যে কি পরিমাণ দূর্নীতি মেডিকেলগুলোতে হয়। পরেরদিন বিকেলে অবশ্য মাউই রংপুরে গিয়েছিল। কিন্তু তাউই এর অবস্থা আরও খারাপ হতে লাগলো।

আসলে তাউই এর মাথায় থাকা রক্তনালিকগুলোর মধ্যে একটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল অর্থাৎ ছিড়ে গিয়েছিল। সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল।

ডাক্তারের দেয়া প্রেসক্রিপশনে থেরাপির কথা উল্লেখ থাকলেও মেডিকেল কর্তৃপক্ষের দ্বারা কোনো থেরাপি দেয়া হয়নি। প্রতিদিন টাকা কিন্তু ঠিকই খরচ হচ্ছিল।

কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে লাগলো। কারণ, চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল গুরুত্বহীনতার সাথে। এই রোগী বাঁচলেই কি মরলেই কি কারও কিচ্ছু যায় আসে না। এরকম মনোভাব সবার মধ্যেই ছিল।

তাউই এর পরিবারের মানুষগুলোর মধ্যেও হয়তো এমন মনোভাব ছিল। তারা তাউইকে নিয়ে ১ বছরের মাথায় অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল।

এভাবে ৭ দিন রংপুর মেডিকেল এ থাকার পর অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাউইকে বাড়িতে আনা হলো। বাড়িতে আনার পর আর কি করবে? দুই একজন গ্রাম্য কবিরাজ এর মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক দেয়া হলো। ডলাডলি করলো।

তেল পড়া দিলো, পানি পড়া দিলো। ম্যাসাজ করলো। গ্রাম্য থেরাপি দিলো। কিন্তু কোনটাই কাজে আসলো না। এভাবে ১৫ দিনের মাথায় তাউই একদিন বিকেলে পরলোকগমন করলো।

আমার মনে হয়, তাউই এর মৃত্যুর পরে যদিও পরিবারের মানুষগুলোর চোখে সামান্য জল এসেছিল কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে হাফ ছেড়ে বেঁচেছিলো। এমনটাই আমার মনে হয়।

যাই হোক, এটা আমি ফোকাশ করতে চাইনি। আমি এই পুরো ঘটনার মাধ্যমে ফোকাশ করতে চেয়েছি মূলত অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা।

একজন রোগী সিরিয়াস, সেক্ষেত্রে তার প্রাথমিক চিকিৎসাই আগে নাকি পরীক্ষা-নিরীক্ষা আগে? অবশ্যই প্রাথমিক চিকিৎসা আগে। কিন্তু, অ্যালোপ্যাথিতে করা হয় মূলত উল্টাটা। সব জায়গায় নয়। কিছু কিছু জায়গায়।

তাউই এর পিছনে ঐ কয়দিনে মোট ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হ্যা, জন্ম-মৃত্যু তো আল্লাহর হাতে। তাই বলে তো আর নিজের দায়িত্বকে কেউ এড়াতে পারে না।

কিন্তু মেডিকেলগুলোতে এমনটাই হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এসব মারাত্মক রোগের জন্য যেমন ব্রেইন স্ট্রোক সহ ইত্যাদি’র ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথিতে যদিও ভালোরকম চিকিৎসা থাকতে পারে কিন্তু তা সাধারণ মানুষের ধরা ছোয়ার বাইরে।

যখন প্রথমবার ব্রেইন স্ট্রোক হয় তখন কিছু কিছু রোগীকে হাতুড়ে চিকিৎসা করালেও অনেক রোগী ভালো হয়ে যায়। কিন্ত সেকোন্ড টার্মে যাদের হয় তারা আসলে মৃত্যুর দিকেই ধাবিত হয় বেশি।

তাৎক্ষণিক অপারেশন করলে হয়তো অনেক সময় রোগী বাঁচতে পারে। কিন্তু অপারেশন করতে গেলেই তো লাখ লাখ টাকার খেলা।

এটা তো সবার পক্ষে সম্ভব হয়না। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী’র যখন ব্রেইন স্ট্রোক করলো সেদিনই উনার অপারেশন করা হলো। পরিশেষে কি হলো – ফলাফল জিরো।

যাইহোক, আমিও আর বেশি কিছু লিখবো না। গল্পের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। পরিশেষে বলবো, আপনার পরিবারে যদি এরকম সমস্যা হয় কখনো, দয়া করে খুব ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে সমাধান নিতে চেষ্টা করুন।

নববিবাহিত আপনি? আপনার স্ত্রীর সাথে বনিবনা হচ্ছে না? আপনার সাথে মিলছে না? তাহলে কয়েক বছর সংসার করে দেখুন, তারপরেও হচ্ছে না? এবার ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিন, তাকে নিয়েই সংসার করবেন নাকি নতুন কাউকে নিয়ে।

দেখুন, শুধু মাত্র স্ত্রীর কারণে প্রতি বছর অসংখ্য স্বামী মারাত্মক রোগগুলোতে আক্রান্ত হয়। এটার পরিসংখ্যান আছে। এটার পিছনে গবেষণা আছে।

আপনার স্ত্রী যদি আপনার কথা না শোনে, আপনার অবাধ্য থাকে, আপনাকে সম্মান না করে, আপনার প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাহলে আপনার আজ সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা।

মানিয়ে নিতে পারলে সংসার চালিয়ে যান আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে নিজেই ভাবুন কি করবেন। আমার তাউই এর মৃত্যুটা আমার কাছে করুণ মৃত্যু মনে হয়েছে।

এরকম যাতে কারও জীবনে না হয়। আর আমি মনে করি, শুধু আমি বললে ভুল হবে – সবাই মনে করে, আমার তাউই এর মৃত্যুর জন্য আমার মাউই অনেকটা দায়ী।

আর যদি কারও এরকম হয়েই যায় তবে খুব ভালো করে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন। কোন প্যাথিতে চিকিৎসা করাবেন? তবে, কোনো রোগের লক্ষণ যখন প্রকাশ পেতে শুরু করে আপনার উচিত হবে তখনই একটা সিদ্ধান্ত নেয়া এবং চিকিৎসা শুরু করা।

আর যখন লক্ষণ প্রকাশ হওয়া শেষ হয়ে যায় এবং রোগ পরিপূর্ণভাবে আক্রমণ করে বসে তখন আসলে কোনো প্যাথিতেই তেমন কিছু করার মতো থাকে না।

সো, বি কেয়ারফুল অ্যাবাউট ইওর লাইফ। সরকারি হাসপাতাল প্রসঙ্গ নিয়ে হয়তো আবারও আসবো। কথা হবে, আগামী পর্বে কোনো এক অভিজ্ঞতা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, সবাইকে নিয়ে সুখে থাকুন।

আরও পড়ুন: এলার্জি কেন হয়? প্রতিকার জেনে নিন।

Previous Articleহোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতি
Next Article বায়োক্যামিক ওষুধ এর সাফল্য জানুন – চিকিৎসা নিন
Azgar Ali

    প্রিয় পাঠক, আপনাদের সাথে আমি রয়েছি মো. আজগর আলী। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি খুব আগ্রহ ছিলো। আর তাই গড়ে তুলেছি অনলাইন পত্রিকা করতোয়া। আপনিও যেকোন লিখা পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। লিখা আপনার নামেই প্রকাশ করা হবে। লিখা পাঠানোর ঠিকানা: admin@korotoya.com. ধন্যবাদ।

    এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

    মার্কেটিং জব

    মার্কেটিং জবে পারফরম্যান্স ভালো করার কিছু উপায়

    1 August 2023
    ভূমিকম্প নিয়ে কিছু কথা

    সম্প্রতি ভিন দেশে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প নিয়ে কিছু আলোচনা

    12 February 2023
    আমরা কিভাবে অসভ্য হয়ে যাচ্ছি

    আমরা মানুষ’রা উন্নত হওয়ার সাথে সাথে অসভ্যও হয়ে যাচ্ছি – কেন ও কিভাবে?

    NaN 27 January 2023
    Add A Comment

    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    এসকেএস ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

    22 September 2023
    ব্র্যাক এনজিও নিয়োগ

    ব্র্যাক এনজিওতে ম্যানেজার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

    20 September 2023
    শান্তি

    শান্তি কোথায় পাওয়া যায়?

    7 September 2023

    বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

    5 September 2023

    আপনার জন্য আরও

    কটন বাড এর ব্যবহার আরও

    কটন বাড দিয়ে কান চুলকানোর সময় সাবধান – হতে পারে কঠিন সমস্যা

    By Azgar Ali17 October 202203 Mins Read

    কটন বাড ব্যবহার করে মৃত্যুবরণ করা ঘটনা অতি বির।। সমপ্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা…

    প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ - ভাইভা অভিজ্ঞতা

    প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক – রিয়েল ভাইভা অভিজ্ঞতা

    7 March 2023

    ২০২০ সালের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স ১ম পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি

    26 July 2023
    গরু চুরি

    দেবীগঞ্জের বেলতলী পাড়ায় একই বাড়িতে ৭টি গরু চুরি

    15 August 2023
    • Facebook20K
    • Twitter5K
    • Pinterest5K
    • YouTube1.5K
    • WhatsApp
    • Instagram10K

    ইমেইল সাবস্ক্রিপশন

    সবার আগে সব খবর পেতে করতোয়ার নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

    করতোয়া সম্পর্কে
    করতোয়া সম্পর্কে

    করতোয়া একটি অনলাইন বাংলা সংবাদ মাধ্যম। করতোয়ার যাত্রা শুরু হয় ১২ই জুলাই ২০২১ সালে। এখানে নিয়মিত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করা হয়। তথ্যের সত্যতা যাচাইপূর্বক তথ্য প্রকাশ করা হয়। করতোয়া প্রতিষ্ঠা করেছেন মো. আজগর আলী। সময় ও তথ্যের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে করতোয়ার সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।

    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest YouTube WhatsApp
    জনপ্রিয়
    ঘুমের জন্য ঔষধ

    ঘুমের জন্য ১০০% কার্যকরী হোমিও ঔষধ সম্পর্কে তথ্য

    14 August 2023
    টাক মাথা

    টাক মাথায় চুল গজানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ জেনে নিন

    31 July 2023
    সহবাস

    সহবাস এর ৭টি চরম উপকারিতা এবং সপ্তাহে কতবার করা উচিত

    31 July 2023
    আরও
    রংপুর ডেইরী ফার্মে নিয়োগ ২০২৩

    রংপুর ডেইরী এন্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড-এ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

    12 February 2023
    জাভেদ খান

    বলিউড অভিনেতা জাভেদ খান মারা গেছেন

    1 August 2023
    ওএমএস কার্ড

    ওএমএস কার্ডধারীরা এই মাসে ৬০ কেজি করে চাল পাবেন

    17 August 2023
    স্বত্ব © ২০২৩ করতোয়া | সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আজগর আলী
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • শর্তাবলী
    • প্রিভেসি পলিসি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Ad Blocker Enabled!
    Ad Blocker Enabled!
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please support us by disabling your Ad Blocker.