শ্রীলঙ্কা সরকার গোতাবায়া রাজাপক্ষে আজ তার সরকারী বাসভবন থেকে পালিয়ে গেছেন। অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এই নেতার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা কলম্বোতে রাষ্ট্রপতি প্রাসাদের প্রাঙ্গণ এমনকি তার নিকটবর্তী অফিসে প্রবেশ করে।
মিঃ রাজাপক্ষে’কে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার পরপরই, শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনীর একটি জাহাজে স্যুটকেস লোড করার ভিডিও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে যে, স্যুটকেসগুলি বর্তমান রাষ্ট্রপতির ছিল।
গোতাবায়া রাজাপক্ষে’র আকস্মিক প্রস্থান (পলায়ন) বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে যে, তিনি পদে বহাল থাকবেন কিনা এবং না থাকলে, সংকট-বিধ্বস্ত দেশে পরবর্তীতে কী হবে। কেই’বা নতুন সরকার প্রধান হবেন?
রাষ্ট্রপতি যদি পদত্যাগ করে তবে এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার সংবিধান কি বলে? চলুন জেনে নিই-
শ্রীলঙ্কার সংবিধান বলে যে, যদি রাষ্ট্রপতির পদটি তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শূন্য হয়ে যায়, তাহলে সংসদ বর্তমান সদস্যদের একজন থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবে। পদত্যাগকারী রাষ্ট্রপতির কার্যকালের বাকি সময়ের জন্য উত্তরাধিকারী দায়িত্ব পালন করবেন।
এবার জানা যাক, কত তাড়াতাড়ি এই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়?
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের এক মাসের মধ্যে এ ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
আরও প্রশ্ন থেকে যায় যে, কিভাবে প্রক্রিয়া সঞ্চালিত হবে?
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের তিন দিনের মধ্যে সংসদের বৈঠক করতে হবে। এ ধরনের বৈঠকে সংসদের মহাসচিবকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে সংসদকে অবহিত করতে হয়।
যদি একাধিক ব্যক্তি এই পদের জন্য মনোনীত হন, তাহলে একটি গোপন ব্যালট নেওয়া হয় এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে (লটারির মাধ্যমে) পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা হয়।
নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগের মেয়াদে কী হবে?
শ্রীলঙ্কায় উত্তরাধিকারের রাষ্ট্রপতির লাইন অনুসারে, পরবর্তী সময়ের জন্য রাষ্ট্রপতি হবেন প্রধানমন্ত্রী।
এইভাবে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহ (সাংসদ) নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন না করা পর্যন্ত এক মাসেরও কম সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হতে পারেন।
এই সময় পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার অন্য মন্ত্রীদের একজনকে প্রধানমন্ত্রীর পদে কাজ করার জন্য নিয়োগ করবেন।
উল্লেখ্য যে, শ্রীলঙ্কায় বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই জনগণের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল।
কারণ, দেশটি বর্তমানে দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। জনগণ রাস্তায় নেমেছে।
শেষমেষ শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার তার সরকারি বাসভবন ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। দেশটি বিভিন্ন কুটনৈতিক সমস্যার মধ্যেও রয়েছে।
দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। শ্রীলঙ্কা সরকার সম্পর্কে আমরা যখনই আরও আপডেট পাবো আপনাদের অবশ্যই জানানোর চেষ্টা করবো। করতোয়ার সাথেই থাকুন।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ক টুইটার কেনা থেকে সরে আসলেন যেকারণে।