শরীরের ওপর আকস্মিক কোনো চাপ গেলে অনেক সময় চুল পড়া বেড়ে যায়। যে কোনো ধরণের অপারেশন, হঠাৎ করে কোনো দূর্ঘটনা হওয়া, বড় কোনো অসুস্থতা এমনকি জ্বর হলেও চুল পড়া বেড়ে যায়।
যে কোনো ধরণের শারীরিক অসুস্থতা চুলের স্বাভাবিক জীবনচক্রে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। আজ আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানবো। তো চলুন শুরু করি।
১. গর্ভধারণ:
গর্ভধারণ করলে অথবা বাচ্চা প্রসবের পড়ে প্রচুর চুল পড়ে। এসময়ে শরীর বিভিন্ন হরমোনজনিত পরিবর্তন আসে। তাই চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। তবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই পরবর্তিতে আবার নতুন চুল গজিয়ে যায়।
২. অতিরিক্ত ভিটামিন এ:
আমেরিকার একাডেমী অফ ডার্মাটোলোজি এর মতে শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন এ এর উপস্থিতিতে চুল পড়া বেড়ে যায়।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের শরীরের দৈনিক ভিটামিন এ এর চাহিদা হচ্ছে ৫০০০ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট। প্রতিদিন এর বেশি ভিটামিন এ গ্রহণ করলে চুল পড়ার পরিমান বেড়ে যেতে পারে।
৩. প্রোটিনের অভাব:
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনের উপস্থিতি না থাকলে চুল পড়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। প্রোটিন চুলের গঠনে সহায়তা করে।
তাই প্রোটিনের অভাব হলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং চুল পড়ার হাত বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ, মাংস, ডিম ও ডাল জাতীয় খাবার থাকা উচিত।
৪. মানসিক চাপ:
প্রচন্ড মানসিক চাপ থেকে চুল পড়ে যায়। বিচ্ছেদ, প্রিয় মানুষের মৃত্যু, এমন কি পরীক্ষার চাপেও চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে।
সম্পর্কের টানাপোড়েন গেলেও চুলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং অনেক চুল ঝরে যেতে পারে। তাই মানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করুন।
৫. থাইরয়েড হরমোন ঘাটতি:
শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে একে হাইপোথাইরয়েডিসম বলা হয়। হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে মাথার চুল পড়ে যায় এবং চুলের বৃদ্ধি কমে যায়।
৬. অস্বাভাবিক ওজনহ্রাস:
অতিরিক্ত ডায়েটিং এর কারণে হঠাৎ অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস হলে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। ওজন কমাতে সকালের নাস্তা ও রাতের খাবার বাদ দিলে অথবা পুষ্টিকর খাবার না খেলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব হলে চুলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং চুল পড়া বেড়ে যায়।
৭. অতিরিক্ত স্টাইল:
চুলের অতিরিক্ত স্টাইল করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত সাধের চুল গুলোই হারাতে হয়। নিয়মিত চুল রঙ করা, স্ট্রেইট করা, রিবন্ডিং, জেল অথবা হেয়ার স্প্রে লাগালে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং চুল পড়া বেড়ে যায়।
পরিশেষে বলা যায়, ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। শারিরীক, মানসিক কিংবা পারিপার্শ্বিক তথা কোন চাপই নেয়া যাবে না।
জীবনের যেকোন সমস্যায় ধৈর্য্য ধরে এগোতে হবে। সমস্যা আসবে যাবে এটাই নিয়ম। আপনি যদি সামান্য কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আপনার শরীরকে বিকল করে ফেলেন তবে সবচেয়ে বড় ভুলটি করলেন।
আরও পড়ুন: পর্ন ভিডিও দেখা বন্ধ করুন মারাত্মক এই ২৫ কারণে – কি সেই কারণসমূহ?