ল্যাপটপ ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঘরে কিংবা অফিসে সবাই ল্যাপটপে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। কারণ, এটি বহনযোগ্য। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সহজেই বহন করা যায়।
ল্যাপটপে নানারকম সমস্যা হতে পারে। ডেস্কটপের তুলনায় ল্যাপটপের যেকোন সমস্যার সমাধান করাটা একটু কঠিন। এমন কিছু সমস্যা আছে যা সমাধান করাই যায় না।
ল্যাপটপের সাধারন একটি সমস্যা হচ্ছে গরম হয়ে যাওয়া। কাজ করার সময় হাতে ও উরুতে গরম অসহ্য গরম লাগে। মনে হয়, ল্যাপটপের ভেতরে আগুন ধরে গেছে।
উরুর কথা বলা হলো এই জন্যেই যে, অনেকেই উরুতে রেখে ল্যাপটপ ব্যবহার করে। যাই হোক, কাজ করার সময় ল্যাপটপ কি কি কারণে গরম হয় এবং সেক্ষেত্রে কি করবেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. একটি ল্যাপটপের যতোটুকু সামর্থ্য অর্থাৎ কাজ করার সামর্থ্য তার চেয়ে বেশি কাজ করা হলে ল্যাপটপ গরম হতে পারে। কারণ, তখন ল্যাপটপ এর ভেতরে থাকা প্রসেসর খুব বেশি কাজ করে।
এমন সময় আপনার উচিত ল্যাপটপের মধ্যে কাজের পরিমাণ কমিয়ে আনা। অনেকেই ভারী কয়েকটি সফ্টওয়ার একসাথে রান করে। এটা অনুচিত।
২. কখনো যদি ল্যাপটপের ভেতরে থাকা ফ্যান নষ্ট হয়ে যায় তবে কাজ করার সময় ল্যাপটপ গরম হয়ে যাবে। কারণ, ফ্যান নষ্ট হলে ল্যাপটপের ভেতরের গরম বাতাস বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না। এমন অবস্থার স্বীকার হলে অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে ল্যাপটপের ফ্যান ঠিক করে নিন।
৩. ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের ভেতরে র্যাম থাকে যা অস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে কাজ করে। কাজ ধারণ করার জন্য র্যামের একটা লিমিটেশন থাকে। অর্থাৎ আপনি যতো জিবি র্যাম ব্যবহার করবেন আপনার ল্যাপটপের পারফরম্যান্স তেমনই হবে।
অতএব র্যামের উপর চাপ পড়লে আপনার ডিভাইসটি গরম হতে পারে। এমন অবস্থায় আপনার উচিত ল্যাপটপের র্যাম বাড়িয়ে নেয়া।
৪. ল্যাপটপে এক সাথে একের অধিক কাজ করলে ল্যাপটপ সাধারণত গরম হয়। তাই কাজ করার সময় যে সফ্টওয়ারটি প্রয়োজন নেই তা ক্লোজ করে রাখুন।
ল্যাপটপ যত্নে রাখার জন্য করণীয়:
ল্যাপটপ এর ভেতরে সব ধরণের সুক্ষ্ম পার্টস রয়েছে। ওসবের মধ্যে ময়লা বা ধুলাবালি গেলে ল্যাপটপের সমস্যা হতে পারে। তাই ল্যাপটপের ভেতরে যাতে ধুলোবালি না যায় সেদিকে নজর রাখবেন।
সবসময় ঠাণ্ডা জায়গায় আপনার ল্যাপটপটি রাখার চেষ্টা করুন। কারণ, এসব জিনিস ঠান্ডা জায়গায় ভালো থাকে। পার্টসগুলো ভালো থাকে।
প্রতিদিন কাজ শেষে ল্যাপটপ বন্ধ করার সময় অবশ্যই পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। তাহলে ডিভাইসটি সৌন্দর্য হারাবে না এবং ভেতরে বা বাইরে ময়লা জমা হবে না।
ফুল চার্জ হলে চার্জার পিন খুলে রাখুন। কারণ, সবসময় যদি চার্জার পিন লাগিয়ে রাখেন তবে ল্যাপটপের ব্যাটারী ব্যাকআপ কমে যাবে।
এক্সটারনাল কীবোর্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ল্যাপটপের মধ্যে থাকা কীবোর্ড আসলে প্রফেসনাল ব্যবহার করার জন্য নয়। খুব দামী ল্যাপটপগুলোর দামের ক্ষেত্রে সেটি আলাদা বিষয়।
একসাথে কয়েকটি ভারী সফ্টওয়ার ওপেন করবেন না বা কাজ করবেন না। প্রকৃতপক্ষে, একজন মানুষ একসাথে কখনো ৫টি সফ্টওয়ারে কাজ করতে পারে না। এতে করে আপনার ল্যাপটপের ইন্টারনাল ফাংশন ভালো থাকবে।
একটানা ১৫ ঘন্টার বেশি ল্যাপটপ চালু রাখবেন না। যদিও প্রয়োজন হয় তবে মাঝে ১০ মিনিট বিরতি দিন। পাওয়ার অফ করে অন্তত ১০ মিনিট রাখুন এবং এরপরে পুণরায় চালু করুন।
পরিশেষে বলা যায়, ল্যাপটপ আসলে সবার হাতে সমান সময় টিকে না। কারণ, কেউ ভালো মতো ব্যবহার করে অর্থাৎ যত্নে ব্যবহার করে। আবার কেউ অযত্নে ব্যবহার করে।
আপনি যদি আপনার ল্যাপটপটিকে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করতে চান তবে অবশ্যই সব দিক থেকে যত্ন নিতে হবে। উপরে উল্লিখিত বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মোবাইল কেনার আগে যে বিষয়গুলোতে নজর দেয়া উচিত।
আর অতিরিক্ত গরম হলে অনেক সময় তা পুরে যেতে পারে। রাতে ঘুমানোর সময় কখনোই ল্যাপটপ চার্জে দিয়ে ঘুমাবেন না। কাজের শেষে টেমপোরারি ফাইলগুলো অবশ্যই ডিলেট করে দেবেন। ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল দুই ভাবেই যত্ন নিতে হবে।