অবৈধ পথে লিবিয়ায় গিয়ে ধরা পড়েছিলেন কিছু সংখ্যক বাংলাদেশী যুবক। তারা মূলত দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন। সম্প্রতি এমন ১১৪ জন যুবককে লিবিয়া থেকে দেশে ফেরৎ আনা হয়েছে।
গত ৩ মার্চ, ২০২২ খ্রি. তারিখে (বৃহস্পতিবার) সকালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় বোরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছান।
অন্যদিকে, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, সকাল সোয়া ৮ টায় উড়োজাহাজটি ঢাকায় নামে এবং লিবিয়া ফেরৎ ১১৪ জনকে বিমানবন্দরে ট্রানজিট পয়েন্টে রাখা হয়।
তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায়, ২০২১ সালের বিভিন্ন সময়ে তারা ভিজিট ভিসায় দুবাই, ওমান ও মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন তারা সবাই।
তাদেরকে শুরুতে ইতালি নেয়ার কথা বলেছিল দালালরা। পরে তাদেরকে ইতালি না নিয়ে লিবিয়ার ত্রিপোলিতে গেইম ক্যাম্পে রাখে। পরবর্তীতে লিবিয়ার পুলিশ এবং সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তাদের গ্রেপ্তার করে।
পাচারকারীদের দেয়া তথ্য মতে, তারা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসী প্রত্যাশীদের লিবিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে রাখে। এ কাজটি তারা নৌকায় তুলে দেয়ার আগেই করে তারা। আর ক্যাম্পগুলোকে তারা গেইম ঘর বলে অভিহিত করে।
জিয়াউল হক আরও বলেন, দেশে ফেরা ১১৪ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সাথে তারা কথা বলে জানতে পেরেছেন যে, তাদের কেউ কেউ ছয়-সাত মাস থেকে লিবিয়ায় বন্দী জীবন পার করছেন।
বিভিন্ন সময় দালালরা তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১১ লাখ থেকে ১৫ লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়েছে। তারা সবাইকে ইতালি ও ইউরোপে পৌছে দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল।
এই ১১৪ জন বাংলাদেশী পরবর্তীতে জাতিসংঘের মাধ্যমে আউট পাশ নিয়ে তারা বাংলাদেশে ফিরলেন। তাদের জীবনটা নিয়ে তারা ফেরৎ আসতে পেরেছেন এবং তাতেই তারা অনেক খুশি।
কারণ, লিবিয়াতে তাদের জীবন বিপন্ন অবস্থায় ছিলো। কয়েকজন মারাও গেছেন। আরও অনেক বাংলাদেশী সেখানে আটক অবস্থায় এখনও আছে।
সম্প্রতি ইতালি ও ইউরোপ যাওয়ার প্রত্যাশায় অনেক বাঙালি দালালদের হাত ধরে অনেক টাকা খরচ করে গোপনে যায়। বিভিন্ন সময় সাগর পথেও তারা পাড়ি জমায়।
কিন্তু মাঝ পথে কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের লিবিয়ার মতো দেশগুলোতে গিয়ে দালালরা অভিবাসী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
অনেকেই সেই টাকা দিতে পারে আবার অনেকেই দিতে পারে না। যারা দিতে পারে না তাদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক অত্যাচার। অনেক সময় কাউকে মেরেও ফেলা হয়।
তাই বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সাবধানতা অবলম্বন করুন। ইতালি বা ইউরোপ যাওয়ার স্বার্থে কখনোই শুধুমাত্র দালালদের ওপর নির্ভর করবেন না।
আরও পড়ুন: আর্থিক সংকটে কেবল শ্রীলঙ্কা নয়- তালিকায় আরো ১২টি দেশ।