সৃষ্টির শুরু থেকে চুলের যত্নে তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলের যত্নে তেল অনেক উপকারী। ছোট থেকে শুনে আসছি নানী-দাদীরা বলেন চুলের খাদ্য হলো তেল। রূপ চর্চায় তেল-এর ব্যবহার কখনোই বাদ দেয়ার মতো নয়।
চুল সুন্দর রাখতে হলে নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার করতে হবে। আর তেল চুলকে কোমল ও তেলতেলে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া তেল এক ধরনের পরিষ্কারক।
চুল ও মাথার ত্বকে কিছু ময়লা থাকে সেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় না কিন্তু তেলে হয়। তাই তেল মাখার পর চুলে শ্যাম্পু করলে সহজেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এবং ঝলমলে চুল পাওয়া যায়।
তবে তেল যে শুধু চুলকে তাজা রাখতে ব্যবহৃত হয় তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন রকম তেলের বিভিন্ন রকম ব্যবহার ও উপকারিতা রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই তেলের নানান ব্যবহার হয়ে আসছে।
রূপচর্চার ক্ষেত্রে ত্বক ও চুল দুটোতেই তেল অনেক উপকারি। রূপচর্চায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন ফেসিয়াল, ম্যাসাজ, মেনিকিউর, পেডিকিউর, স্কাল্প থেরাপি ইত্যাদি সৌন্দর্যের সব স্থানে তেল বিশেষ করে এসেন্সিয়াল অয়েল ব্যবহার হচ্ছে।
তাই প্রতিদিনের জীবনযাপনে বিভিন্ন ধরনের তেলের ব্যবহার বাড়ছে। প্রচলিত নারিকেল তেল, সয়াবিন তেল, সরিষার তেলের পাশাপাশি এখন যোগ হয়েছে সূর্যমুখী তেল, তিলের তেল, নিম তেল, তিসির তেল, ভুট্টার তেল ইত্যাদি।
এসব তেলের সাথে আবার ফুল, লতাপাতার মূলের রস যোগ করে সুগন্ধিযুক্ত উপকারী তেল তৈরি করা হচ্ছে। তো আর কথা নয় – আজ জেনে নেব বিভিন্ন রকম তেলের ব্যবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে।
নারিকেল তেল:
চুলের যত্নে যুগে যুগে নারিকেল তেল অনেক উপকারি হিসেবে খ্যাত । চুলের গোড়া শক্ত করে এই তেল। এছাড়া ত্বকে মালিশ করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
নারিকেল তেল ত্বকে ব্লিচ ও ক্লিনজারের কাজ করে। নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বকে ব্রনের সমস্যা দূর হবে এবং ব্রনের দাগ ও ক্ষত সেরে যাবে।
ত্বক নমনীয় করতে নারিকেলের তেল খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং র্যাশের সমস্যা সমাধানেও নারকেল তেল খুবই কার্যকারী।
ত্বকের কালো ছোপ ছোপ দাগ থাকলে সেসব স্থানে নারিকেল তেল দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ করলে দাগটি হালকা হয়ে যাবে।
কার্যকারিতা:
১. নারিকেল তেল প্রাকৃতিক আন্ডার আই বা চোখের ক্রিমের কাজ করে। নারিকেল তেলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে জমিয়ে প্রতিদিন রাতে শোবার আগে চোখের নিচে লাগালে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
২. ফেটে যাওয়া ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারবেন।
৩. নিয়মিত নারকেল তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ত্বকের পানিশূন্যতা দূর হবে।
৪. ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায়ও নারিকেল তেলে বেশ ভূমিকা রয়েছে।
৫. চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করতে নারিকেল তেলের গুন অসাধারন।
অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল:
অলিভ ওয়েলে রয়েছে ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ত্বককে সতেজ রাখে। ত্বকে ময়েশ্চারাইজারেরও কাজ করে অলিভ ওয়েল।
তুলোতে সামান্য অলিভ অয়েল লাগিয়ে মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে মেখে। এরপর কুসুম গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে মুখ মুছে ফেলতে হবে।
এবার শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে হবে। প্রতিদিন বাসায় ফিরে গোসল করার পর সামান্য পানির সাথে অলিভ ওয়েল মিশিয়ে সারা শরীরে ম্যাসেজ করে।
দেখবেন শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং সারারাত আপনার শরীরে ভেজাভাব বজায় থাকবে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক সময় ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়।
কপালে, চোখের পাশে ও নিচে চামড়ায় হালকা ভাঁজ দেখা দেয়। প্রতিদিন অলিভ ওয়েল দিয়ে ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে সহজে বলিরেখা পড়বে না।
তাছাড়া ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু অনেক প্রসাধনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে এই তেল। এই তেল অতি সহজেই ত্বকের গভীরে পৌঁছে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এর ক্লিনজিং ইফেক্টের কারণে ত্বকে ময়লা জমতে পারে না।
রাতে শোবার আগে অলিভ অয়েল মুখে ও ঘাড়ে ম্যাসাজ করে একটি টিস্যু পেপার দিয়ে হালকা করে মুছে নিলে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে এবং ভাল নাইটক্রিম হিসেবে কাজ করবে।
অলিভ অয়েল অতিরিক্ত শুষ্ক ও ছোপ ছোপ ত্বক কোমল এবং মসৃণ করে তোলে। ডার্মাটোলজিস্টগণ ত্বকের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্কের জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
এ সব ফাটাদাগে নিয়মিত ম্যাসাজ করলে দাগগুলো ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যাবে। এছাড়া শুষ্ক মাথার তালু প্রাণ ফিরে পায় অলিভ অয়েলের গুণে।
তবে চুলে না লাগানোই ভালো। গ্রীক মহাকবি হোমার অলিভ অয়েলকে তরল স্বর্ণের সাথে তুলনা করেছেন । একসময় ইউরোপে অলিভ অয়েল তৈরি হলেও এখন সারা বিশ্বেই এই তেল বেশ জনপ্রিয়।
এ যুগের মেয়েরা বেশি ক্ষেত্রে রূপচর্চায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করছে । যারা বাচ্চা নিতে ভয় করেন তারা শুরু থেকেই রাতে শোবার আগে ও গোসলের পর পেট ও থাই-এ অলিভ অয়েল ব্যবহার শুরু করতে পারেন।
এই তেল অ্যান্টি স্ট্রেচ মার্ক ক্রিম হিসেবে কাজ করবে। ড্যামেজ চুল ও নখের কিউটিসল রিপেয়ারে এর ভূমিকাও রাখে অলিভ অয়েল। মজার বিষয় হল, আজকাল ছেলেরা আফটার শেভ হিসেবেও অলিভ অয়েল ব্যবহার করছে।
কার্যকারিতা:
১. শুষ্ক ত্বকে মেকআপের সময় ফাউন্ডেশন ব্যবহারের আগে ১/২ ফোঁটা অলিভ ওয়েল মুখে মেখে নিলে। এতে মেকআপ বসবে ভালো এবং মেকআপের পর ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।
২. মেকআপ তোলার ক্ষেত্রে অলিভ ওয়েল বেশ ভালো কাজ করে। তুলো দিয়ে পুরো মুখে হালকাভাবে ম্যাসাজ করলে খুব সহজেই মেকআপ উঠে যাবে।
৩. প্রতিদিন ঠোঁটে এক ফোঁটা অলিভ ওয়েল আঙ্গুল দিয়ে ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হবে এবং যাদের ঠোঁটে কালচে ভাব আছে আস্তে আস্তে সেই কালচে ভাবও দূর হয়ে যাবে।
৪. অলিভওয়েলের সাথে চিনি বা লবণ মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে এটি ভালো স্ক্রাবারের কাজ করে।
৫. প্রতিদিন ঘুমানোর আগে হাতে ও পায়ে অলিভ ওয়েল ম্যাসাজ করলে। এতে পা ফাঁটা দূর হবে এবং হাত পা নরম এবং সতেজ থাকবে।
কাঠবাদাম তেল বা আমন্ড অয়েল:
রূপচর্চায় আমন্ড ওয়েল খুবই উপকারী। এই তেলে ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড, এসেনশিয়াল ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণই বেশি। তাই এই তেল ত্বকের সুস্থতা এবং উজ্জ্বলতায় বেশি উপকারি।
প্রতিদিন ব্যবহারে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বে না এবং বলিরেখা দূর হবে। চোখের নিচের কালি, ব্যথা, ফোলা ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে এই তেল।
এই তেলে চিটচিটে ভাব থাকে না। তাই ত্বক, চুল ও নখের যত্নে এটি জাদুর মতো কাজ করবে। মেয়েদের কাছে আমন্ড অয়েল বেশ জনপ্রিয়।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই তেলটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনি অতি সহজেই পেতে পারেন কোমল, মসৃন, দাগহীন উজ্জ্বল ত্বক।
রোদে পোড়া কালো দাগ, একজিমা, সোরিয়াসিস, এ সকল চর্মরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় কাঠ বাদাম তেল। শুধু তাই নয় শুষ্ক ঠোটে আমন্ড অয়েল ব্যবহারে ঠোট ফাটা সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
এটি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়, চুলপড়া ও আগা ফাটা সমস্যার সমাধান করে এবং চুলকে করে ঘন, কালো, সিল্কি ও ছন্দময়।
কার্যকারিতা:
১. রাতে ঘুমানোর আগে আমন্ড অয়লে ত্বকে মাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও হারানো জেল্লা ফিরে আসে।
২. ত্বকের গভীরে গিয়ে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এই তেল।
৩. যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা এই তেল কম ব্যবহার করবেন।
৪. আমন্ড তেল শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। এই তেল চোখের নিচের কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল হালকা করে।
তিলের তেল:
তিলের তেলের ব্যবহারে ত্বক সজীব হয়। অনেকে যত্ন না নেওয়ার কারণে বয়স বাড়ার আগেই ত্বকে বলিরেখা পড়ে। তিলের তেল ত্বকে বয়সের বলিরেখা রোধ করতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন তিলের তেলের ম্যাসাজ করলে মুখে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তিলের তেল ত্বকের মরা চামড়া তুলে ফেলে এবং ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া যাদের ত্বকে রোদে পোড়া ভাব রয়েছে তারা এই পোড়া দাগ দূর করতে পারেন এ তেল ম্যাসাজের মাধ্যমে।
তিলের তেল যেমন সারা রাত ত্বকে লাগিয়ে রাখা যায়, তেমনি ক্লিনজিং ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তিলের তেল পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা সমাধানে ভাল উপকার পাওয়া যাবে।
গোসলের সময় পানিতে ২-৩ টেবিল-চামচ তিলের তেল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ত্বকের ভেতর থেকে ময়লা বেরিয়ে আসবে। এরপর কুসুম গরম পানি ও মৃদু সাবান দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে।
কার্যকারিতা:
১. রাতে ঘুমানোর আগে তিলের তেল দিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করলে ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার হয়।
২. এক ফোঁটা তিলের তেল হাতেরতালুতে ঘষে নিয়ে শুকনো চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। তাহলে এই তেল কন্ডিশনারের কাজ করবে। এই তেল ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হবে। মাথা ঠাণ্ডাও থাকবে।
৩. ত্বকের ব্ল্যাক হেড, ব্রণ আর কালো দাগ দূর করতে তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
সূর্যমুখী তেল:
সূর্যমুখীর তেলে চিটচিটে ভাব থাকে না। তাই এই তেলের সুবিধা হলো, ত্বকে ব্যবহার করলে কোনো অস্বস্তিকর লাগবে না। বরং বেশ ভালো বোধ হবে।
ত্বক সজীব ও লাবণ্যময় করতে সূর্যমুখী তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। সব ধরনের ত্বকে এই তেল ব্যবহার উপযোগী। গোসলের পানিতে এই তেল ব্যবহারে সারাদিনের ক্লান্তি ভাব দূর হবে।
কার্যকারিতা:
১. সূর্যমুখীর তেল ব্রনের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
২. প্রতিদিন এই তেল ব্যবহারে রোদে পোড়া দাগ কমে যায়।
৩. শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
৪. ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ এবং বলিরেখা পড়তে দেবে না।
এসেন্সিয়াল অয়েল:
তেলের ব্যবহার এখন শুধু খাওয়া আর রূপচর্চায় সীমাবদ্ধ নেই। এখন মনকে প্রফুল্ল করতেও তেলের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।
তেলের সাথে বিভিন্ন গাছের ফুল, লতাপাতা, মূলের রস মিশিয়ে এখন তৈরি করা হচ্ছে এসেন্সিয়াল অয়েল। সুগন্ধির পাশাপাশি এই তেল ব্যবহৃত হয় অ্যারোমাথেরাপির কাজে।
নানারকম এসেন্সিয়াল অয়েল পাওয়া যায় যে কোনো সুগন্ধির দোকানে। এছাড়া বিউটি পার্লারগুলোতেও এসব তেল কিনতে পাওয়া যায়।
টি ট্রি অয়েল বা চা পাতার তেল:
অস্ট্রেলিয়ান সেনাদের ফাস্ট এইড বক্সের নিত্যদিনের সাথী ছিল এই টি ট্রি অয়েল। কিন্তু আজকাল এই অয়েল প্রসাধনী থেকে শুরু করে ত্বকের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা হচ্ছে।
পোকামাকড়ের কামড়ে জ্বালাপোড়া, হালকা কাটা ছেঁড়া, কর্নক্যানলকে সফট করতে টি ট্রি অয়েল অসাধারণ ভূমিকা পালন করছে।
এটি মাথায় দিয়ে ২/৩ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করলে উঁকুন ও খুশকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে সহজে। তৈলাক্ত ত্বকে যে কোনো তেল ব্যবহারের আগে অনেক কিছুই ভেবে নিতে হয়।
কারণ তেলের ব্যবহার ব্রণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের এ সকল সমস্যার সমাধান এনে দেবে টি ট্রি অয়েল।
এক গবেষণায় দেখা গেছে ব্রণের চিকিৎসায় টি ট্রি অয়েল, বেনজয়েল পার অক্সাইডের মতো কাজ করে। এ ছাড়া রেশ, চামড়া উঠা কোনোরকম সাইড ইফেক্ট ছাড়াই অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো থাকায় চিকিৎসকরা এই অয়েলকে ওষুধ হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন।
সরিষার তেল:
গরম করে মাথার তালুতে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। দেখবেন খুশকি একেবারেই উধাও হয়ে গেছে।
এই তেল ত্বকে আর্দ্রতা জোগায়। তাই শীতে ফাটা ত্বকে এর মালিশ খুব উপকারী। শিশুর ত্বকেও খাঁটি সরিষার তেলের ম্যাসাজ অন্য রাসায়নিকযুক্ত তেলের তুলনায় নিরাপদ।
এপ্রিকট অয়েল:
ময়েশ্চারাইজার ও ত্বকের পুষ্টির জন্য এই তেল খুবই উপকারী।
ইভনিং প্রিমরোজ:
এই তেল অ্যাকনে, অ্যাকজিমা এবং খুশকির ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
ক্যারট অয়েল:
বয়সের ছাপ কমানো ও পুড়ে যাওয়া রোধে ব্যবহৃত হয় এই তেল।
হ্যাজেলনাট অয়েল:
ত্বকের শৈথিল্য দূর করে নতুন কোষ উৎপন্ন করে এই তেল।
নিম তেল:
যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে, তারা নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে দুদিন।
ক্যাস্টর অয়েল:
চোখ এবং ভ্রুপল্লব ঘন করতে নিয়মিত দু-তিন ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল ধৈর্য ধরে তিন মাস ব্যবহার করুন। ভাল ফল পাবেন।
কিছু ফেসপ্যাকে তেলের ব্যবহার:
এক চা-চামচ অলিভ অয়েল ও আধা চা-চামচ লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। তারপর ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের উজ্জ্বলভাব বাড়াবে।
এক কাপের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ অ্যাপল সিডার ভিনেগার এবং এর সমপরিমাণ পানির সাথে আধা কাপ তিলের তেল মিশিয়ে ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন রোজ রাতে। তবে এটি লাগানোর আগে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে ভুলবেন না।
যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির, তাঁরা ডিমের সাদা অংশের সাথে ২০-২৫ ফোঁটা চা-পাতার তেল, মধু, এক টেবিল-চামচ ওটস মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। ২০ মিনিট পর লাগিয়ে রেখে এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
তেলে স্ক্রাবিং:
পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এরপর তিলের তেল ভালোভাবে ত্বকে ম্যাসাজ করে আধা চা-চামচ চালের গুঁড়া দিয়ে কিছু সময় মুখে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে।
তেল দিয়েই লোশন:
তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সেখান থেকে ২৫ মিলিলিটার তুলসির রস নিয়ে ৬০ মিলিলিটার গোলাপজল ও ১৫ ফোঁটা চা-পাতার তেলের সাথে মিশিয়ে লোশন তৈরি করে।
ফ্রিজে রেখে এটি ব্যবহার করতে পারবেন ১৪ দিন পর্যন্ত। লোশনটি ব্যবহারের আগে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, মানব জীবনে তেল এর বহুরকম ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু রূপ চর্চায় তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
কিন্তু মেয়েদের উচিত, যেকোন একটি তেলে অভ্যস্ত হওয়া। বিভিন্ন রকম তেল ব্যবহার করলে চুলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: রূপ চর্চায় বেসন ও লেবুর ফেইসপ্যাক ব্যবহার করুন – প্রাকৃতিকভাবে হয়ে উঠুন সুন্দরী।