রমজান-এর অর্থ: হযরত ওমর (রা:) বলেছেন, আমি হযরত রাসুলুল্লাহ (সা:) কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা:), রমজান মাসের ফজিলত কি? তিনি বললেন, রমজান মোবারককে তাওরাতে হাত্ব ইনজিলে ত্বাব যবুরে কোরবাত এবং কুরআন মাজীদে রমজান মোবারক বলা হয়।
অর্থাৎ হাত্ব এর অর্থ গুণাহকে নষ্ট করে দেয়া। একে ত্বাব এজন্য বলা হয় যে, এ মাসে রোজাদার পবিত্র হয়ে যায়। কোরবাত এ জন্য বলা হয় যে, এ পরিত্র রমজান মাসে আল্লাহর সাথে বান্দার একান্ত নৈকট্য লাভ হয়। রমজান “রমজ” ধাতু হতে গৃহীত।
ঐ বৃষ্টিকে আরবগণ “রমজ)বলে যে বৃষ্টি হেমন্তকালের প্রথমে বর্ষে এবং এতে রহমত নাজিল হয়।
রমজান মাসের ১৫টি রহমত
মানাকেবে মোহাম্মাদীর মধ্যে লিখিত আছে রমজান মাসে ১৫টি রহমত নাজিল হয়। সেগুলো নিম্নরূপ:
১. রিজিক প্রশস্ত হয়।
২. ধন-জন বৃদ্ধি পায়।
৩. যা কিছু এ মাসের মধ্যে খাওয়া হয় তা আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে গণ্য হয়।
৪. ইবাদত ও নেক কাজ ইত্যাদি দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
৫. আসমান-যমীনে সমস্ত ফেরেস্তা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে।
৬. সমুদয় শয়তান বন্দী হয়।
৭. রহমতের দরজা অতি প্রশস্ত হয়।
৮. বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হয় ও দোযখের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়।
৯. রমজান-এর প্রত্যেক রাতে, সাত লক্ষ গুণাহগারকে জাহান্নাম হতে মুক্ত করে দেয়া হয়।
১০. রমজানে প্রত্যেক শুক্রবার রাতে এ পরিমাণ গুণাহগার আজাদ হয়, যে পরিমাণ সাতদিনে আজাদ হয়।
১১. রমজানের শেষ রাতে মানুষের সমস্ত গুণাহ মাফ করে দেয়া হয়।
১২. প্রত্যহ মুমিন রোজাদারের জন্য বেহেশতে সজ্জিত করা হয়।
১৩. রোজাদারের শরীর সমস্ত গুণাহ হতে পবিত্র হয়।
১৪. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।
হযরত রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, হে রোজাদারগণ! তোমরা ইহুদিদের বিপরীত কাজ করার জন্য সেহেরী খাও। কারণ, ইহুদীগণ সেহেরী খায় না। যে ব্যক্তি সেহেরী খাবে, তার জন্য সমস্ত ইহুদীর সংখ্যা পরিমাণ সওয়াব তার আমলনামায় লিখিত হবে।
সেহেরীর বিবরণ:
হয়রত রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, হে রোজাদারগণ! তোমরা সেহেরী খাও। যে নিয়ামত খাবে কেয়ামতের দিন তার কোন হিসাব হবে না।
বর্ণিত আছে যে, যখন সেহেরী খেতে উঠবে, তখন নিম্নের দোয়া পড়বে। তাহলে গুণাহ মাফ হয়ে যাবে।
দোয়াটি হলো: ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি অর্থাৎ হে মহান ক্ষমাকারী।
যে ব্যক্তি রোজার নিয়ত করে সেহেরী খাবে, আল্লাহ তার জন্য প্রত্যেক মাসে এক-এক বছরের ইবাদতের সওয়াব লিখবেন। হযরত রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন যে, যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে সেহেরী খাওয়া ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি ইহুদীর ন্যায় হবে।
আরও পড়ুন: নামাজ পড়ার সময় যে কাজগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
যে ব্যক্তি সেহেরী খাওয়ার ওয়াক্তে এক গ্রাসও সেহেরী খাবে, তার আমলনামায় অসংখ্যা সওয়াব লেখা হবে।
উৎস: সহজ নূরানী নামাজ শিক্ষা নামক বই (সংকলক: হযরত মাওলানা মো. শামছুল হক ও মমতাজুল মোহাদ্দেসীন)