ভারতের মনিপুরে যৌন নির্যাতন এর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কাজটি করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একজন সদস্য (বিএসএফ)। রাজ্যটির একটি সুপারশপে গত সপ্তাহে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দেয়া তথ্যানুযায়ী, বিএসএফ এর সেই সদস্যের নাম সতীশ প্রসাদ। বর্তমানে তিনি হেড কনস্টেবল হিসেবে বাহিনীটিতে রয়েছেন।
তবে এই ঘটনার জেরে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক আসামী হিসেবে রয়েছেন।
যে সুপারশপে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যায়, বিএসএফ এর পোশাক পড়া এক ব্যক্তি এক নারীকে আপত্তিকরভাবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করছেন।
পরে এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়। হাজার হাজার প্রতিবাদী কণ্ঠ ‘মন্তব্য’ করার মাধ্যমে এই ঘটনার নিন্দা করে।
একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে দোকানে গত ২০ জুলাই, ২০২৩ ঘটনাটি ঘটে।
বর্তমানে এই অভিযোগের দরুন বিএসএফ এর অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। দায়ী ব্যক্তির (সতীশ প্রসাদ) জন্য বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, মনিপুরে গত ৪ই মে দুই তরুণীকে একদম বিবস্ত্র করে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঐ ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন তরুণ দুই জন তরুণীকে বিবস্ত্র করে ধান ক্ষেতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হাঁটার সময়েই কেউ কেউ বিবস্ত্র তরুণীদের সাথে খারাপ আচরণ করছেন। স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিচ্ছেন। যৌন নির্যাতন এমন ভিডিও খুবই বিরল।
এরপরে ঐ ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী এক নারী ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস) জানান, “পুলিশই আমাদের তাদের (উচ্ছৃঙ্খল জনতার) হাতে তুলে দিয়েছে।”
এ ঘটনা নিয়ে পুরো ভারত জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সমালোচনা শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ঐ ঘটনায় একজন কিশোরসহ মোট সাত জন গ্রেফতার হয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, মণিপুর রাজ্য বা কঙ্গলিপাক রাজ্য, উত্তর-পূর্ব ভারতে একটি প্রাচীন স্বাধীন রাজত্ব ছিল। ১৮২৪ সাল থেকে এটি ব্রিটিশ ভারতের সাথে একটি সহায়ক জোটে পরিণত হয়েছিল, যা এটি একটি দেশীয় রাজ্য হিসাবে ছিল।
এটির সীমানা পশ্চিমে আসাম প্রদেশ এবং পূর্বে ব্রিটিশ বার্মার পর্যন্ত এবং বিশ শতকে ২২,৩২৭ বর্গকিলোমিটার (৮,৬২১ বর্গ মাইল) জুড়ে এবং ৪৬৭ টি গ্রাম ছিল। রাজ্যের রাজধানী ছিল ইম্ফল।
মণিপুরের প্রাথমিক ইতিহাসটি পৌরাণিক আখ্যান নিয়ে গঠিত। ইম্ফল নদীর তীরে অবস্থিত কাংলা দুর্গ, যেখানে রাজা পাখংবার প্রাসাদ ছিল।
এটি ১৬৩২ সালে রাজা খাগেম্বা দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, যিনি চীনা আক্রমণকারীদের পরাজিত করেছিলেন। দুর্গে, বেশ কয়েকটি মন্দিরের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় তাত্পর্য ছিল। কঙ্গলার অর্থ পুরানো মৈথেই ভাষায় “শুকনো জমি”। (উইকিপিডিয়া হতে নেয়া)
আরও পড়ুন: ভাগনার গ্রুপ যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে বেলারুশে