অনেকেই তাদের নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কারন হিসেবে বলবো, যারা চিকন তারা মোটা হতে চান। আর যারা মোটা তারা চিকন হতে চান। কেউ আবার স্লিম হতে চান। বিভিন্ন রকম মানুষের বিভিন্ন রকমের চাওয়া।
প্রকৃত অর্থে, মোটা হতে চাওয়া ভালো কোনো কিছু নয়। তবে কারও স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে তা কিছু নিয়ম-কানুন ও খাবার-দাবার এর মাধ্যমে উন্নত করা সম্ভব।
আজ আমরা আপনার স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। আপনার স্বাস্থ্য যখন ভালো হবে তখন আপনি নিজে এমনিতেই মোটা হয়ে যাবেন।
মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ওজন শরীরের জন্য মোটেও ভালো কিছু বয়ে আনে না। তাই স্বাস্থ্য স্বাভাবিক রাখুন। খাবার পরিমিত পরিমাণে খান এবং অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খান।
এরপরেও আপনি নিচে দেয়া বিষয়গুলো অনুসরণ করতে পারেন। এতে অবশ্যই আপনার স্বাস্থ্য ভালোর দিকে যাবে তথা আপনি মোটা হতে পারবেন।
১। সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠবেন। ভোরবেলা উঠবেন। এক ঘন্টার মধ্যে সকালের নাস্তা শেষ করবেন। নিয়মিত বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাবেন। রুটিন মাফিক খেলে ভালো হয়। অনিয়ম করে খাবার খেতে যাবেন না।
২। ভাত পরিমাণে একটু বেশি খাবেন। পরিমিত পরিমাণে রুটিও খেতে পারেন। প্রত্যেক বেলা খাবার খাওয়ার সময় তরকারি হিসেবে প্রচুর পরিমাণে সবজি রাখবেন। প্রতিদিন গোল আলুর তরকারি খেতে পারেন। আর অবশ্যই মুশুরী কালাই এর ডাল রাখবেন রুটিন মাফিক প্রতিদিন।
৩। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মুখ ধুয়ে নিয়ে দুটো সিদ্ধ ডিম খাবেন। যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ সংক্রান্ত সমস্যা থাকে তবে তা খেতে যাবেন না।
ডিমে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের উপাদান (আমিষ) থাকে যা আপনার দৈহিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪। রাতের খাবারে বেশি করে মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। আর খাওয়ার আধ ঘন্টা পরে দুটো কলা খেতে পারেন। দুপুরের খাবারে বেশি করে ডাল খাবেন।
৫। দুপুর গড়িয়ে যখন বিকেল হবে তখন নাস্তা হিসেবে ছোলা অথবা কলাই জাতীয় খাবার এবং বাদাম খাবেন। প্রতিদিন একই খাবার না খেয়ে একেক দিন একেক রকম খাবার খাবেন। তাহলে রুচি ঠিক থাকবে।
৬। প্রতিদিন রাতে দ্রুত খাবার খেয়ে নিবেন। কারণ, রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে এবং যথেষ্ট পরিমাণ ঘুম না হলে আপনার ক্যালরির পরিমাণ ঠিক থাকবে না। তাই দ্রুত খেয়ে নিয়ে রাত ১০ টা কিংবা তার আগেই ঘুমিয়ে পড়ুন।
৭। মোটা হওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে ফলমুল খেতে হবে। মিষ্টি জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। আপনি ফলের রসও খেতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ফলের তৈরী জ্যাম-জেলি, সিরাপ, পানীয় ইত্যাদি খেতে পারেন।
৮। নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। একটু খানি বিনোদনের মধ্যে নিজেকে বন্দি রাখুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে এবং কায়িক শ্রম করলে ক্ষুধা বেড়ে যায়। আপনি যদি বেশি বেশি খাবার খেতে না পারেন তবে আপনার পক্ষে মোটা হওয়া কখনোই সম্ভব নয়।
৯। মোটা হতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে মাঝে মাঝে ড্রিংকস খেতে হবে অর্থাৎ কোমল পাণীয়। উদাহরণস্বরুপ- আরসি, কোকা কোলা, লেমন ইত্যাদি। এগুলো নিয়মিত খেলে আপনার শরীরে কার্বেোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট জমে।
তবে যখন খাবার খাবেন তখন পানির পরিবর্তে কোমল পানীয় খেতে যাবেন না। নরমাল পানিই খাবেন। নইলে কিন্তু লাভের বদলে আপনার ক্ষতিই বেশি হবে।
১০। ঘুমানোর পূর্বে মধু খেতে পারেন। মধু শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকর। রাতের খাবার শেষে আধ ঘন্টা পরে সামান্য কুসুম গরম পানির সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
আপনার ওজন কিন্তু বিভিন্ন কারণে কমে যেতে পারে। সেই ব্যাপারগুলোও খেয়াল করুন। আপনি শুধু মোটা হতে চাইলেই হবে না। কেন আপনার স্বাস্থ্য খারাপ কিংবা খারাপের দিকে যাচ্ছে সেদিকে নজর দিতে হবে।
সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, জেনেটিক কারণ, ডায়রিয়া, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, এইডস রোগ, কিডনীর সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, ড্রাগ নেয়া সহ আরও কিছু কারণে আপনার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যেতে পারে।
অনেকেই আপনাকে হয়তো নানারকম ওষুধের কথা বলতে পারে। মোটা হওয়ার জন্য কোনমতেই কোনো ওষুধ খাওয়া ঠিক না। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
প্রাথমিক অবস্থায় হয়তো আপনি সুফল পাচ্ছেন এরকমটা মনে হতে পারে কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিলতায় আপনি ভুগতে পারেন।
উপরে উল্লিখিত পরামর্শগুলো আপনি যদি মেনে চলতে পারেন তাহলে মোটা না হলেও আপনি খুব সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন। স্বাস্থ্যই সম্পদ – মনে রাখবেন। তবে অতিরিক্ত স্থুলতা কোন মতেই কাম্য নয়।
আরও পড়ুন: জানা অজানা কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই – পর্ব ০১