মানসিক রোগ খুব খারাপ রোগ আসলে। কারণ, কোনো মানুষকে ভেতরে ভেতরে মেরে ফেলে। হয়তো তার পরিবার বুঝতেই পারে না যে তিনি মানষিক রোগে আক্রান্ত।
মানসিক রোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিজে নিজে চিকিৎসা করবেন না। অবশ্যই একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের নিকট গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার অনুরোধ রইলো।
বুদ্ধিলোপের চিকিৎসা: যারা একঘেয়ে জীবন-যাপন করে তাদেরই সাধারণত এই রোগটা হয়ে থাকে। কয়েদী ও নাবিকদের জীবন এভাবেই কাটে।
দীর্ঘকাল একই বিষয়ে চিন্তা করা, দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্যাদি সেবন প্রভৃতি কারণে বুদ্ধিলোপ ঘটে থাকে। মূলতঃ একঘেয়েমির জন্যই এরকম হয়। গুম হয়ে থাকা, তন্দ্রা-ভাব, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মাঝে মাঝে কান্না পায় প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।
বুদ্ধিলোপ হল রোগীর অন্যমনস্ক-ভাব বা গুম হয়ে থাকা ভাবটা বেশি করে দেখা দেয়। এ রকম হলে চিকিৎসা দ্বারা রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে না আনলে মানসিক দিকের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক দিকটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তখন রোগী সহজেই আরও কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রোগীর মধ্যে কি কি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় তা ভালোভাবে অনুসন্ধান করে ওষুধ দিলে এ ভাবটা কেটে যায় বা সমস্যা দূর হয়।
বিমর্ষ ভাব দেখা দিলে- কোনায়াম ৬।
কোন কিছু ভাববার বা বোঝবার ক্ষমতা বিলুপ্ত হলে- ক্যালক্যারিয়া কার্ব ৬।
কেঁদে ফেলা, গুম হয়ে থাকা, বেশি প্রস্রাব, বুদ্ধিলোপ প্রভৃতি লক্ষণে- ফসফরিক অ্যাসিড ৬ বা অ্যানাকার্ডিয়াম ৬।
রোগ বেশি দিনের পুরনো হলে- হেলিবোরাস ৬ ও জিঙ্কাম ৬।
শুধু ওষুধ খাওয়ালেই হবে না, রোগীর জীবন-যাত্রার গতি যাতে স্বাভাবিকভাবে চলে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। রোগীকে পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াতে হবে, প্রতিদিনি ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করতে হবে।
বিশ্রাম ও ঘুমের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে, লোকজনের সঙ্গে যেন ঠিকমত মেশে তা দেখতে হবে, মন যাতে সব সময় প্রফুল্ল থাকে সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে পরিবারের অন্য সবাইকে।
অবসাদ বায়ুর চিকিৎসা: মানসিক অবসাদ থেকেই দেখা দেয় শারীরিক অবসাদ। এর ফলে কাজে উদ্যম বা স্পৃহা থাকে না।
স্ফূর্তিহীনতা দেখা দেয়, রোগী বিমর্ষ হয়ে পড়ে, রোগীর মনে হয় সে কোন কঠিন রোগে ভুগছে – এ রোগ আর সারবে না। রোগীর মধ্যে একটা স্পষ্ট হতাশার ভাব দেখা দেয়।
এ সবের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অজীর্ণতা প্রভৃতি রোগ প্রকট হয়। রোগী অনেক সময় প্রলাপ বকে।
পারদ-ঘটিত কারণে এ রকম রোগ হলে- আর্সেনিক ৬, কোনায়াম ৩, নেট্রাম মিউর ১২, স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া ৬। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
প্রলাপ করতে থাকলে দিতে হবে- ইগ্নেসিয়া ৩।
কোষ্ঠকাঠিন্য, অজীর্ণতা প্রভৃতি দেখা দিলে- নাক্সভমিকা ৬ (প্রথমে), সালফার ৩০ (পরে)।
মানসিক বিকারের চিকিৎসা: মাথায় আঘাত পেয়ে, অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে, স্নায়ুর দুর্বলতার জন্য, অতিরিক্ত নেশা সেবনের জন্য, উগ্র ধরণের ওষুধ খাওয়ার ফলে অনেক সময় মানসিক বিকার দেখা দেয়।
অতিরিক্ত শুক্রক্ষরণ বা ক্ষিপ্ত জন্তু কামড়ালেও এ রকম হতে পারে। রোগী হাসে, কাঁদে, নাচে, লাফায়, ঢিল ছোঁড়ে, মারতে যায়, চিৎকার করে, গালাগালি দেয় সহ প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।
আবার, গুম হয়ে থাকা, বিমর্ষ-ভাব প্রভৃতি লক্ষণও কখনও কখনও দেখা দেয়। অন্যমনস্ক-ভাব বা মূর্ছাও দেখা দেয়।
প্রেমের ক্ষেত্রে নিরাশ হয়ে বা কোনো বিষয়ে শোক পেয়ে এ রকম হলে- ফসফরিক অ্যাসিড ৩০।
বিমর্ষ-ভাব, ধর্ম নিয়ে নানা রকম পাগলামি প্রভৃতি লক্ষণে- সালফার ৩০।
দীর্ঘদিন ধরে নেশা সেবন, অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম, গভীর চিন্তা প্রভৃতি কারণে এ রোগ হলে- নাক্সভমিকা ৩x।
হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলে, বা কাঁদতে কাঁদতে হেসে ফেলে, বিমর্ষ ভাব, একা থাকতে চাওয়া, নীরবে চোখের জল ফেলা, দীর্ঘশ্বাস ফেলা প্রভৃতি লক্ষণে- ইগ্নেশিয়া ৩।
ধর্ম নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করা, সব সময় কিছু একটা কাটা বা ছেড়ার ইচ্ছা, সর্বদা প্রেম চর্চা করতে ভালোবাসা প্রভৃতি লক্ষণে- ভিরেট্রাম অ্যালবাম ৬।
রোগীর নির্দিষ্ট সময়ে গোসল খাওয়া দরকার। নিয়মিত মুক্ত বায়ুতে কিছুক্ষণ ভ্রমণ করা উচিত। বিশ্রাম যেন ঠিকমত হয়। ঘুমে যেন কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়। রোগীকে ঘোল, ডাবের পানি প্রভৃতি খাওয়ানো দরকার।
নেশা সেবন-জনিত বিকারের চিকিৎসা: দীর্ঘদিন নেশা সেবন করার ফলে নানারকম মানসিক বিকৃতি দেখা দিয়ে থাকে। এই সব মানসিক বিকারের সঙ্গে শারীরিক অসঙ্গতিও পরিলক্ষিত হয়।
রোগীর ক্ষিপ্ত-ভাব দেখা দেয়, কাঁপুনি থাকে, ভুল বকে, দুঃস্বপ্ন দেখে, নানা রকম বিভীষিকা দেখে প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। রোগীর চোখ-মুখ লাল হওয়া, ঘুম না হওয়া প্রভৃতি লক্ষণও থাকে।
রোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করলে তাড়াতাড়ি সারে, নতুবা এ রোগ সারতে যথেষ্ট সময় লাগে। শুধু ওষুধ খাওয়ালেই হবে না, রোগীর নেশা সেবনও বন্ধ করে দিতে হবে।
রোগীকে পুষ্টিকর আহার, দুধ, সুপক্ক ফল প্রভৃতি খাওয়ানো দরকার। মাঝে মাঝে ডাবের পানি ও ঘোলের শরবৎ খাওয়াতে হবে। নির্মল বায়ু রোগীর পক্ষে অত্যাবশ্যক।
গোসল-আহার নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে। ঘুম যাতে ঠিকমতো হয় সেদিকটাও নজরে রাখতে হবে।
রোগের শুরুতে যে ওষুধটি দিলে সুফল পাওয়া যায় তা হলো- আর্সেনিক ৬।
অনিদ্রায় বা ঘুম কম হলে- ওপিয়াম ৬।
রোগের প্রবল অবস্থায় অর্থাৎ যখন নানা রকম বিভীষিকা দেখে, চোখ-মুখ লাল হয়, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয় তখন দিতে হবে- বেলেডোনা ৬।
এ ধরণের রোগীর পক্ষে উপযুক্ত ওষুধ- নাক্সভমিকা ১x-৩x। এই ওষুধটি রোগের যেকোন অবস্থায় দেওয়া চলে।
রোগী বিভীষিকা দেখতে থাকলে- স্ট্র্যামোনিয়াম ৩।
রোগীর যদি পাকাশয়ের গোলযোগ দেখা দেয় তাহলে দিতে হবে- অ্যান্টিম টার্ট ৩। পাকাশয়ের গোলযোগ সহ বমি হলে বা বমি-বমি ভাব থাকলেও এই ওষুধটি দেয়া চলে।
রোগের পুরাতন অবস্থায় দেওয়া উচিত- ফসফরাস ৬ বা ক্যালক্যারিয়া কার্ব ৬।
ক্ষ্যাপামির চিকিৎসা: অধিক হস্তমৈথুন বা স্ত্রী-সহবাস, দীর্ঘদিন ধরে নেশা করা, পিতা-মাতার মস্তিষ্কবিকৃতি, উপদংশ বা ধাতুগত কারণে এ রোগ হয়ে থাকে।
পুরোপুরি ক্ষ্যাপামির সময় রোগীর সব কাজেই অস্বাভাবিক বা অবাস্তব মনে হয়। হাসি, অট্টহাসি, বিকট চিৎকার, কাউকে মারতে-কাটতে যাওয়া, আপনমনে বক-বক করা, নিজের চুল নিজে ছেঁড়া, রোগী কখনও ভেংচায়, কখনও নানারকম নির্লজ্জতা প্রকাশ করে প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।
রোগীকে এ সময় কোনো উত্তেজক বা গুরুপাক খাদ্য দেওয়া উচিত নয়। ডাবের পানি, ঘোল, দই প্রভৃতি খাওয়ানো দরকার। রোগীর নিয়মিত গোসল করা প্রয়োজন। ঘুম ভালো হওয়া চাই।
রোগী কথা বলতে চায় না বা বেশি কথা বলে, এরূপ লক্ষণে- ভিরেট্রাম অ্যালবাম ৬।
নির্লজ্জতার জন্য এ রোগ হলে- হায়োসায়েমাস ৬।
শপথ করতে থাকলে- লাইকোপোডিয়াম ৩০।
হাসি বা আহ্লাদ লক্ষণে- বেলেডোনা ৬ বা স্ট্র্যামোনিয়াম ৬।
রোগী যদি কাঁদে- পালসেটিলা ৬।
রোগী যদি মুখ ভ্যাংচায়- কিউপ্রাম ৬।
বিষাদগ্রস্ততার চিকিৎসা: স্নায়বিক দুর্বলতা, নারীর জরায়ুর রোগ, অধিক মৈথুন, হঠাৎ শোক-দুঃখ পাওয়া, মানসিক পরিশ্রম বেশি হওয়া, পারদের অপব্যবহার বা উগ্র ধরণের ওষুধ সেবনের কারণে রোগীর বিষাদ-ভাব দেখা যেতে পারে।
এমন হলে রোগী নিস্তব্ধভাবে একা-একা থাকতে ভালোবাসে। নিজের জীবনে ধিক্কার দেখা দেয়, দীর্ঘশ্বাস ফেলে, মাঝে মাঝে কাঁদে, সংসারের প্রতি উদাসীন থাকে, আত্মহত্যা করার ইচ্ছা জাগে, সব সময় বিমর্ষ-ভাব, এসব লক্ষণ দেখা দেয়।
এ রোগ পুষে রাখলে কঠিন ধরণের রোগে পড়তে পারে এবং তার ফলে মৃত্যুও ঘটতে পারে। রোগের শুরুতেই চিকিৎসা করানো দরকার।
রোগী নিজের মুক্তির জন্য সর্বদা দেব-দেবীর নাম করে, মনে করে এতেই সে মুক্তি পাবে, এরূপ লক্ষণে- পালসেটিলা ৬।
প্রেমের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার জন্য বিষাদভাব দেখা দিলে- ফসফরাস ৬ বা স্ট্র্যামোনিয়াম ৬ বা হায়োসায়েমাস ৩।
অজীর্ণ রোগের জন্য বিষাদ দেখা দিলে- নাক্সভমিকা ৬ বা পালসেটিলা ৬।
প্রবাসে থাকার জন্য বিষাদ, বাড়িতে আসার জন্য ছটফট করতে থাকা লক্ষণে- ইগ্নেসিয়া ৬ বা ফসফরিক অ্যাসিড ৬ বা ক্যাপসিকাম ৩ বা ম্যাগনেসিয়া মিউর ৬।
পারদের অপব্যবহার-জনিত কারণে এ রোগ হলে- সালফার ৬ (প্রথমে), অরাম-মেট ৩x চূর্ণ-২০০ (পরে)।
নিজের কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে বিষাদগ্রস্ত হলে- ভিরেট্রাম অ্যালবাম ৬ বা স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া ৬।
শোক-দুঃখের কারণে বিষাদগ্রস্ত হলে- ইগ্নেসিয়া ৩ বা ফসফরিক অ্যাসিড ৬।
রোগীর সব সময় আত্মহত্যার ইচ্ছা থাকলে- পালসেটিলা ৬ বা আর্সেনিক ৬ বা অরাম-মেট ৩০।
মানসিক পরিশ্রম বা চিন্তা-ভাবনা বেশি করার ফলে বিষাদগ্রস্ততা দেখা দিলে- নাক্সভমিকা ৬।
যকৃতের দোষ থাকার জন্য এ রোগ হলে- কার্ডুয়াস ম্যারিয়ানা ৩x।
ভুল দেখার চিকিৎসা: এটিও মানসিক ব্যাধি। অত্যাধিক পরিশ্রম, স্নায়ুর দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। রোগী নানা রকম অবাস্তব জিনিস দেখে।
আচমকা ভূত-প্রেত দেখেছে বলে মনে করে। রোগীর ধারণা হয় যে – সে ঠিকই দেখেছে। আসলে কিন্তু এটি ভুল দেখা।
কোনো জীব-জন্তুর প্রকৃত আকার অপেক্ষা ছোট দেখলে- প্ল্যাটিনা ৬।
জন্তুর আকার বড় দেখলে- হায়োসায়েমাস ৬।
ভূত-প্রেত দেখেছে বা ঐরকম কোনো অবাস্তব জিনিস দেখেছে মনে হলে- আর্সেনিক ৬ বা বেলেডোনা ৬।
রোগী যদি মানুষের কঙ্কাল দেখে কিম্বা মৃতদেহ দেখে তাহলে দিতে হবে- ওপিয়াম ৬ বা সিলিকা ৬।
খেয়াল দেখার চিকিৎসা: এ ধরণের রোগী চলে আপন খেয়ালের বশে। সে যা করে তা বাস্তবসম্মত নয়, কিন্তু রোগী মনে করে সে ঠিক কাজই করেছে।
অনিদ্রা, ভুল বকা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, অনর্গল বক-বক করা, চিৎকার প্রভৃতি লক্ষণ। রোগী কখনও হাসে, কখনও কাঁদে, কখনও বিভীষিকা দেখে আঁতকে ওঠে।
কাউকে হঠাৎ বিনা কারণে মারতে বা কাটতে তেড়ে যাওয়া এ ধরনের রোগীর লক্ষণ। রোগীর লজ্জা, ভয় ও ঘৃণা থাকে না। সকলের সামনে উলঙ্গ হতেও তার আটকায় না।
এমন রোগী বদ্ধ উন্মাদ হয়ে পড়তে পারে। বিকট হাসি, কাটতে বা মারতে তেড়ে যাওয়া, কাউকে কামড়াতে উদ্যত হওয়া, চোখ-মুখ লাল হয়ে পড়া খিটখিটে মেজাজ হওয়া প্রভৃতি লক্ষণে- বেলেডোনা ৩।
অত্যন্ত লজ্জাহীনভাবে কামোন্মতায়- ফসফরাস ৩ (পুরুষদের জন্য), হায়োসায়েমাস ৩x (স্ত্রীলোকদের জন্য)।
অনবরত বক-বক করা, বিভীষিকা দেখে আঁতকে ওঠা প্রভৃতি লক্ষণে- স্ট্র্যামোনিয়াম ৩x।
খুন করতে ইচ্ছা জাগে লক্ষণে- নাক্সভমিকা ৩ বা ল্যাকেসিস ৬ বা সালফার ৩০ বা ভিরেট্রাম অ্যালবাম ৬। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
এ রোগের উৎকৃষ্ট ওষুধ- হায়োসায়েমাস ৩-৩০, বেলেডোনা ৩-৩০, সালফার ৩০ ও স্ট্র্যামোনিয়াম ৩x-৩০।
প্রলাপ বকার চিকিৎসা: স্নায়ুর দুর্বলতা, প্রবল জ্বর, শোক-দুঃখ ভয় পাওয়া, মাথায় আঘাত লাগা, কোনো অ্যাক্সিডেন্ট আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকা প্রভৃতি কারণে রোগীর প্রলাপ বকা শুরু হয়।
কখনও আপনমনে বিড়-বিড় করে, কখনও জোরে জোরে আপন খেয়ালে বক-বক করে চলে, কখনও চিৎকার করে, কখনও বা আক্ষেপ দেখা দেয়।
মাথায় উক্ত উঠেও অনেক সময় এরকম হয়ে থাকে। সঠিক লক্ষণ দেখে রোগীকে ওষুধ দিলে সুফল পাওয়া যায়। এ ধরণের রোগীকে দিতে হবে সহজপ্রাচ্য খাদ্য।
কোনো উত্তেজক খাদ্য বা নেশা সেবন সম্পূর্ণভাবে বর্জন করতে হবে। রোগীর মন যাতে প্রফুল্ল থাকে তার ব্যবস্থা করা দরকার। নির্মল বাতাস রোগীর পক্ষে খুবই প্রয়োজন।
আবোল-তাবোল কথা বলা, মুখ-চোখ লাল বা দৃষ্টি একভাবে স্থির থাকা প্রভৃতি লক্ষণে- ওপিয়াম ৬।
হাসা, চিৎকার করা, সব সময় কথা বলা, শিস দেওয়া, গান গাওয়া প্রভৃতি লক্ষণে- স্ট্র্যামোনিয়াম ৬। ভীষণ রাগ, অন্ধকার ঘরে একা থাকতে ভয় প্রভৃতি লক্ষণে উপরের ওষুধটি ব্যবহার করা চলে।
বিড়-বিড় করে বকা, তন্দ্রা ভাব, মূর্ছা যাওয়া বা সংজ্ঞাহীন হওয়া, গুম হয়ে থাকা, দুর্বলতার জন্য সামান্য নড়াচড়ায় কষ্টবোধ, মুখমণ্ডল মলিন হওয়া প্রভৃতি লক্ষণে- হায়োসায়েমাস ৬।
বিকট হাসি, দাঁত কিড়মিড় করা, মাথায় রক্ত উঠা, সারা মুখ লাল হয়ে ওঠা, খিঁচুনি, চিৎকার, ভূত-প্রেত বা জন্তু দেখে ভয়ে লাফ দেবার ইচ্ছা প্রভৃতি লক্ষণে- বেলেডোনা ৬।
আরও পড়ুন: প্রস্রাব করতে গেলে জ্বালাপোড়া হয়? জেনে নিন ঘরোয়া সমাধান।
পরিশেষে বলা যায়, মানসিক রোগ সহজ রোগ নয়। একজন মানুষকে ভেতরে ভেতরে মেরে ফেলে। তাই পরিবারের কারো যদি উপরোক্ত লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হয় তবে অনুগ্রহ করে নিকটস্থ অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা করান।