খাবার খাওয়ার সময় নানা কারনে আমাদের গলায় মাছের কাটা বিধে যায়। এমন বাঙালি হয়তো খুঁজেই পাওয়া যাবে না যার মাছের কাটা বিধার ইতিহাস নাই। মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ার সময় ঠিক মতো মাছের কাটা বেছে না খেলে এমন সমস্যা হয়।
বড়দের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা যতোটা হয় তার চেয়ে বেশি হয় শিশুদের। তাই মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ার সময় বা শুধু মাছ খাওয়ানোর সময় সাবধানতার সাথে খাওয়াবেন। তবে মাছ ভেদে কাটার ধরণও আলাদা আলাদা হয়। কোন মাছে কাটা বেশি আবার কোন মাছে কাটা একেবারেই কম।
খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করে খেলেও এমন সমস্যা হয়। আর একবার যখন গলায় কাটা বিধে যায় তখন বড় ধরণের অস্বস্তি শুরু হয়। কেউ সহ্য করতে পারে আবার কেউ তো কান্না জুড়ে দেয়।
তো আজকে আমরা মূলত এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো অর্থাৎ গলায় মাছের কাটা যদি বিধে তবে কিভাবে তা সমাধান করবেন। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. কোক এর মাধ্যমে: গলা থেকে মাছের কাটা সড়ানোর এটা একটা আধুনিক পদ্ধতি। কোন কারনে গলায় যদি মাছের কাটা বিধেই যায় তাহলে কোক (পানীয়) খাওয়ার চেষ্টা করুন। এক নিঃশ্বাসে যতোটা সম্ভব কোক খেয়ে নিন। কাটা নরম হয়ে গলা থেকে নেমে যাবে।
২. অলিভ ওয়েল এর মাধ্যমে: আপনি জেনে অবাক হবেন যে, অলিভ ওয়েল এর মাধ্যমেও গলার কাটা নামানো সম্ভব। তেল হলো পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ। আপনার গলায় যখন কাটা বিধবে তখন আপনি ১ চামচ অলিভ ওয়েল খেয়ে নিন। কাটা পিছলে গিয়ে একসময় গলা থেকে নেমে যাবে। অলিভ ওয়েল সচরাচর অনেকেই খায়। স্বাস্থ্যের জন্য এই তেলের জুড়ি নেই।
৩. পাতি লেবুর মাধ্যমে: গলার কাটা নামানোর জন্য পাতি লেবুও ব্যবহার করা হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে মাছের কাটা নরম করে ফেলতে পারে পাতি লেবু। তাই গলায় কাটা বিধলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি পাতি লেবু সংগ্রহ করুন। তারপর লবণ দিয়ে মাখিয়ে পুরো রসটা খেয়ে নিন। অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার গলার কাটা নেমে যাবে ইনশাআল্লাহ।
৪. সাদা গরম/ঠান্ডা ভাতের মাধ্যমে: গ্রামাঞ্চলে এই নিয়মটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। খাওয়ার সময় কারও গলায় কাটা বিধলে তখন তাকে এক মুঠো গরম ভাত বল বানিয়ে গিলে ফেলতে বলা হয়। তখন ভাতের সাথে কাটাটি গলা থেকে নেমে যায়। তবে বল না বানিয়ে শুধু শুধু নরম ভাত খেলে আপনার কাটা গলা থেকে কিন্তু নামাতে পারবেন না। তাই শক্ত করে বল বানিয়ে খাবেন। সর্বোচ্চ তিন বা চার বার চেষ্টা করবেন। কাজ না হলে অন্য সমাধানে যেতে হবে।
৫. হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে: এবার চিকিৎসার কথায় আসি। যতগুলো চিকিৎসা পদ্ধতি পৃথিবীতে রয়েছে তন্মধ্যে হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে খুব সহজেই মাছের কাটা বের করে আনার চিকিৎসা করা যায়। আসলে মাছের কাটা বের হয়ে আসে না। সেটা নিমিষেই গলে যায়। তাই গলায় মাছের কাটা বিধলে সরাসরি একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের নিকট চলে আসুন। তারপর ঔষধ সেবন করুন এবং ১ ঘন্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠুন।
পরিশেষে বলা যায়, গলায় মাছের কাটা লাগা আসলে একটি বিরক্তিকর বিষয়। এরকম হলে তাড়াহুড়ো করবেন না। তবে শুরুতেই ৪ নম্বর পদ্ধতি অবলম্বন করবেন না হলে যদি পারেন সরাসরি ৫ নম্বর পদ্ধতিতে চলে যাবেন। আশা করি, আপনি খুব সহজেই গলায় মাছের কাটা লাগা থেকে মুক্তি পাবেন।