বিভিন্ন কারণে মহিলাদের হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে। অনেক মহিলাই প্রতিনিয়ত এ সমস্যায় ভুগে কিন্তু প্রকাশ করে না। শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের স্বল্পতা এক্ষেত্রে কিছুটা দায়ী।
আজ আমরা মূলত মহিলাদের হাঁটু ব্যথা কেন হয়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা কি এসব ব্যাপারে জানবো। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
বয়স চল্লিশের ঊর্ধ্বে হলে অনেকের বেশ হাঁটু ব্যথা করে। বিশেষ করে সকালে টয়লেটে বসলে অথবা হাঁটু ভেঙে নামাজ পড়লে।
এদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা, বিশেষ করে মাসিক বন্ধ হওয়ার পরপরই এদের হাঁটু ব্যথা শুরু হয়। এ সময় এদের হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এ সবের মূল কারণ হচ্ছে অস্টিওআর্থ্রাইটিস। এটি এক ধরনের বাত। আসলে আর্থ্রাইটিস হচ্ছে চলমান একটি রোগ যা মাঝে মাঝেই দেখা দেয়। রোগী যখন প্রথম প্রথম ব্যথা অনুভব করেন তখন হাঁটার সময় পায়ের মধ্যে ভরের ভারসাম্য এদিক-ওদিক করে ফেলে।
এতে করে হাঁটুর জয়েন্টের মধ্যে একটা পজিশনাল ফল্ট বা ‘অল্প ডিসপ্লেসমেন্ট’ দেখা দেয়। ফলে রোগী হাঁটু ভাঁজ করে বসতে পারে না, সিঁড়ি বা উঁচু নিচু উঠতে-বসতে কষ্ট হয়।
অনেক সময় হাঁটুতে কট কট শব্দ বা টান টান অনুভব হয়। কিন্তু এর জন্য দরকার সঠিক ‘ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা’, যা রোগীকে হাঁটু ভেঙে বসতে সাহায্য করবে।
কী কারণে হাঁটু ব্যথা হয়:
আর্থ্রাইটিসজনিত সমস্যায়, আঘাতজনিত সমস্যায়, স্পোর্টস ইনজুরি, যেমন- লিগামেন্ট বা টেনডন ইনজুরি, মিনিসকাস ইনজুরি, প্যাটেলা বা জেডিসপ্লেসমেন্ট ইত্যাদি।
অনেক সময় কোমরের নার্ভ বা স্নায়ুর কারণে হাঁটু ব্যথা হয়। টিউমারজনিত কারণেও এমন হতে পারে। এছাড়া ক্যানসারজনিত কারণেও হাঁটু ব্যথা হয়।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা:
ম্যানুয়াল থেরাপি যা রোগীকে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ভালো করে জয়েন্ট জোড়া সঠিক অবস্থানে নিয়ে আসে। একে বলা হয় মোবালাইজেশন উইথ অব মুভমেন্ট চিকিৎসা।
ম্যানুপুলেশন থেরাপি:
ডিপ ফ্রিকশন ও মায়োফেসিয়াল রিলিজ টেকনিক যা হাঁটুর ওপর ও নিচের মাংসপেশি ও লিগামেন্টকে নরম করে, ফলে হাঁটুর ব্যথা কমে জয়েন্ট পাতলা অনুভব হয়।
আইসোমেট্রিক বা স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ ও স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ যা হাঁটুর শক্তি ও রেনজ অব মুভমেন্ট বৃদ্ধি করে। ফলে হাঁটু ভেঙে টয়লেটে বসতেও নিচে বসে নামাজ পরতে পারে।
হাঁটু ব্যথায় আপনার করণীয়:
হাঁটুর তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তাহলে বরফ বা ঠাণ্ডা কোন কিছু দিয়ে সেঁক দেবেন আর হাঁটুর তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে গরম সেঁক দিবেন।
হাঁটু ফোলা থাকলে হাঁটা-হাঁটি কম করে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে উঁচু করে রাখুন, প্রয়োজনে নীক্যাপ ব্যবহার করুন।
পরিশেষে বলা যায়, হাঁটু ব্যথা হলে কখনোই সময় ক্ষেপণ করবেন না। শুরুতেই চিকিৎসা নিলে কষ্ট কম হয়। আর মনে রাখবেন, এটা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা। তাই ধৈর্য্য হারা হবেন না। মনে রাখবেন, চিকিৎসা নিলে এবং আনুষঙ্গিক নিয়ম-কানুন মেনে চললে একদম সুস্থ হওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: হিজামা চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সব ধরণের তথ্য ফাঁস করা হলো – একটিবার পড়ুন।