ভূমিকম্প সম্পর্কে কমবেশি আমাদের সবারই ধারণা আছে। ভূমি মানে মাটি এবং কম্প মানে কাঁপুনি বা কাঁপা বা কেঁপে উঠা। সুতরাং ভূমিকম্প মানে মাটি কেঁপে উঠা।
সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পে বিশ্ববাসী অবাক হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। কোন দেশগুলো ভূমিকম্পের আওতায় বেশি বা ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তা নিয়েও আলোচনা-গবেষণা চলছে।
বস্তুত পক্ষে, এসব আলোচনার মাধ্যমে কোন লাভ হবে না। কারণ, প্রাকৃতিক দূর্যোগ কখনো মানুষ ঠেকাতে পারে না। আর বর্তমান পৃথিবীর যে অবস্থা তাতে মানুষ যে কতোটা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করে তা গবেষণা ছাড়াই বোঝা যায়।
ভূমিকম্প হওয়ার সুনির্ধারিত কোন কারণ কখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। আর ভূমিকম্প হওয়ার ১ সেকেন্ড আগেও বোঝা সম্ভব নয় যে, ভূমিকম্প হতে যাচ্ছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। এখনো শত শত পরিবার খুঁজে পাওয়া যায়নি। দালানের নিচে তারা চাপা পড়েছে।
বিষয়টি পুরো পৃথিবীর মানুষকে অবাক করেছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মহান আল্লাহতায়ালা নিয়ন্ত্রণ করেন এই বিশ্বাসের আলোকে এখন নাস্তিক’রা ভেবে দেখতে পারে যে, আল্লাহ কতোটা শক্তিশালী।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছরই ভূমিকম্প হয়। কয়েক বছর আগে নেপালে ভূমিকম্প হয়ে গেলো। সেখানেও মাত্র কয়েক সেকেন্ড এটা হয়েছে, তাতেই সব শেষ।
ভূমিকম্প কেন হয়, এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে কোন লাভ নেই। কারণ, এগুলোর কোন সদুত্তর কেউ আসলে দিতে পারবে না। বিজ্ঞানীরাও নয়।
এখন যদি আমরা বাংলাদেশের কথা চিন্তা করি তাহলে বলতে পারি যে, বাংলাদেশে যদি সিরিয়া ও তুরস্কের মতো ভূমিকম্প হয় তাহলে এই দেশ লন্ডভন্ড হয়ে যাবে। মনে হয় ভন্ডদের অধিকাংশই মারা যাবে।
আসলে এখানে ভন্ডদের বিশেষভাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আসলে ভালো-মন্দ সবাই মারা যাবে। ঢাকা শহরের বাড়ি-ঘরগুলো খুব এলোমেলোভাবে গড়ে তোলা হয়েছে।
বিল্ডিং করার যে নিয়ম তা মানা হয়নি। খুঁজলে এমন বিল্ডিং অনেক পাওয়া যাবে যেখানে ভিত্তি দিয়েছে ৫ তলার কিন্তু বিল্ডিং করেছে ৮ তলার। তাহলে এমন বিল্ডিংগুলো ভূমিকম্প হলে ধ্বসে পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
এক বিল্ডিং থেকে আরেক বিল্ডিং এর যে দূরত্ব থাকা উচিত সেটিও মানা হয়নি। নিম্ন মানের ইট, বালি ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। দূর্নীতিতে যে দেশ চ্যাম্পিয়ন হয় সেই দেশে ভালো কিছু আশা করাটা বোকামি।
যাই হোক, তুরস্ক ও সিরিয়ায় যে ভূমিকম্প হয়েছে তাতে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ঢাকা শহর। আর বাংলাদেশের সব কিছুর মূলই এই ঢাকা শহর।
তাই, ঢাকাকে আধুনিকায়ন করা উচিত। নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের মানুষ যে একটু আশ্রয় নেবে আসলে সেটিও এখানে সম্ভব হবে না।
মহান আল্লাহতায়ালা চাইলে একটি জাতিকে মূহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিতে পারে। আর ধ্বংস করার জন্য কয়েক মাত্রার ভূমিকম্পই যথেষ্ট। তাই বিধাতার আদেশ নিষেধগুলো ঠিকভাবে আমাদের পালন করা উচিত।
ভালো মানুষ হওয়া উচিত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত। মানুষ যদি দিনের দিন শুধু খারাপই হয়ে যায়, চরিত্রকে নষ্ট করে ফেলে, আল্লাহর আদেশ নিষেধ না মানে তাহলে একসময় প্রকৃতির মাধ্যমেই আমরা শেষ হয়ে যাবো।
কিয়ামতের দিন কিন্তু আল্লাহ নিজে এসে পৃথিবীর সব মানুষকে মারবেন না। মারবেন ঐ প্রাকৃতিক দূর্যোগের মাধ্যমে। আশা করি, এ সম্পর্কে সবাই অবগত আছেন।
তাই, গবেষণা শুধু ভূমিকম্প আর পরিবেশ নিয়ে করলে হবে না, নিজের চরিত্র নিয়েও গবেষণা করতে হবে। ভালো মানুষ হয়ে তারপর ভালো পরিবেশে থাকতে হবে। আমার মনে হয়, তাহলে হয়তো দুনিয়াটা আরও কিছুদিন থাকবে।
আরও পড়ুন: চাল ও ডিম এর দাম আবারও বাজারে উর্ধ্বমুখী – সাধারণ মানুষ নির্বাক