ভায়াগ্রা মূলত এক প্রকার ওষুধ। এটি ধ্বজভঙ্গ রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভায়াগ্রা ওষুধটি আবিষ্কার করেছেন ফাইজার কোম্পানীর তিন জন বিজ্ঞানী। তারা এটি ১৯৯৮ সালে আবিষ্কার করেন।
ভায়াগ্রা মূলত বাণিজ্যিক নাম। আরো বিভিন্ন নামে বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। এর মূল উপাদানটির নাম হলো সিলডেনাফিল সাইট্রেট। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া আসলে এ ধরণের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
ভায়াগ্রার সমগোত্রীয় ওষুধগুলো হলো টাডালাফিল এবং ভারডানাফিল। অর্থাৎ এই ওষুধগুলোও সিলডেনাফিল এর মতো একই কাজ করে।
আজ আমরা জানবো এই ভায়াগ্রা ওষুধটি খেয়ে নিয়মিত যৌন মিলনে আপনার কোনো ক্ষতি হচ্ছে নাকি তা নিয়ে। বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি নিয়ম না মেনে এই ওষুধটি খেলে নানারকম জটিল সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
ভায়াগ্রা খেলে যেমন অভিজ্ঞতা হতে পারে:
১. ভায়াগ্রা খেলে আপনার ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাবে। যদি কারও আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে এ ওষুধ খাওয়া মোটেও উচিত নয়। এরপরেও যদি কেউ খায় তবে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। তা না হলে হীতে বিপরীত হতে পারে।
২. যখন আপনার প্রেসার বেড়ে যাবে তখন আপনার লিঙ্গ অটোম্যাটিক বেশ কিছু সময়ের জন্য শক্ত থাকবে। এটা হতে পারে যৌন মিলনের সময় ১ ঘন্টা এবং অন্যান্য সময়ে বিরতি দিয়ে দিয়ে ২ থেকে ৩ দিন। তবে এমন অবস্থায় আপনি যৌন মিলনে কোনো মজা পাবেন না।
আপনার সঙ্গীও কোনো আনন্দ পাবে না। কারণ, এটা যে ওষুধের ইফেক্ট এটা দুজনেই জানেন। মন থেকে আবেগ আসা আর ওষুধ খেয়ে আবেগ তৈরী করার মাঝে অনেক তফাৎ রয়েছে। কৃত্রিম আনন্দ কখনো আসল আনন্দের সমান হতে পারে না।
৩. যখন ভায়াগ্রা খাবেন বা সেবন করবেন তার আধা ঘন্টার মধ্যেই আপনার মধ্যে উত্তেজনা আসবে। তখনই আপনার সঙ্গীর কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু সম্মতি না থাকলে আপনাকে স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে। না পারবেন নিজেকে কন্ট্রোল করতে, না পারবেন বোঝাতে।
৪. মদ বা নেশাজাতীয় কিছু খেলে যেমনটা হয় আপনার শরীর ঠিক তেমন হবে। মাঝে মাঝে শরীর হ্যাং অভার হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে প্রচুর মাথা ব্যথা হতে পারে। ওষুধ খেয়ে এ ধরণের ব্যথা আপনি কমাতে পারবেন না। সাধারনত পরিমিত বিশ্রাম নিলে এ ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. সাধারনত দুই পা অবস হয়ে থাকবে। কারণ, ওষুধ খাওয়ার পরে আপনার পায়ে রক্ত প্রবাহের পরিমাণ কমে গিয়েছিল আর লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ সর্বাধিক ছিল। ওষুধ ছাড়া যৌন মিলন করলেও দেখবেন অনেক সময় পা সামান্য অবশ হয়ে যায়।
৬. আপনার যেকোন সময় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে। কারণ, অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহের কারণে আপনার উত্তেজনা অধিক থাকে। যৌন মিলনের সময় অতিরিক্ত লাফালাফি করলে চিরজীবনের জন্য ওপারে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৭. পরপর কয়েকদিন ওষুধ খাওয়ার পরে আপনার যৌন শক্তি আর আগের ন্যায় থাকবে না। তখন এই ওষুধ ছাড়া আপনার মধ্যে আর তেমন উত্তেজনাই আসবে না। সহজ কথায়, ওষুধ খাওয়া ছাড়া লিঙ্গ দাড়াবে না।
৮. হয়তো আপনি চির দিনের জন্য ধ্বজভঙ্গ হয়ে যেতে পারেন। এরকম বহু প্রমাণ আছে। সুতরাং সেক্স পাওয়ার কিছুটা কম থাকলেও ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
৯. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতি সম্প্রতি ভায়াগ্রা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন। যদিও এখনও দেশের বহু জায়গায় এর বাজারজাতকরন হচ্ছে। তবে মানব স্বাস্থ্যের জন্য এই ওষুধ চরম ক্ষতিকর।
১০. কেউ যদি নাইট্রেট জাতীয় ওষুধ সেবন করে তবে তার কোনভাবেই ভায়াগ্রা সেবন করা যাবে না। তা না হলে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, সবার যৌন শক্তি একরকম থাকে না। কারও একটু বেশি আবার কারও একটু কম। একজন ভালো সঙ্গী থাকলে যৌন শক্তি একটু কম থাকলেও কোনো সমস্যা নেই।
আবার, যৌন মিলনের পূর্বে যদি ঠিকভাবে উত্তেজিত করা যায় এবং নিজেও হওয়া যায় তবেও ভালো একটা সময় ধরে আনন্দ পাওয়া সম্ভব।
আর একান্তই যদি যৌন শক্তির বেশ কমতি থাকে এবং সংসার জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তবে ভালো একজন চিকিৎসক দেখানো উচিত। কাউকে না বলে চুরি করে কোনো ফার্মেসী বা রাস্তার পাশে হকারের কাছে থেকে আজেবাজে ওষুধ কিনে খেতে যাবেন না।
আরও পড়ুন: বীর্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা | আশা করি কাজে লাগবে।
সুন্দর একটা জীবন সবারই কাম্য। একদিনের একটু বেশি আনন্দ করতে গিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাওয়া মোটেও কাম্য নয়। তাই সবাই সাবধান হোন এবং ভায়াগ্রা সেবন বন্ধ করুন।