প্রিয়া রানী দাস যার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। খুব সম্প্রতি তাকে নিয়ে প্রথম আলোতে খবর ছাপানো হয়েছে। প্রচারণার অংশীদারিত্ব হিসেবে করতোয়াতেও প্রিয়া রানী দাসকে নিয়ে খবর ছাপানো হলো।
প্রিয়া রানী’রা মোট তিন ভাইবোন। বাবা খুব সামান্যই আয় করেন। তা দিয়ে সংসার কোন মতে চলে যায়। সেই জন্য এসএসসি পাশের পরপরই প্রিয়া রানী দাস টিউশনি করাতেন এবং নিজে সেই টাকা দিয়ে চলতেন। এবার তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি এখনও ভর্তি হতে পারেন নি।
প্রিয়ার বাড়ি হলো ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর নামক এলাকায়। তাদের একটি টিনশেড বাড়ি রয়েছে যেটা বর্তমানে জরাজীর্ণ। প্রিয়ার বাবার নাম হলো দিলীপ দাস এবং তিনি বর্তমানে তেমন কোনো আয় করেন না বললেই চলে।
প্রিয়া রানীর বাবা আগে সামান্য বেতনে পত্রিকায় কাজ করতেন এবং টিউশনি করাতেন। কিন্তু বর্তমানে সমগ্র পড়াশোনার সিস্টেম পাল্টে যাওয়ায় তার পক্ষে আর টিউশনি করানোও সম্ভব হচ্ছে না। আরেকটি বড় কারণ হলো, তিনি মোটামুটি বয়স্কও হয়ে গেছেন। মেয়ের স্বপ্ন পূরণে বাবা হয়ে কিছু করতে না পারাটা তাঁকে খুব কষ্ট দিচ্ছে।
মানুষের জীবনে অসহায়ত্ব বার বার আসে না। কিন্তু এমন কিছু সময় আসে যা কখনো ভোলা যায় না। হয়তো আজকের অসহায় প্রিয়া ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছুও হতে পারে – করতোয়া।
প্রিয়া বলেন, “ আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে ভর্তির টাকা জমা দিতে হবে। আমার পরিবারের পক্ষে এই টাকা জোগাড় করে দেওয়া সম্ভব নয়। টাকার অভাবে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবো কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।”
প্রিয়া রানী ২০১৯ সালে গৌরীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৩৯ এবং ২০২১ ইং সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
অন্যদিকে, গৌরীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিলটন ভট্টাচার্য বলেন, প্রিয়া এই কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। এখনও পর্যন্ত তার পরিবার প্রিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারেনি।
পরিশেষে বলা যায়, সমাজের বিত্তবান শ্রেণীর কোন মানুষ যদি প্রিয়াকে আর্থিকভাবে একটু সহযোগিতা করে তবেই প্রিয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব। প্রিয়া গরীব পরিবারের মেয়ে বলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্ভব হবে না এমনটা আমরা কেউ-ই আশা করি না। প্রিয়ার স্বপ্নপূরণ এবং তারপর তাঁর আনন্দ নিয়ে আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করার অপেক্ষায় রইলো করতোয়া।
আরও পড়ুন: তেঁতুলিয়ায় বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা – দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড
1 Comment
Priyar pashe keu darak ei kamonai korsi.