তরুণ ব্রঙ্কাইটিস (Acute Bronchitis):
ব্রঙ্কাইটিস রোগটির সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। ছোট বড় সবার এ রোগ হতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস হলে শ্বাসনালী সাধারণত আক্রান্ত হয়। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে সুস্থ্য হওয়া যায়।
আজ আমরা এ রোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় চলে যাই।
কারণ: শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব, পুনঃ পুনঃ সর্দির আক্রমণ প্রভৃতি থেকে শ্বাসনালী এবং তার অন্যান্য যন্ত্রসমূহে স্ট্রেপটোক্বাস নিউমোকক্বাস এবং স্ট্যাফাইলো কক্বাস বীজাণুর আক্রমণ ঘটে এবং এই রোগের সৃষ্টি হয়।
লক্ষণ: বুকে সর্দি জমা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, সাই সাই শব্দসহ ব্রঙ্কাসের প্রদাহ, হলদে শ্লেষ্মাস্রাব তৎসহ সামান্য জ্বরভাব এই রোগের লক্ষণ।
চিকিৎসা:
টেট্রাসাইক্লিন, অ্যাম্পিসিলিন, অ্যামক্সিসিলিন বা কো-ট্রাইমোক্সাজোল ব্যবহার করতে হবে। যেমন-
Tab Achromycin 250mg ১টি করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার অথবা,
Cap Roscillin 250mg ১টি করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার অথবা,
Cap Ampilin 250mg ১টি করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার অথবা,
Cap Novamox 250mg ১টি করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার অথবা,
Cap Wymox 250mg ১টি করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার অথবা,
Tab Bactrim DS ১টি করে দিনে ২ বার।
এছাড়া একটি ভালো কাশির ওষুধ দিতে হবে। যেমন- Phenesedyl Cough Linctus ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা,
Corex Expectorant ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা,
Mitslincus Codein Co ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা,
Alex Cough Formula ২ চামচ করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার।
শ্বাসকষ্ট অধিক বুঝলে Glaxo Salbutamol Inhaler or Beclate Inhaler শোঁকাতে হবে দিনে ৩ থেকে ৪ বার।
এতেও না কমলে Salbutamol ব্যবহার করতে হবে যেমন- Tab Asthalin 4mg ১টি করে দিনে ৩ বার অথবা,
Bronkotab 4mg ১টি করে দিনে ৩ বার অথবা,
Tab Salbetol 4mg ১টি করে দিনে ৩ বার অথবা,
Cap Ventorlin 4mg ১টি করে দিনে ৩ বার।
রোগের যাতে পুনরাক্রমণ না হয় তার জন্য যেকোন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন যুক্ত ওষুধ খেতে হবে।
যেমন- Tab Ostocalcium ১টি করে দিনে ২ বার অথবা,
Omilcal Suspension ২ চামচ করে দিনে ২ বার।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা:
গরম চা বা কফি ব্যবহার করলে শ্লেষ্মানির্গমণে সাহায্য করে। গরম পোশাক ব্যবহার, ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে গোসল বিধেয়।
দুধ, ঘি, সিদ্ধ মুরগির ডিম, ছানা এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার উপযোগী।
পুরাতন ব্রঙ্কাইটিস (Chronic Bronchitis):
কারণ: তরুণ শ্বাসনালীর প্রদাহ না নিরাময় হওয়া কিংবা পুণঃ আক্রমণ হতে হতে তা চিরস্থায়ী হলেই Chronic Bronchitis এ পরিণত হয়।
লক্ষণ: বুকে ব্যথা, শ্লেষ্মা জমে থাকা, দিনের মধ্যে নানান সময়ে শ্বাস-কষ্ট বৃদ্ধি পাওয়া, প্রচন্ড কাশি, দূর্বলতা, মনের অস্থিরতা এবং সব কিছুতেই বিরক্তিকর ভাব আসা সহ প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।
চিকিৎসা:
Doxycyclin Capsule যেমন Doxy-1 100mg অথবা Lydox 100mg প্রতি মাসের ১ম দিন হতে ৫ দিন পর্যন্ত ব্যবস্থা করতে হবে। Asmofylin Syrup প্রয়োজনবোধে ২ চামচ করে গরম পানি কিংবা চা বা দুধের সাথে খেতে হবে।
রোগ বৃদ্ধি পেলে Cap Roscillin 500mg ১টি করে দিনে ৩ বা ৪ বার অথবা Cap Erythrocin 500mg ১টি করে দিনে ৩ বা ৪ বার অথবা,
Cap Roxitem 150mg ১টি করে দিনে ২ বা ৩ বার অথবা Cap Subamycin 500mg ১টি করে দিনে ৩ বা ৪ বার।
এছাড়াও Corex Syrup ২ চামচ করে দিনে ৩ বার বা Phenesedyl Cough Lictus ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা Lirex Expectorant ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা Cosogen Expectorant ২ চামচ করে দিনে ৩ বার খেতে হবে।
শ্বাস-কষ্ট কমাবার জন্য Salbutamol এবং Theophylline মিশ্রিত ওষুধ কিংবা Terbutaline সহযোগে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
যেমন- Tab Theo Asthalin ১টি করে দিনে ৩ বার অথবা Tab Bronkoplus ১টি করে দিনে ৩ বার অথবা Tab Terbutalincipla or Tab Theo-PA 30mg ১টি করে দিনে ২ বার।
উপরোক্ত ওষুধে কোনো কাজ না হলে তাহলে নিম্নোক্ত ওষুধের ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন- Inj Roscillin 500mg ১টি ভায়াল সকালে এবং ১টি ভায়াল সন্ধ্যায় অথবা,
Inj Genticyn 80mg ১টি ভায়াল সকালে এবং ১টি ভায়াল সন্ধ্যায় প্রয়োগ করতে হবে অথবা Inj Terramycin ২ মিলি করে দিনে ২ বার।
আরও পড়ুন: বাত রোগ হলে কি করবেন জেনে নিন।
তাতেও কাজ না হলে, Tab Betnesol ১টি করে ৩ বার অথবা Tab Betnelan ১টি করে ৩ বার খেতে হবে। প্রতিষেধক হিসেবে Pulmocod (C & G) ২ চামচ করে দিনে ১ বার খাবার আগে খেতে হবে।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা:
ধুমপান এবং মাদক সেবন বন্ধ করতে হবে। ধোঁয়া এবং ধূলিধূসরিত এলাকায় বসবাস করা যাবে না। বেশিরভাগ সময়ই ঘি, মধু এবং প্রোটিন জাতীয় খাবারের প্রতি জোর দিতে হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ ব্রঙ্কাইটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
উৎস: ডাঃ সমরেশ পাল (আধুনিক অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা বা ইনজেকশন দেবার পদ্ধতিসহ নামক বই)।