পহেলা সেপ্টেম্বর বিএনপি-এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে সারা দেশে এক যোগে বিভিন্ন মিটিং ও সমাবেশের ডাক দেয় দলটি। কিন্তু সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সংঘর্ষে একজন যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন। এটা খুবই মর্মান্তিক। যাই হোক, করতোয়া আজ বিচ্ছিন্ন এই ঘটনাগুলো এক সাথে তুলে ধরবে। পুরো খবর পড়ুন – তাহলে অনেক কিছুই জানতে পারবেন।
সিরাজগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, যুবদল কর্মীর চোখে গুলি:
সিরাজগঞ্জ শহরে বিএনপি নেতাকর্মী ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশসহ বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের এস বি ফজলুল হক রোডস্থ নবদ্বীপ পুল এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী মিলনায়তন চত্বরে বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ চলছিল।
এ অবস্থায় জানতে পারি নবদ্বীপ পুল এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এমন সংবাদে সমাবেশস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের লাঠিচার্জ ও শর্টগানের গুলিতে অন্তত ১০-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রনি নামে এক যুবদলকর্মীর চোখে গুলি লেগেছে। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জসিম উদ্দিন জানান, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
সমাবেশস্থলে নিজেদের মধ্যে ঝামেলার কারণে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ অবস্থায় নবদ্বীপপুল এলাকায় নিজেরাই একটি ককটেল নিক্ষেপ করায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর তারা দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শর্টগানের গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।
সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ:
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার পর এ সংঘর্ষ হয়েছে।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ১১টার দিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে বিএনপি সম্প্রীতি সমাবেশ করে।
সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ধাওয়া, ইটপাটকেল, ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে।
পরে বিএনপির নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে এই সংঘর্ষ চলে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সমাবেশে আসার আগে তাঁদের ৫০ জনের বেশি নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
মতিঝিল জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আবদুল আহাদ বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আমরা বাধা দিইনি।
তাদের মিছিলের অনুমতি ছিল না। তবু তারা মিছিল করছিল।’ তিনি আরও বলেন, বিএনপিই পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ধাওয়া দেয়।
সমাবেশে এক হাজারের বেশি নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল ১০টা থেকে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল। দুপুর ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রামে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ:
চট্টগ্রামে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত কুড়িজন জখম হয়েছেন।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিকালে নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও নগর মহিলা দলের সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনিহসহ অন্তত ১৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। এসময় বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় পড়ে থাকা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল-সমাবেশের এই কর্মসূচি দিয়েছিল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। তাতে অংশ নিতে বেলা ৩টার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে মিছিল নিয়ে নাসিমন ভবনে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, কাজীর দেউড়িতে বিএনপি কার্যালয় নসিমন ভবনের সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়, তাদের ওপর হামলা করা হয় এবং রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অ্যাকশনে যায় এবং বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কাজীর দেউড়ির দিক থেকে একটি মিছিল দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের সময়ে পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়া হলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
এসময় বিএনপি কর্মীরা রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং একটি মোটর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
দাঁড় করিয়ে রাথা আরও কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। তাদের কারও কারও হাতে ধারালো অস্ত্রও দেখা যায়।
এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে বিএনপি কর্মীদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
ফেনীসহ দেশের আরও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ:
ফেনীর সোনাগাজীতে বিক্ষোভ সমাবেশে বাধার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটেছে।
এতে সহকারী পুলিশ সুপারসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। নোয়াখালীর সেনবাগে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের হামলায় পাঁচ নারী কর্মীসহ বিএনপির ৩০ জন আহত হন।
এ ছাড়া মাগুরার শ্রীপুরে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্য চারজন।
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি সারা দেশে কয়েকদিন ধরে এসব সমাবেশ করছে।
সোনাগাজীতে এএসপিসহ আহত ১০:
সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতা জানান, সোনাগাজী উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী সার্কেল) মাশকুর রহমানসহ পাঁচ পুলিশ ও বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ সময় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামাবাজার সড়কের ভৈরব রাস্তার মাথায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বেলা ৩টার দিকে সোনাগাজীর জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি।
সেখানে অবস্থান নিয়ে একই সময়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ।
এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জিরো পয়েন্ট ছেড়ে ওলামাবাজার সড়কের ভৈরব রাস্তার মাথায় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি।
জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভৈরব রাস্তার মাথায় জড়ো হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সেখানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা।
বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক থেকে সরে যেতে বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানায়। এ নিয়ে পুলিশের সাথে তাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
এর ফাঁকে সমাবেশের পেছন থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশের। হামলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।
সংঘর্ষ চলাকালে পাঁচ পুলিশ ও বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: খালেদ হোসেন বলেন, ‘টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
সেই সাথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাশকুর রহমান, থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম দোলনসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ ওসি আরো বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।’
তবে পুলিশের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকেলে জিরো পয়েন্টে কর্মসূচির আয়োজন করেছি আমরা।
কিন্তু সেখানে সভা শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে ভৈরব রাস্তার মাথায় সমাবেশ শুরু করি আমরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে সমাবেশে বাধা দেয়। সেই সাথে লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে সংঘর্ষ বাধে।
আমাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়ে এখন উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে পুলিশ।
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে আমরা বাধা দিইনি।
আমাদের পূর্ব ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা জিরো পয়েন্টে করেছি। পরে শুনেছি, ভৈরব রাস্তার মাথায় পুলিশের ওপর হামলা করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
নোয়াখালীতে নারী কর্মীসহ আহত ৩০:
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় বিএনপির পাঁচ নারী কর্মীসহ ৩০ জন আহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিএনপির সমাবেশে আসার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সেনবাগ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়ালিদ হোসেন আফনানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সেনবাগের গাজিরহাট মোড়ে বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসার পথে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালায়।
পরে বিকেলে গাজীরহাট মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওবায়দুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইকবাল মাস্টারের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আ: রহমান, অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন, কৃষকদলের জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রবিউল হাছান পলাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরায় হামলায় আহত ৫, মহড়া:
মাগুরা সংবাদদাতা জানান, মাগুরার শ্রীপুরে খামারপাড়া গোরস্থান মোড়ে শ্রীকোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদুর রহমানকে চাইনিজ কুড়াল এবং চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা।
এ ছাড়া দারিয়াপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক লিটন মোল্যা এবং গোয়ালপাড়া এলাকায় দুই বিএনপি কর্মীকে বেধড়ক পিটিয়ে তাদের বহনকারী নছিমনটি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
দলীয় কর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়ার পথে তারা এই হামলার শিকার হয়।
গুরুতর জখম অবস্থায় আজাদুর রহমানকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে সারা দিন ছিল টানটান উত্তেজনা। বেলা ১১টায় খামারপাড়া স্কুল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হলেও তার আগে থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার কর্মী উপজেলা সদরের বিভিন্ন প্রবেশমুখে সশস্ত্র অবস্থান নেন।
পাশাপাশি পুলিশের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিএনপি কর্মীরা নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করতে পারেননি।
তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি বদরুল আলম হিরো এবং সাধারণ সম্পাদক মুন্সি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীরা লাঠি নিয়ে খামারপাড়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে ফিরে যায়।
এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা ঢাল-সড়কিসহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহড়া দেয়।
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি বদরুল আলম হিরো বলেন, দু’দিন আগে থেকেই আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে।
তার পরও উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মীরা সমাবেশে জড়ো হতে গেলে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
তবে তাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়নুর রশিদ মুহিত। তিনি বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শ্রীপুরে আওয়ামী লীগের সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
অন্য দিকে খামারপাড়া এলাকায় বিএনপির সমাবেশ। তাদের মধ্যকার কোন্দলের জেরে কেউ আহত হতে পারে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, একজন বিএনপি কর্মী আহত হয়েছে বলে জেনেছি।
পরিশেষে মন্তব্য হিসেবে দেশের সাধারন জনগণের পক্ষ থেকে বলতে চাই, রাজনৈতিক কোন দলের সাথে দেশের নিরাপত্তা প্রদানকারী গোষ্ঠী তথা পুলিশের সংঘর্ষ কোন মতেই কাম্য নয়।
কিন্তু তারপরেও এরকম ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর ফলশ্রুতিতে কেবল শত্রুতা বাড়ছে এক রাজনৈতিক দলের সাথে আরেক রাজনৈতিক দলের। সাধারন জনগণ এমনটা কখনোই চায় না।
বর্তমান সরকারকে এ ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বিরোধী দল তাদের বিভিন্ন দিবস উপলক্ষ্যে সভা, সমাবেশ আয়োজন করতেই পারে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।
বিরোধী দলও যাতে সভা সমাবেশ করার নাম করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তবেই একটি দেশ সুখী এবং সমৃদ্ধশালী হবে।
উৎস: প্রধান প্রধান তথ্যগুলো বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা থেকে তুলে ধরা হয়েছে (সামান্য পরিমার্জিত)।
আরও পড়ুন: কাতিলা গাম-এর আশ্চর্য সব উপকারিতা।