কয়েকদিন আগেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলো। খুব জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা করা হয়েছে। বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হয়েছে। টিকটকার বায়োজিদ এ খবরে সংযুক্ত হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, উদ্বোধনের পরপরই কয়েকটি ঘটনা ঘটে যা মেনে নেয়ার মতো নয়। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো – নাট বল্টু খুলে ফেলা এবং সেটা নিয়ে ভিডিও তৈরী করে টিকটকে পোস্ট করা, পদ্মা সেতুর উপর প্রস্রাব করা ইত্যাদি।
উদ্বোধনের দিনই দুই মোটরসাইকেল আরোহী দূর্ঘটনায় মারা যায়। সব মিলে ঘটনাগুলো এলোমেলো পরিবেশের সৃষ্টি করে। যাই হোক, পদ্মা সেতুর নাট বল্টু খুলে যিনি টিকটকে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন তিনি হলেন বায়োজিদ।
বায়োজিদ ঢাকায় থাকতেন এবং বেসরকারি একটি কোম্পানীতে চাকরি করতেন। টিকটকে তার ভিডিও ভাইরাল হবার পরপরই পুলিশের নজরে আসে বিষয়টি। মানুষ বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য করতে থাকে।
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বায়োজিদকে দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর সোমবার (২৭ জুন, ২০২২) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিআইডির (সাইবার ইন্টিলিজেন্স ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলার কথা নয়। কোনো যন্ত্রাংশ ছাড়া শুধুমাত্র হাত দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা সম্ভব নয়। এটি একটি অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। পদ্মা সেতুর আরও যারা নাট-বল্টু খুলেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে দাঁড়ানো বা ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রথম দিনে শিথিলতার সুযোগে বায়োজিদ তালহা নামের এক যুবক অসৎ উদ্দেশ্যে খুলে নিয়েছেন পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু যা তার নিজস্ব টিকটক অ্যাকাউন্টে ভাইরাল হয়। আটক বায়োজিদ এর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত করবে সিআইডি।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বায়োজিদকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এর ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
টিকটকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে যে, পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের দুটি নাট খুলে, খোলা নাট হাতে নিয়ে বায়োজিদ বলেন- “এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে”। এ সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’
অন্যদিকে, পুলিশের রেজাউল মাসুদ আরও বলেন, ‘টিকটিকের ভিডিওটি আপলোড হওয়ার তা সিআইডির সাইবার পুলিশের মনিটরিং টিমের নজরে আসে। সিআইডি সাইবার মনিটরিং টিম দ্রুত যুবককে শনাক্ত করে। এরপর বিকেল ৪.০০ টায় রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।’
বিভিন্ন সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বায়োজিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে কিন্তু আমরা তার অপরাধটাকেই গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’
বায়োজিদ বর্তমানে রিমান্ডে আছে। যদি কোনো বাড়তি তথ্য থাকে হয়তো তা বের হয়ে আসবে। বায়োজিদ এর কাছে কেবল মোবাইল ফোন ছিল আর সেটাই জব্দ করা হয়েছে। নাট-বল্টু তার কাছে পাওয়া যায়নি।
সেতুর কত নম্বর পিলারের নাট-বল্টু খোলা হয়েছে তা জিজ্ঞেস করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এখনও তারা সেটা গিয়ে দেখেনি। হয়তো পরে জানানো যাবে। মামলাটি তদন্তের জন্য সময় রয়েছে। হয়তো এই সময়ের মধ্যে সব তথ্য বের হয়ে আসবে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া যেতে চাইলে অনলাইনে আবেদন করবেন যেভাবে।