কথাগুলো সত্যিই প্রিয় কথা। কিন্তু জীবনের জন্য চরম বাস্তব কথা। ফেইসবুকে আমি একজন মানুষকে ফলো করি যিনি একটি স্বনামধন্য ব্যাংকের ম্যানেজার।
উনি প্রতিদিনই ফেইসবুকে অসংখ্য আপডেট দেন। উনার সবগুলো কথাই আমার ভালো লাগে। সব কথাই প্রিয় মনে হয়। আজকের এই কথাগুলো অনেক বেশি ভালো লেগেছে বিধায় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দিলাম। আশা করি, ভালো লাগবে।
পিপাসায় কাতর কোন ব্যক্তিকে পুকুর থেকে তুলে এক গ্লাস পানি দিন। সেটা পান করেই সে তৃপ্তির হাসি দেবে। যার তৃষ্ণা নেই, তাকে সদ্য গাছ থেকে পাড়া এক গ্লাস ডাবের জল দিন। সে ওটা দিয়ে মুখ ধুয়ে বলবে- “ডাবের জল স্কিন ভালো রাখে!”
চাহিদা না থাকলে গোলাপেও বাজে গন্ধ মনে হয়। অমৃতও হয়ে যায় অখাদ্য। আর ভালোবাসা? ওটাও বালু-বালু লাগে।
সুতরাং, যোগান দেওয়ার আগে চাহিদার খোঁজ নিন। নয়তো পুরোটাই অপাত্রে যাবে। মনে রাখবেন, অপাত্রে দান করার চেয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া ভালো।
বৃষ্টি থেমে গেলে ছাতাটাকেও বোঝা মনে হয়, কালি ফুরিয়ে গেলে কলমটাও ডাস্টবিনে জমা হয়, বাসি হয়ে গেলে প্রিয়জনের দেয়া ফুলটাও পর দিন ডাস্টবিনে পাওয়া যায়, পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম সত্য হলো আপনার উপকারের কথা মানুষ বেশি দিন মনে রাখবে না।
জীবনের সবচেয়ে নিদারুন বাস্তবতা হলো কার কাছে আপনি কত দিন প্রায়োরটি পাবেন সেটা নির্ভর করবে কার জন্য কতদিন কিছু একটা করার সামর্থ আছে তার উপর। এই বাস্তবতা আপনি মানলেও সত্যি না মানলেও সত্যি।
আজ যে পত্রিকার দাম ১০ টাকা একদিন পরে সেই একই পত্রিকার ১ কেজির দাম ১০ টাকা। হাজার টাকা খরচ করে একাডেমির শুরুতে গুরুত্ব দিয়ে যে বইগুলো কিনেন বছরের শেষে সেই বইগুলোই কেজি মাপে বিক্রি করে দেন।
সময় ফুরিয়ে গেলে এভাবেই মুল্য কমতে থাকে সবার, সব কিছুর। আমরা আপাদমস্তক স্বার্থপর প্রাণী। ভিখারিকে ২ টাকা দেয়ার আগেও মানুষ চিন্তা করে কতটুকু পূর্ণ অর্জন হবে। বিনা স্বার্থে কেউ ভিক্ষুককেও ভিক্ষা দেয় না।
এতকিছুর পরেও চলুন একটু হেঁসে কথা বলি, রাগটাকে কমাই, অহংকারকে মাটি চাপা দিয়ে দেই। যদি সুখি হতে চান তবে প্রত্যাশা কমান।
আপনি কারো জন্য কিছু করে থাকলে সেটা চিরতরে ভুলে যান কারণ আপনি যতদিন সেটা মনে রাখবেন ততদিন সেটা আপনাকে অহংকারি করে তুলবে।
আবার কেউ যদি আপনার জন্য খুব ছোট কিছুও করে তবে সেটা আজীবন মনে রাখবেন কারণ এটা আপনাকে একজন বিনয়ী ও কৃতজ্ঞতা সম্পন্ন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে।
লেখক: মো. বাহার উদ্দিন (ম্যানেজার, জনতা ব্যাংক লি. সিলেট)
আরও পড়ুন: আমরা মানুষ’রা উন্নত হওয়ার সাথে সাথে অসভ্যও হয়ে যাচ্ছি – কেন ও কিভাবে?