মানব জীবনের জন্য দরকারি কিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। হোমিওপ্যাথি হলো একটি সর্বজনীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে রোগ লক্ষণের সাথে ঔষধের লক্ষণের সাদৃশ্য নির্ধারন করে ঔষধ নির্বাচন করতে হয়।
ঔষধ যত সাদৃশ্য হবে নিশ্চিত কার্যকরী ততো হবে। সাদৃশ্য নির্ধারণে বিশ্বখ্যাত হোমিওপ্যাথদের লেখা মেটারিয়া মেডিকা অধ্যায়ন করা জরুরী। তাই দ্রুত ও অতি সহজে ঔষধ নির্বাচন করার জন্য মেটেরিয়া মেডিকা হতে নিম্নে কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হল।
বাত রোগে:
বর্ষাকালে বা ঝড় বৃষ্টির পূর্বে শরীরে ছিড়িয়া ফেলার মত ব্যথা লক্ষণে রডোডেন্ড্রন-1M. ব্যথা এক গাঁট হতে অন্য গাঁটে সরে যায় এবং অবশেষে হৃদপিন্ড আক্রমন করা লক্ষণে অরাম মেট-২০০ প্রতি বসন্তকালে আক্রমন। এক অঙ্গ হতে অন্য অঙ্গে দ্রুত পরিবর্তন লক্ষণে ক্যালি বাইক্রোম-২০০
অজীর্ণ রোগে:
বুক জ্বালা, উপর পেটে খালি খালি বোধ, অত্যন্ত গা বমি বমি, মুখে থু থু উঠা লক্ষণে লোবেলিয়া-৩০, পাকস্থলীতে ব্যথা আরম্ভ হয়ে বুক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে গা বমি-বমি, কিছু খাইলে উপশম পেট্রোলিয়াম-২০০।
আহারের পরে পেট ফুলে উঠে ও উদ্গারসহ পচা গন্ধযুক্ত বায়ু নির্গত হয় এসিড স্যালিসিলিক-৬, আহারের পরই পেট জ্বালা, কিছুক্ষণ পরে গা-বমি বমি অবশেষে অজীর্ণভুক্ত পদার্থ বমন লক্ষণে ক্রিয়োজোট-২০০, পেটে ভয়ানক বায়ু জন্মাইয়া ফাঁপে, বায়ু নিঃসরণ হয় না লক্ষণে এসাফিটিডা-৩০।
উকুন হলে:
স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া Q (Mother Tincture) বাহ্য প্রয়োগে এবং ৩০ হইতে উচ্চক্রম শক্তিতে সেবন করলে ভালো কাজ করে।এছাড়া স্যাবাডিলা ঔষধটিও খুবই উপকারী। যদি শরীরের চর্মে উকুন থাকে তবে পিক্রোটক্সিন অব্যর্থ।
কানে খোল হলে:
যদি কালো খোল থাকে তবে ইলাপ্স কর-২০০, খুব বেশি খোল হলে কস্টিকাম-৩০, ২০০ আর যদি অতিরিক্ত খোলের কারণে কানে কম শুনে তবে কোনিয়াম-২০০।
স্নায়ুশুল রোগে:
মুখমন্ডলের ডান দিকে ব্যথা শুরু হয়ে ডান বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে তারপর অসাড় বোধ লক্ষণে ক্যালমিয়া ল্যাট-২০০। আক্রান্ত স্থান নড়লেই ব্যথার উৎপত্তি ও ভীষণ বৃদ্ধি, স্পর্শে বৃদ্ধি কিংবা ব্যথা কমে যাবার পর স্পর্শ করলে পুনরায় আরম্ভ হয় ও অসহ্য বোধ হয়, জোরে চাপ দিলে উপশম লক্ষণে চায়না-সিএম (CM)।
শ্বেত প্রদর রোগে:
কোমরে বেদনাসহ স্রাব, যোনিদ্বারে চুলকানি ও জ্বালাসহ হলদে ক্ষতকর স্রাব লক্ষণে ক্যালি কার্ব-২০০, কোষ্ঠবদ্ধতা ও যোনিতে স্পর্শ কাতরতাসহ কেবল ডিমের লালার মত স্রাব লক্ষণে প্লাটিনা-২০০।
ঋতুর ঠিক ১০ দিন পরে স্রাব, ঝাঁঝালো, রক্তমিশ্রিত বা দুধের মত সাদা ও প্রচুর লক্ষণে কোনিয়াম-২০০, ঝাঁঝালো ও জ্বালাকর স্রাব, যোনিদ্বারে চুলকানি ও ছনছনানি বোধ এবং রাত্রে বৃদ্ধি লক্ষণে মার্ক সল-৩x.
সায়েটিকা কটিস্নায়ু বাত রোগে:
সর্বদা সঙ্কোচন ও টানা ছেঁড়ার মত বেদনা, গরম সেঁকেও সামান্য বৃদ্ধি, জোরে মালিশে উপশম লক্ষণে প্লাম্বাম-২০০, চলাফেরায় উপশম, বসে থাকলে বৃদ্ধি, সর্বাঙ্গে অবশ ভাব, রাত্রে কোমরে ও উরুতে জ্বালা লক্ষনে ইউফর্বিনাম Q বা ৩x.
পরিশেষে বলা যায়, মানব জীবনের জন্য হোমিওপ্যাথি ঔষধ আশীর্বাদস্বরুপ। তবে লক্ষণ অনুযায়ী সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে যেকোন সমস্যায় একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করুন।
আরও পড়ুন: চুলকানি হলে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন