পুরুষ মানুষ অনেক গোপন রোগে ভুগে থাকে। সব পুরুষ তা প্রকাশও করে না। অর্শ, ভগন্দর, নালী ঘা সহ ইত্যাদি রোগে ভুগে থাকে।
আজ আমরা পুরুষ এর এসব রোগের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করবো। ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হবে কারণ ভেষজ চিকিৎসা তেমন ব্যয়বহুল নয়।
আশা করি, প্রতিটি তথ্যই পুরুষ মানুষের কাজে আসবে। শরীরে রোগ পুষে রাখা উচিত নয়। তাহলে ছোট রোগটিই একদিন অনেক বড় হয়ে যায়। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. অর্শ রোগ:
রোগের কারন: মলদ্বারের ভিতরে ও বাইরে শিরা স্ফীত ও বর্ধিত হয়ে মটরের মত বলি বের হয়। কখনো তা একটি থাকে। কখনও শাখা-প্রশাখা বের হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য যকৃতের দোষ, মাদক দ্রব্য সেবন, অতিরিক্ত মশলা যুক্ত খাবার খেলে এই রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ: রক্তশ্রাব হয়, মলদ্বারে জ্বালা হয়, কুটকুট করে।
রোগের চিকিৎসা: গাঁদাল পাতা, দুর্বার রস, কাঁচা হলুদের রস এবং হরতকি চূর্নের প্রত্যেকটির ৪ চামচ করে মিশিয়ে রোজ সকালে ও সন্ধ্যায় ২ বার করে ২ চামচ করে খান।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা: পেপে, ওল, আখ, ডুমুর, কচু, পুরনো চালের ভাত ও মাখন খাবেন। টক, ঝাল, মিষ্টি ও গুরুপাক কোন খাবার খাবেন না।
২. ভগন্দর রোগ:
রোগের লক্ষণ: ভগন্দর রোগটা ফোঁড়ার মত। প্রথমে মলদ্বারের চারপাশে ফুস্কুরির মত হয়। তারপর তা বেশ বড় হয়, ফোলে, কয়েকদিন পর তাতে পুঁজ জন্মায়, খুব যন্ত্রণা হয় কিন্তু পুঁজ বের হবার মুখ থাকে না।
রোগের চিকিৎসা: নিমপাতা সিদ্ধ জল দিয়ে ঐ যন্ত্রণার জায়গা ধুলে বেদনার উপশম হয়।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা: মাছ, মাংস, ডিম এবং সমস্ত প্ৰকার গুরুপাক আহার ত্যাগ করতে হবে। হালকা অথচ পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে।
৩. নালী ঘা রোগ:
রোগের কারণ: আঘাত লেগে বা ফোঁড়া হয়ে এই নালী ঘা হয়।
রোগের লক্ষণ: মাংসের ভিতর ক্ষত হয়ে গর্তের মত হয়।
রোগের চিকিৎসা: ৫/৬ দিন নিমপাতা সেদ্ধ জল দিয়ে নালী ঘায়ের ক্ষতে সেঁক দিন। যখন জায়গাটা সেঁক দিতে দিতে নরম তুলোর মত হবে তখন চেপে পুঁজ বের করে দিন।
তারপর নিমপাতার রস ৫০ গ্রাম, গন্ধক চূর্ণ ৫ গ্রাম, তুঁতে ৫ গ্রাম, মুদ্রাশঙ্খ ২ গ্রাম, আপং পাতার রস ৫০ গ্রাম, গাজা চূৰ্ণ ৫ গ্রাম এবং ১০০ গ্রাম নারকেল তেলে মিশিয়ে জ্বাল দিতে দিতে তা যখন ঘন মলমের হবে তা এ নালী ঘায়ের ক্ষতে নিয়মিত লাগাবেন।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা: লঘু ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন। মাছ, মাংস, ডিম, টক মশলা যুক্ত খাবার খাবেন না।
৪. হার্নিয়া রোগ:
রোগের কারণ: বার্ধক্যে শরীর শিথিল হলে, মল মূত্রের সময় বেশী কোথ দিলে, পেটে বেশী চাপ পড়লে , কোষ্ঠকাঠিন্য হলে, অধিক পরিশ্রম করলে ও ভারী জিনিস তুললে এই রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ: জ্বর, বমি, হেচকি ও পেট ফোলা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। এই রোগে পেটের নাড়ি, কুচকি এবং অন্ডকোষে টান পড়ে।
রোগের চিকিৎসা: রোগীকে কটি বন্ধনী ব্যবহার করতে হবে। আর রোগীকে চিৎ করে গুইয়ে পা দুটো উঁচু করে ধরে অন্ত্রকে নিজের জায়গায় ঢুকিয়ে দিয়ে ব্যথার জায়গায় গরম জলের সেঁক দিলেও উপকার হয়।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা: হালকা পুষ্টিযুক্ত খাবার খাবেন এবং রোজ মিছরির শরবত অবশ্যই খাবেন।
৫. একশিরা রোগ:
রোগের কারণ: অন্ডকোষে চাপ লেগে বা আঘাত লেগে সেখানে জল জমে যায়। অমাবশ্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে ঐ অন্ডকোষ বেশী ফুলে উঠে।
রোগের চিকিৎসা: এই রোগের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হল যোগ ব্যায়াম ও অপারেশান। তবে অবশ্যই ভালো কোনো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কাজটি করবেন।
পরিশেষে বলা যায়, রোগ পুরুষ মহিলা উভয়েরই হয়। তবে এই রোগগুলো মূলত পুরুষেরই হয়। রোগ হলে অবহেলা করতে নেই। অবহেলা করলে পরবর্তীতে পস্তাতে হবে।
আপনার জীবনটা কেবল আপনার। সুতরাং রোগ নিয়ে কোনো অবহেলা নয়। উপরের যেকোন রোগ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরাও সহযোগিতা করবো।
আরও পড়ুন: কোকা কোলা সম্পর্কে আজব কিছু তথ্য জেনে নিন।