ছেলের সামনে তার মা’কে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তারপর ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে।
ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের এক তরুণকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং তার মাকে বিবস্ত্র করে ছেলের সামনেই নির্যাতন করা হয়েছে। ভারতের মধ্য প্রদেশের সাগর নামক জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি থেকে জানা যায়, নিহত তরুণের বোন ২০১৯ সালে কয়েকজনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করেছিলেন।
অভিযুক্তরা তারপর থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ঐ পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে। বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণের হুমকিও দিয়ে আসছিল তারা।
সর্বশেষ গতকাল তারা ঐ তরুণীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলে এবং তার মা’কে বিবস্ত্র করে ফেলে।
সেখানকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জীব উইকে জানান, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নির্যাতিত তরুণী (১৮) বলেন, কিছু লোক মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদের উপর চাপ দিচ্ছিল। তারাই আমাদের ওপর এভাবে হামলা করে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে এবং আমার মায়ের মানহানি করেছে।
ওই তরুণীর মা জানান, তারা আমার ছেলেকে ব্যাপক মারধর করেছে। ছেলেটাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। আমি বাঁধা দিতে গেলে তারা আমার কাপড় খুলে ফেলে।
পরে পুলিশ এসে আমাকে একটি তোয়ালে দেয়। আমাকে শাড়ি না দেওয়া পর্যন্ত ঐ তোয়ালে জড়িয়েই আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম।
তরুণীর মা আরও বলেন, তারা আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। ঘরের কোন জিনিসই অক্ষত রাখেনি। এমনিক ঘরের ছাদ পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে তারা।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, নিহত তরুণের বোন ২০১৯ সালে চারজনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মারধরের মামলা করেন। মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন। সেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মোড় নিয়েছে। কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খার্গে বলেন, মধ্যপ্রদেশে দলিত ও উপজাতিরা বিরামহীনভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। বিজেপি মধ্যপ্রদেশকে দলিত অত্যাচারের পরীক্ষাগারে পরিণত করেছে।
রাজ্য কংগ্রেস প্রধান কমল নাথ নির্যাতিত তরুণীর পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা দাবি করেছেন এবং দাবি করেছেন যে অভিযুক্তদের বিজেপির সাথে সম্পর্ক রয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস অকারণেই এ ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে।
আরও পড়ুন: দূর্ঘটনা – দ্রুত গতির ট্রাক কেড়ে নিল সাত জনের প্রাণ