বিজলী আক্তার (২০) অন্তসত্ত্বা গৃহবধু ছিলেন। তিনি নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায় থাকতেন শশুর বাড়িতে। তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি চেয়ে মানব বন্ধন করেছে এলাকাবাসী। আজ শুক্রবার সকালে এই মানব বন্ধন করা হয়। নোয়াখালী জেলার বিরবিরি বাজারে এ মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই, ২০২২ খ্রি. তারিখে নিহত বিজলীর মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। বিজলীর শশুরবাড়ি ছিল জাহাজমারা একালার ৬ নং ওয়ার্ডে।
পুলিশ সেখান থেকেই তার লাশ উদ্ধার করে। বিজলীর স্বামীর নাম মোঃ মামুন এবং তিনি ঐ একই এলাকার মোঃ সোহরাব হোসেনের ছেলে।
মানব বন্ধনে বহু লোক অংশগ্রহণ করেছিল। বিজলীর সমস্ত আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও এলাবাসীর পক্ষ থেকে প্রায় ৫০০ জন মানুষ মানব বন্ধনে অংশগ্রহণ করেছিল।
যখন মানব বন্ধন চলছিল তখন সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত হাতিয়ার নলচিরা-জাহাজমারা প্রধান সড়কে আর কোন যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। কারন. পুরো রাস্তা ব্লক ছিল।
বিজলীর পিতার নাম হলো মোঃ আবুল কাশেম। তিনি জানান, মাত্র ১ বছর পূর্বে তার মেয়ের সাথে পাশের গ্রামের মামুনের বিয়ে হয়। সামাজিক সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে খুব সুন্দরভাবেই বিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বিয়ের পর শুরু থেকেই মামুন বিভিন্ন ভাবে যৌতুকের জন্য তার স্ত্রীর কাছে চাপ দিতো। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। এ ব্যাপারে একাধিক বার গ্রাম্য সালিশও করা হয়েছে।
বিজলীর বাবা বলেন, এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। বিজলীর স্বামীর পরিবার এটা পরিকল্পনা করেই এই হত্যা করেছে। নিহত বিজলী মাত্র ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা ছিলেন।
এ ব্যাপারে হাতিয়া থানা পরিদর্শক ( তদন্ত) কাঞ্চন কান্তি দাশ বলেন, বিজলীর মৃতদেহ তার শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। হাতিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে বলা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এটা আমাদের রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক। অনতিবিলম্বে সরকারের উচিত, এসব ব্যাপারে যে আইন রয়েছে তার কঠোর প্রয়োগ করা।
তাহলে মানুষ সচেতন হবে, আইনের প্রতি ভয় ও শ্রদ্ধা দুটোই বাড়বে। সমাজ থেকে এমন নিষ্ঠুরতা কমে আসবে। আসুন আমরা সবাই যৌতুক নিরসনে যেকোন ভাবে ভূমিকা রাখি।
আরও পড়ুন: কমলাপুর রেল স্টেশন এখনও উত্তাল – অবস্থান কর্মসূচি চলছেই।