নোকিয়া জি২১ মোবাইল ফোনটি প্রথম রিলিজ হয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৫ তারিখে। বিশ্বে একসময় নোকিয়া মানের দিক থেকে সর্বসেরা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে তাদের অবস্থান সেখানে নেই। তবে এই ফোনটির মাধ্যমে কিছুটা আস্থা হয়তো তারা ফিরিয়ে আনতে পারবে।
এই ফোনটি তিনটি কালারে পাওয় যাবে। সেগুলো হলো নরডিক ব্লু এবং ডাস্ক। এই কালারগুলো কেমন তা যদি জানতে চান তবে গুগলে সার্চ করুন।
দুঃখিত যে, এই ফোনটিতে ফাইভ জি নেই। কেবল সচরাচর যেসব নেটওয়ার্ক আমরা পাই টুজি, থ্রিজি, ফোরজি এগুলোই এই ফোনে আছে।
দুইটা সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে। তবে সেগুলো ডুয়েল ন্যানো সিম কার্ড। আপনি বড় আকারের সিম কার্ড নোকিয়া জি২১ এ ব্যবহার করতে পারবেন না।
ডব্লিউ ল্যান হিসেবে ফোনটিতে পাওয়া যাবে ডুয়েল ব্রান্ড, ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট এবং ওয়াই-ফাই হটস্পট। আর ব্লুটুথ হিসেবে উন্নতমানের ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে।
এছাড়াও উন্নতমানের জিপিএস ব্যবস্থা ফোনটিতে বিদ্যমান। সাধারনত বেশিরভাগ ফোনেই এ জিপিএস থাকে। কিন্তু এই ফোনটিতে সেটি ছাড়াও গ্লোনাস এবং গ্যালিলিও ব্যবহার করা হয়েছে।
এফএম রেডিও আছে সাথে আর সাথে আরডিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। হেডফোন লাগানো ছাড়াই আপনি এফএম রেডিতে গান শুনতে পারবেন।
ইউএসবি টাইপ টু ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। তবে মজার বিষয় হলো ইউএসবি টাইপ সি-ও ব্যবহার করতে পারবেন। সেই ফিচারটিও এই ফোনে রয়েছে।
বডির স্টাইলে মিনিমাল নচ ব্যবহার করা হয়েছে। বডির ম্যাটেরিয়াল হিসেবে গ্লাস ফ্রন্ট এবং প্লাস্টিক বডি ব্যবহার করা হয়েছে।
মোবাইলটি পানি পরিবাহী অর্থাৎ পানিতে পড়লে মোবাইলটি নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। মোবাইলটির ওজন ১৯০ গ্রাম হওয়ায় সহজেই নাড়াচাড়া করতে পারবেন।
ডিসপ্লে সাইজ হলো সাড়ে ছয় ইঞ্চি। এটা মুভি বা ড্রামা দেখার জন্য যথেষ্ট। রেজুলেশন হলো ৭২০x১৬০০ পিক্সেল অর্থাৎ ২৭০ পিপিআই।
ডিসপ্লেতে আইপিএস এলসিডি টাচ স্ক্রীন ব্যবহার করা হয়েছে। কেনার সময় তেমন কোনো প্রোটেকশন দেয়া থাকে না। আপনি যদি ফোনটি কিনেন তবে আপনাকে প্রোটেকশন ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
ফিচার হিসেবে মাল্টি টাচ রয়েছে। পেছনের ক্যামেরা ট্রিপল আকারের অর্থাৎ ৫০+২+২ মেগাপিক্সেল প্রকৃতির। এই ক্যামেরা দিয়ে ফুল এইচডি আকারে ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারবেন।
সামনের ক্যামেরা বা সেলফি ক্যামেরা হলো ৮ মেগাপিক্সেল এর। এই ক্যামেরা দিয়েও ফুল এইচডি আকারে যেকোন ভিডিও রেকডিং করা যাবে।
ব্যাটারী হলো নন-রিমোভাবল প্রকৃতির অর্থাৎ অ্যাডযাস্ট করা যা কখনোই খুলা যাবে না। ব্যাটারীর মিলি অ্যাম্পিয়ার হলো ৫০৫০। ফাস্ট চার্জিং ব্যবস্থা রয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড ১১ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। চিপসেট হলো ইউনিসোক টি৬০৬ (১২ ন্যানোমিটার) আকৃতির যা যথেষ্ট শক্তিশালী।
এবার বলবো খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার নিয়ে। আর সেটা হলো র্যাম। এই ফোনে ৪ জিবি র্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারন ব্যবহারকারীদের জন্য এটা আসলে যথেষ্ট।
প্রসেসর স্পীড হলো ১.৬ গিগাহার্জ। প্রসেসরের টাইপ হলো অক্টাকোর। জিপিইউ হলো মালি-জি৫৭ এমপি১। সব মিলে এটাও যথেষ্ট শক্তিশালী আকৃতির।
ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে রয়েছে ৬৪ জিবি। আলাদা ভাবে মেমোরী কার্ড ব্যবহার করার জন্য ডেডিকেটেড স্লট ব্যবহার করা যাবে যা নোকিয়া জি২১ এ দেওয়া আছে।
সিকিউরিটি হিসেবে ফিংগারপ্রিন্ট রয়েছে। আর এটি আছে মোবাইলের সাইডে। অর্থাৎ সাউন্ড বাড়ানো-কমানো ভলিউম যেখানে তার নিচে। এছাড়াও সেন্সর হিসেবে অ্যাক্সেলেরোমিটার এবং প্রক্সিমিটি ব্যবস্থা রয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, একসময়ের দুনিয়া কাঁপানো নোকিয়া এখন আর আগের মতো নেই। তবে তারা আগের অবস্থায় যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।
উপরে যে ফোনটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেটি মানের দিক থেকে যথেষ্ট কিন্তু দাম একটু বেশিই বলা চলে। এর বর্তমান দাম হলো ১৮,৯৯৯ টাকা অর্থাৎ ১৯০০০ হাজার টাকা।
তবে এটুকু গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়, ফোনটি মোটামুটি টেকসই হবে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন জায়গায় ফোনটির রেটিং দেয়া হয়েছে ১০ এর মধ্যে ৭.৫। রেটিং সাধারনত ব্যবহারকারীরাই দেয়। সুতরাং আপনি চাইলে নিশ্চিন্তে ফোনটি নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: মোবাইল ফোন – কম দামে কয়েকটি সেরা ফোন কিনুন।