নিমপাতা ও তুলসী পাতা আমাদের খুব পরিচিত দুটি গাছ। এগুলো আমাদের পরিবেশের আশপাশেই পাওয়া যায়। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিমপাতা এবং হিন্দুদের বাড়িতে (বেশিরভাগ) তুলসী পাতার গাছ পাওয়া যায়।
এসব গাছের রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। আমরা আজ সেসব বিষয়ে জানবো। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
নিমপাতা ও তুলসী পাতার উপকারিতা:
১. নিমপাতা:
১. প্রতিমাসে অন্তত একদিন নিমপাতা বেটে সমস্ত শরীরে মাখলে বিভিন্ন রোগ জীবানু প্রতিরোধ হয়।
২. ২০-২২টি নিমপাতা ও ২৫ গ্রাম কাঁচা হলুদ একসঙ্গে মিশিয়ে বেটে শরীরে মাখলে কোন চর্মরোগ হয় না। শরীর মোলায়েম ও উজ্জ্বল হয়। সপ্তাহে অন্তত একদিন মাখতে হবে।
৩. ১ চামচ নিমপাতার গুঁরো এবং এক চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে ক্রিমি রোগ এবং আমাশয় রোগ প্রতিরোধ করে।
৪. রোজ সকালে খালি পেটে ১ চামচ নিমপাতার রস এবং ১ চামচ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়, বায়ু পিত্ত এবং কফ নাশ করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।
২. তুলসীপাতা:
আয়ুর্বেদিক মতে তুলসীপাতা বিভিন্ন ব্যাধি ভালো করে। হার্টের অসুখ ইসকিমিয়ার চিকিৎসায় তুলসীপাতা ভালো কাজ দেয়। পাঁচ বছর ধরে তুলসী পাতা নিয়ে গবেষণা করেছেন ডাঃ পি.জি. কুরুপ। তুলসীপাতা সেবনে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। যখন ইচ্ছা যতগুলি ইচ্ছা কাঁচাপাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়।
তুলসী পাতায় চিকিৎসা: বনৌষধির মধ্যে তুলসী সর্বোৎকৃষ্ট বলে স্বীকার করা হয়েছে। মেটেরিয়ামেডিকাতে এই গাছকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে তুলসীর প্রয়োগ:
১. কার্তিক মাসে প্রতিদিন প্রাতঃকালে দু-তিনটি করে তুলসীপাতা খালিপেটে চিবিয়ে খেলে পুরো বছর কোন প্রকারের রোগ হবে না। কার্তিক মাসে আবহাওয়ায় তুলসী পাতার প্রয়োগ সর্বদা দেহকে নীরোগ রাখে।
২. তুলসীর গন্ধ রক্তবিকার নাশ করে।
৩. গোসল করার আগে তুলসীর কিছু পাতা পানিতে দিয়ে কিছুক্ষন বাদে সেই পানিতে গোসল করলে কোনও প্রকার চর্মরোগ হয় না।
৪. খাবার পানির পাত্রে তুলসী পাতা দিয়ে সেই পানি পান করলে উদর সংক্রান্ত কোনো রোগ হয় না।
৫. তুলসী মালা, কণ্ঠে ধারণ করলে শরীর সর্বদা স্ফূর্তিময় ও সুস্থ থাকে।
৬. তুলসী কামবাসনার উপর নিয়ন্ত্রন রাখে। কামশক্তিকে তো বৃদ্ধি করেই কিন্তু সেটা সাত্বিক এবং সীমিত রূপে।
৭. তুলসীপাতা চিবালে দাঁতে পোকা লাগে না। দাঁত মজবুত, উজ্জ্বল এবং দাঁতের আয়ু বৃদ্ধি হয়।
৮. তুলসীপাতার রস নিয়ে মালিশ করলে হাড় শক্ত হয়, দেহ ক্রান্তিময় হয়, দেহকে নিরোগ রাখে। সাবান, তেল, ক্রীম প্রভৃতির স্থলে তুলসীর রস প্রয়োগ করলে নানা প্রকার দৈহিক সুস্থতা লাভ হয়।
পরিশেষে বলা যায়, তুলসী পাতার আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। বাজারে বিভিন্ন বই পাওয়া যায় যেখানে খুব সুবিন্যস্তভাবে উপকারিতাগুলো সাজানো আছে। আমরা যদি নিয়মিত তুলসী পাতার রসকে কাজে লাগাই তাহলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাবো।
আরও পড়ুন: তুলসী পাতা সম্পর্কে কার্যকর তথ্যগুলো জানুন