নামাজ বা সালাত ইসলামের মূল ভিত্তিগুলোর একটি। নামাজ অবশ্য পড়তে হবে। এতে কোনো মাফ নেই। মহান আল্লাহতায়ালা কোরআনে অনেক বার নামাজের কথা বলেছেন।
নামাজ পড়ার সময় কিছু কাজ করা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। তা নাহলে নামাজ কাজা হয়ে যাবে অথবা মাখরুহ হবে। সহজভাবে বলা যায়, নামাজ শুদ্ধ হবে না। তো চলুন খুব সহজভাবে জেনে নিই নামাজ পড়ার সময় নিষিদ্ধ কাজগুলো সম্পর্কে।
নামাজ পড়ার সময় নিষিদ্ধ কাজসমূহ:
মহানবী সাঃ নিম্নোক্ত কাজগুলো করতে বারণ করছেন। নিম্নোক্ত কাজগুলো নামাজ বা সালাত আদায়ের সময় করা যাবে না। ক্রমানুসারে নিচে নামাজ পড়ার সময় নিষিদ্ধ কাজগুলো তুলে ধরা হলো:
১. দুই পা একত্রে মিলিয়ে দাঁড়ানো (তবে নারীগণ দাড়াতে পারবে)।
২. এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানো।
৩. নিতম্বের উপর বসে হাটুদ্বয় খাড়া করে দুই হাত যমীনে রাখা।
৪. চাদর বা অন্য কাপড় এমনভাবে জড়িয়ে নেয়া যে, হাত তার ভিতরে থাকে এমনকি রুকু সিজদার সময়ও তা বের হয় না বা বের করা সম্ভব হয় না।
৫. সিজদার সময় বস্র উঠানো।
৬. জামার উপর লুঙ্গি বা পায়জামা পরিধান করা (ইমাম আহমদের মতে)।
৭. কোমরে হাত রাখা।
৮. তাকবীরের সাথে তিলাওয়াত বা তসবীহ মিলিয়ে পড়া।
৯. ইমামের আগে বা সাথে মিলিয়ে তাকবীর বলা।
১০. প্রথম সালামের সাথে দ্বিতীয় সালাম মিলিয়ে বলা।
১১. প্রাকৃতিক প্রয়োজনের (প্রস্রাব বা পায়খানা) বেগ নিয়ে সালাত শুরু করা।
১২. খাদ্য বা পানীয়ের উপায় থাকা সত্ত্বেও অধিক ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিয়ে সালাত আদায় করা।
১৩. ক্ষুব্ধ বা ক্রুদ্ধ দিল বা মন নিয়ে সালাতে দাঁড়ানো।
অন্যদিকে, একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, সালাতের মধ্যে সাতটি কাজ শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। সেগুলো হলো:
১. নাক দিয়ে রক্ত আসা (অসুস্থ হলে ভিন্ন বিষয়)। বিনা কারণে এরূপ হলে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতে হবে অবশ্যই।
২. নিদ্রা বা ঘুম প্রচুর পরিমাণে আসা।
৩. মনে কুমন্ত্রণার উদয় হওয়া।
৪. বার বার হাই তোলা।
৫. শরীর ও মাথা চুলকানো।
৬. এদিক ওদিক দৃষ্টিপাত করা।
৭. কোন কিছু নিয়ে খেলা করা
উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক বিষয় রয়েছে। নামাজে দাড়ানো মানে হলো আপনি আল্লাহর সামনে দাড়িয়েছেন। তখন তাহলে আপনার মন কোনদিকে রাখা দরকার একবার ভাবুন।
আমরা সাধারণত যখন কোনো অফিসার এর সামনে যাই তখন নিজেকে কিভাবে রাখি, কতটা চুপচাপ থাকি এবং কতোটা শ্রদ্ধাভরে কথা বলি তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি পরিমাণে মনোযোগী হতে হবে নামাজে।
নামাজ নিয়ে অসংখ্য হাদিস রয়েছে। এখানে যে কয়টি কাজের কথা নিষেধ করা হয়েছে এর বাইরেও আসলে আরও অনেক কাজ রয়েছে। আপনি যখন বিষয়গুলো জানবেন ও বুঝবেন তখন আপনার মনে পরিবর্তন আসা শুরু করবে।
বিবেক দিয়ে যদি চিন্তা করেন তবে এই কাজগুলোও নামাজে দাড়িয়ে করা যাবে না। যেমন- হাসাহাসি করা যাবে না, জায়গা পরিবর্তন করা যাবে না, কাউকে ধাক্কা দেয়া যাবে না, নামাজের সময় ঘুমানো যাবে না ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: প্রবাস জীবন যে কতোটা কষ্টের তা এই গল্প থেকে জানা যায়।
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তার মধ্যে কোনো কলুষতা থাকে না। তিনি আল্লাহতায়ালার প্রিয় বান্দা হিসেবে অভিহিত হন। তিনি নামাজের মধ্যে এসব ভুল কখনোই করতে পারেন না।
নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিতে হবে। মনের মধ্যে কোনো দুনিয়াবী স্বপ্ন আনা যাবে না। দুনিয়াতে বেঁচে থাকার জন্য সৎ উপায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সৎ কর্ম করতে হবে। মহান আল্লাহতায়ালা কোরআনে বহু জায়গায় সৎ কর্মের কথা বলেছেন।