নামকরা ডাক্তার বলতে যুগের পর যুগ ধরে যেসব ডাক্তার হোমিওপ্যাথির জন্য তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন তাদের কথা বলা হয়েছে। হোমিওপ্যাথিতে যারা সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে মানুষের সেবা করে গেছেন তাদের কথা বলা হচ্ছে।
আজ এমন কিছু ডাক্তারের চিকিৎসা পরামর্শ আমরা তুলে ধরবো। এই তথ্যগুলো যারা নতুন পড়াশোনা করছেন তাদের কাজে লাগবে। আর যারা রোগী দেখছেন, চিকিৎসা করছেন তাদের আরও বেশি কাজে লাগবে। তো আর কথা নয় – মূল আলোচনায় যাচ্ছি।
নামকরা ডাক্তার জর্জ ভিথোলকাস:
১. আর্জেন্ট নাইট্রিকাম: আর্জেন্ট নাইট্রিকামের রোগীরা আবেগে পুরোপুরি সহজে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়। তাদের আবেগ অত্যন্ত শক্তিশালী, এমনকি উত্তেজনার ক্ষেত্রেও।
২. এলুমিনা: আংশিক অসাড়তা বা পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস এলুমিনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, যা প্রাথমিকভাবে পায়ের নলায় দেখা যায়।
৩. এলুমিনা: এলুমিনা দূর্বলতার চরম পর্যায়ে প্রয়োগ করা যায়।
৫. কষ্টিকাম: রাত হলে কথা বলার সময় তোতলামি দেখা দিলে কষ্টিকাম ২০০ শক্তি থেকে প্রয়োজনে উচ্চ শক্তি ব্যবস্থেয়।
৬. ক্যালক্যারিয়া কার্ব: ক্যালকেরিয়া কার্বের রোগ লক্ষণ পরিশ্রম করলে বাড়ে।
৭. ক্যালকেরিয়া ফস: ক্যালকেরিয়া ফসের রোগীদের সবসময় ধুমায়িত মাংস খাওয়ার প্রতি ইচ্ছে থাকে।
৮. ক্যানাবিস ইন্ডিকা: ক্যানাবিস ইন্ডিকা সম্ভবত সেসব রোগীদের জন্য উপকারী, যাদের তথাকথিত “মন্দ স্বভাব/খারাপ অভ্যাস আছে” যার আছে মানসিক ক্ষেত্রে স্থায়ী প্রভাব।
৯. গ্রাফাইটিস: গ্রাফাইটিসের রোগীরা এই বিষয়ে সচেতন হয় যে, তাদের মন ঠিকমতো কাজ করছে না। এই সচেতনতা এরপরে তাকে বিভিন্ন রকমের দুশ্চিন্তার দিকে নিয়ে যায়।
১০. ডালকামারা: ডালকামার অবস্থা অত্যন্ত ব্যক্তিকেন্দ্রিক। তার মনে প্রায় কখনই এটি দাগ কাটে না যে, অন্যদেরও পছন্দের অধিকার এবং স্বাধীনতা আছে।
ডা. জে. আন্ডারহিল:
১. নাক্স ভম: সবচেয়ে সুবিধা যেটা পাওয়া যায় সেটা হলো একটি রোগীকে নাক্স ভম দাও এবং তাকে তার জীবনের স্বাভাবিক এবং প্রাত্যহিক কাজগুলো করতে দাও, একটি নাক্স ভমের ক্ষেত্র তৈরী করার চেয়ে তা অনেক বেশি দায়িত্বপূর্ণ।
২. নাক্স মস্কেটা: নাক্স মস্কেটার আগে বা পরে লাইকোপোডিয়াম ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এরা পরস্পরের শত্রুভাবাপন্ন।
৩. নেট্রাম মিউর: সবিরাম জ্বরে বিলীন হয়ে জ্বরের আবেশের অনুকল্পে উৎপন্ন, ম্যালেরিয়াজনিত সমপর্যায় স্নায়ুশূল এবং মুখের মালিন্য নেট্রাম মিউর ওষুধের বিশেষ লক্ষণ।
৪. লাইকোপোডিয়াম: লাইকোপোডিয়ামের পূর্বে বা পরে কখনোই নাক্স মস্কেটা প্রয়োগ করা উচিত নয়, কারণ এরা প্রবলভাবে পরস্পরের শত্রুভাবাপন্ন ওষুধ।
ডা. ফারুখ জামশেদ মাস্টার:
১. এনাগেলিস: হাত এবং আঙুলের সন্ধিতে চুলকানি লক্ষণে এনাগেলিস মূলারিস্ট ভালো ফল দেয়।
২. এসাফোয়েটিডা: ক্রনিক প্যারোনাইচিয়া রোগে এসাফোয়েটিডা ৩০ শক্তি বেশ ভালো ফল দেয়।
৩. ককুলাস: চলাচলের সময় হাঁটু ভেঙে আসা লক্ষণে ককুলাস ২০০ শক্তি রোগীকে আরোগ্য প্রদান করবে।
৪. ক্যালক্যারিয়া পিক্রেটা: যৌবনকালে বালকদের মুখ ব্রণে ক্যালক্যারিয়া পিক্রেটা ভালো ফল দেয়।
৫. ক্যালি ফস: ক্যালি ফস কে নার্ভ টনিকও বলা হয়।
৬. ম্যাগ ফস: শিশুদের দাঁত উঠার সময় আক্ষেপ বা তড়কায় ম্যাগ ফস একটি চমৎকার ওষুধ।
৭. মেডোরিনাম: হাতে জ্বালাকর ভীষণ গরম লাগাসহ বেদনা থাকলে মেডোরিনাম ২০০ শক্তি আরোগ্য প্রদান করবে।
পরিশেষে বলা যায়, উপরে যেসব ডাক্তারের কথা বলা হয়েছে তারা এক সময়কার নামকরা ডাক্তার ছিলেন। তারা তাদের ব্যক্তি জীবনে যখন মানুষের চিকিৎসা করেছেন তখন অনেক অভিজ্ঞতাই অর্জন করেছেন।
এখানে মূলত তাদের অভিজ্ঞতারই অল্প কিছু অংশ তুলে ধরা হয়েছে। সামান্য লক্ষণ উল্লেখপূর্বক ওষুধের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়গুলোতে যখন বার বার উনারা সফল হয়েছেন তখনই তা লিপিবদ্ধ করেছেন।
উল্লেখিত এক একটি লক্ষণানুযায়ী ওষুধের কথা আসলে উনাদের বহুদিনের অভিজ্ঞতার ফসল। তাই এগুলোকে হেয় চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর কিছু কার্যকরী কৌশল জেনে নিন।
তবে অনুরোধ থাকবে যারা বর্তমানে ডাক্তার এবং প্রাকটিস করছেন তারা উপরের লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধগুলো প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু যারা সাধারণ পাঠক তারা কখনোই এভাবে ওষুধ সেবন করতে যাবেন না। কারণ, এক একটি লক্ষণের অনেক গভীরতা থাকে যা কেবল একজন ডাক্তারের পক্ষেই বোঝা সম্ভব।
তাই সাধারণ পাঠকগণ অনুগ্রহ করে যেকোন সমস্যায় নিকটস্থ অভিজ্ঞ কোনো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।