ধুমপানের ক্ষতি:
ধুমপান করা কোনো ভালো কাজ নয়। ধুমপান করলে কেবল আপনার ক্ষতিই হয়। হয়তো সাময়িক প্রশান্তি আপনি লাভ করেন কিন্তু বাস্তবিক দিক থেকে সেই প্রশান্তির কোনো মূল্যই নেই।
বর্তমানে পৃথিবীতে ফুসফুস ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি প্রধান কারণ আর নারীদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়।
যদি বাংলাদেশের কথা বলি, ফুসফুস ক্যান্সারের রোগী প্রায় ১৬ শতাংশ। হয়তো সংখ্যাটা সময়ের ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাবে আরো। ফুসফুস থেকে ক্যান্সারের যাত্রা শুরু হলেও তা শরীরের অন্যান্য অংশেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ধুমপান করলে যেসব ক্ষতি হতে পারে:
- ধুমপান করলে প্রথমত আপনার শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বেশিরভাগ ফুসফুস ক্যান্সার সাধারণত ধুমপানের কারণেই হয়।
- আপনার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। শরীরে বিভিন্ন ধরণের প্রদাহ ও জ্বালাপোড়া হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী রোগ শরীরে বাঁসা বাধতে পারে।
- ধুমপান করার ফলে শরীরের মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডে সমস্যা তৈরী হয়। এটা খুব ধীরে ধীরে হয় যার ফলে শুরুতে বোঝা যায় না।
- নারী হয়েও যারা ধুমপান করেন তাদের গর্ভপাত কিংবা অপরিণত বাচ্চার জন্ম হতে পারে। জন্মাবস্থায় বাচ্চা বিকলাঙ্গ হতে পারে।
- যারা অতিরিক্ত নেশা করেন তাদের চেহারায় মলিনতা চলে আসে। অল্প দিনেই চেহারার লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। বুড়ো হওয়ার অনেক আগেই শরীরে বুড়ো বয়সের ছাপ পড়ে যায়।
- চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।
- হার্টের করোনারী আর্টারীগুলো ব্লক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
- শুধু ফুসফুস নয়, ধুমপানের ফলে কণ্ঠনালী, মূত্রথলী এবং কিডনীতেও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- লিভারে থাকা পানির পরিমাণ কমে যায় অর্থাৎ লিভার শুকিয়ে যায়।
- ঘ্রাণ নেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। অর্থাৎ ঘ্রাণ শক্তি কমে যায়।
আরও পড়ুন: রোগ কি? হোমিওপ্যাথি অনুযায়ী বিবরণ।
- জানলে অবাক হবেন যে, ধুমপানের কারণে যৌন শক্তি কমে যায়। স্মৃতি শক্তি কমে যায়।
- ধুমপায়ী ব্যক্তি খুব সহজেই হৃদপিণ্ডের যেকোন অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন।
- আর্থাইটিস রোগ হতে পারে।
- আয়ুষ্কাল কমে যায়। কারও কারও অপমৃত্যু ঘটে।
- ধুমপায়ী মহিলাদের মেনোপজ সময়ের অন্তত ২ বছর আগেই ঘটে।
- ধুমপায়ী ব্যক্তি সমাজে ঘৃণিত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
- মাথায় টাক পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। চুল পড়ে যায়।
- চোখে ছানি পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- ধুমপায়ী ব্যক্তির ত্বক অনুজ্বল ও ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
- ধুমপানের কারণে শ্রবণ শক্তিও কমে যায়।
- ধুমপান আত্মহত্যার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। প্রতি বছর অনেক ধুমপায়ী ব্যক্তি আত্মহত্যা করে।
ধুমপান মানেই হলো বিষ পান। উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো একজন ধুমপায়ী ব্যক্তির জীবনে যেকোন মুহূর্তে আসতে পারে। চরম এই ক্ষতিগুলো ধুমপান করলে তাৎক্ষনিক যে হবে তা কিন্তু নয়।
সময়ের সাথে সাথে শরীরে উক্ত সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে পারে। কোন রোগই তাৎক্ষনিক হয় না। সুস্থ্য ও সুন্দর জীবনের জন্য ধুমপান কখনো কাম্য নয়।
ব্যক্তি জীবন ও সামাজিক জীবনের জন্য ধুমপান কেবল ক্ষতিই বয়ে আনে। অর্থের চরম অপচয় হয়। পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। একটি সুন্দর জীবনের জন্য, সুন্দর একটি পরিবারের জন্য ধুমপান আজই বর্জন করুন।