চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি লেভেল ক্রসিংয়ে একটি মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা লাগে। মাইক্রোবাসটিতে থাকা ১১ জন আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজার এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন বলেন, মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ মোট ১৬ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন মারা গেছে এবং বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মাইক্রোবাসে যারা ছিলেন তারা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই তারা দূর্ঘটনার স্বীকার হন।
সেদিন বেলা পৌনে দুইটার দিকে এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসন।
তিনি আরও জানান, দূর্ঘটনার সময় লেভেল ক্রসিং এ কোন গার্ড ছিলো কি-না তা নিশ্চিত নয়। তবে ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, জুমার নামাজের সময় সেখানে কর্তব্যরত গার্ডকে তারা দেখতে পাননি।
স্থানীয় বরাত দিয়ে আরও জানা যায়, মিরসরাইয়ে অনেকগুলো লেভেল ক্রসিং আছে এবং এগুলোর বেশিরভাগই উন্মুক্ত। সেগুলোতে শক্ত কোন গেইট নেই। ভয়াবহ এই দূর্ঘটনা যেখানে হয়েছে সেখানেও ছিলো না শক্ত কোনো গেইট। তবে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া ছিল।
তবে চার বছর আগেও এমন ধরণের দূর্ঘটনা সেখানে ঘটেছিল বলে জানা যায়। আর এখন যে দূর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটিও পূর্বের তুলনায় কম ভয়াবহ ছিলো না।
ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যায়। ১১ জনের কেউ-ই বাঁচতে পারেনি। আর সবমিলে এবারও গেইট ম্যানের অবহেলাকে প্রধান কারণগুলোর একটি হিসেবে দাবি করা হচ্ছে।
গত চার বছরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রেললাইনের উপর ট্রেনের সঙ্গে বিভিন্ন গাড়ির ধাক্কা লাগে। মোটামুটি তিনবার এ ধরণের দূর্ঘটনা ঘটেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঐসব দূর্ঘটনায় মোট ১৭ জন নিহত হয়। আর আহত হয়েছিল মোট ৩৩ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মর্মান্তিক ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও দায় এড়াতে পারে না। তবে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো, জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, লেভেল ক্রসিংয়ে যেসব দূর্ঘটনা ঘটে সেসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হয়। তদন্তে কারও অপরাধ প্রমানিত হলে তাকে বিভাগীয় শাস্তি দেয়া হয়।
বর্তমানে মিরসরাইয়ে বড়তকিয়া স্টেশন এলাকার দূর্ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কারও অপরাধ বা অবহেলা প্রমাণিত হলে বা অভিযোগ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: নোয়াখালী জেলায় অন্তসত্ত্বা গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ।