তেলাপোকা হলো মূলত এক প্রকার প্রাণী যা মানুষের ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্রের চিপায়-চাপায় থাকে। এটাকে আরশোলা নামেও ডাকা হয়। তেলাপোকার প্রায় ৪৬০০ প্রজাতি রয়েছে তারমধ্যে মানুষের ঘরবাড়িতে থাকে প্রায় ৩০টি প্রজাতি। এগুলোর মধ্যে চারটি প্রজাতিকে ক্ষতিকর হিসেবে ভাবা হয়।
তেলাপোকা নিয়ে আপনি যদি আরো নানারকম তথ্য-উপাত্ত জানতে চান তবে ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন। ইন্টারনেটে সার্চ করলে মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার তথ্য-উপাত্ত পেয়ে যাবেন।
যাই হোক, আজ আমরা আলোচনা করবো তেলাপোকা দূর করার কয়েকটি ঘরোয়া উপায় নিয়ে। কেননা, এই পোকা আমাদের তেমন কোনো কাজে আসে না।
তেলাপোকাকে মূলত ক্ষতিকর পোকা হিসেবেই ভাবা হয়। এরা খাবার নষ্ট করে, কাপড় কেটে ফেলে এবং নানা প্রকার রোগ জীবাণু ছড়ায়।
তাই আপনার বাসায়/বাড়িতে যদি তেলাপোকা থাকে তবে এখানে যে ঘরোয়া উপায়গুলোর কথা বলা হবে তা অনুসরণ করুন। তাহলে তেলাপোকার অস্তিত্ব আপনার বাসায়/বাড়িতে থাকবে না। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
তেলাপোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়:
১. বেকিং সোডা, বোরিক এসিড এবং চিনি পানির সাথে মিশ্রণ করুন। এমনভাবে মিশ্রণ তৈরী করুন যাতে একটি সমসত্ত মিশ্রণ হয়। এটা কিন্তু পেস্টের মতো হয়ে যাবে। বাড়ির যেখানে তেলাপোকার উপদ্রব বেশি সেখানে এই পেস্ট দিয়ে রাখুন। এটা যেহেতু মিষ্টি হবে (কারণ, চিনি দেয়া রয়েছে) তাই তেলাপোকা খাবে এবং মারা যাবে।
২. তেজপাতার ব্যবহার আমরা সবাই জানি। সাধারনত তরকারিতে ব্যবহার করা হয় মসলা হিসেবে। তবে আরশোলা দূর করার ক্ষেত্রেও এটার ব্যবহার লক্ষণীয়। তেলাপোকা তেজপাতার গন্ধ সহ্য করতে পারে না। তাই যেখানে তেলাপোকার উপদ্রব বেশি সেখানে তেজপাতা ফেলে রাখুন। তেলাপোকা দূর হবে অবশ্যই।
৩. সাবান পানির মিশ্রণের ব্যবহার। শুনতে অবাক হচ্ছেন যদিও তবে এটাই ঠিক। সাবান পানির মিশ্রণের সাহায্যেও তেলাপোকা দূর করা যায়। সাবান পানির মিশ্রণ তৈরী করে যেখানে তেলাপোকার উপদ্রব বেশি সেখানে স্প্রে করুন।
৪. তেলাপোকা দূর করতে বিভিন্ন প্রকার আঠা ব্যবহার করতে পারেন। যেখানে তেলাপোকার আনাগোনা বেশি সেখানটায় আঠা লাগিয়ে রাখুন। তেলাপোকা সেদিক দিয়ে চলাচলের সময় আঠায় আটকা পরবে এবং মারা যাবে।
৫. একটি বালতিতে ২/৩ লিটার পানি নিন। এবার সেখানে পেয়াজের রস এবং রসুনের রস মিশ্রণ করুন। গোলমরিচ দিতে ভুলবেন না যেন। এবার সেই পানি ঘরের সব জায়গায় ছিটান কিংবা স্প্রে করুন। আশা করি, তেলাপোকা কয়েকদিনের মধ্যে দূর হবে।
৬. অ্যালুমিনিয়ামের ক্যানে শসা রাখুন। এরপর এটি আরশোলা যেদিক দিয়ে বেশি চলাচল করে সেখানটায় রেখে দিন। শসার খোসা অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে দূর্গন্ধ সৃষ্টি করে। এতে তেলাপোকা মারা যায়।
৭. বাজারে নানা ধরণের পাউডার পাওয়া যায়। অনেক সময় সেগুলোও খুব ভালো কাজ করে। আপনি তা সংগ্রহ করে ঘরের মধ্যে প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। তবে ওসব পাউডার ব্যবহারের সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কারণ তাতে ক্ষতিকর উপাদান থাকতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, ঘরোয়া পদ্ধতি হিসেবে উপরে যেসব পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে সেগুলোই মূলত সহজ। এছাড়াও আরো কিছু পদ্ধতি রয়েছে। তবে ঘরবাড়ি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে ঘরবাড়ি রাখলে আরশোলা বা অন্যান্য ক্ষতিকর পোকা বাসা বাধতে পারে না। আর ঘরের আসবাবপত্রে তেলাপোকার আক্রমণ বেশি হলে প্রখর রোদে তা বাইরে বের করে শুকাতে হবে এবং প্রয়োজনে কেরোসিন তেল ঢেলে পরিষ্কার করতে হবে। গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেও খুব কাজে দেয়।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ তথ্য জানুন।