ঢাকা শহর জ্যামের শহর হিসেবেই পরিচিত। বহুকাল আগে থেকেই ঢাকা শহরের এই বিষয়টি সম্পর্কে সবাই অবগত। এটা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ভৌগোলিকভাবে যদি বলা হয় তবে এটি বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত।
ভারতের মুম্বাই শহরের পরেই অর্থনীতির দিক থেকে বৃহত্তম শহর এটি। ২০২০ সালের হিসেব অনুযায়ী ঢাকা শহরের জিডিপি হলো ১৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যাই হোক, এবারের ঈদে ঢাকা শহর থেকে প্রায় ১ কোটি মানুষ নাড়ীর টানে গ্রামের দিকে যাচ্ছে। এরকম অবস্থা আসলে ইতিপূর্বে হয়েছে কিনা সন্দেহ।
বিগত দুই বছর থেকে করোনার প্রভাবে মানুষ গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেনি। এই জ্যামের শহরেই ঈদ করেছে। আনন্দ আর উল্লাস করা হয়নি। কিন্তু দুই বছর পরে করোনার প্রভাব বেশ কমে যাওয়াতে মানুষ এবার দেশের বাড়িতে যাচ্ছে।
তাছাড়া বিভিন্ন কল-কারখানা থেকেও বেশ কয়েকদিনের ছুটি দেয়া হয়েছে। গার্মেন্টসগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ তারিখ থেকেই কিছু কিছু কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর সে কারণে ২৮ তারিখ সন্ধ্যা থেকেই অনেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
তবে অনেকেই মনে সংশয় ও ভয় নিয়ে রওনা দিয়েছেন। কারও কারও কোলে ছোট বাচ্চা রয়েছে। কারও বৃদ্ধ আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন। যদি জ্যামের শহরের জ্যামে আটকে যান তবে না জানি কত ঘন্টা লাগে সেই জ্যাম ছাড়তে?
তবে ঢাকা শহর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তন্মধ্যে বাস, ট্রেন, লঞ্চ এবং আকাশ পথ অন্যতম। সব পথেই সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রী এবার চলাচল করবে।
আর তাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই শিরোনামে খবরও বের হয়েছে যে, ঢাকা শহরের জ্যাম এবার কমে যাবে। তবে এটা মাত্র কয়েকদিনের জন্য। মে মাসের ৫ তারিখ হতেই অনেকেই আবার জ্যামের শহরে ফিরতে শুরু করবে।
অন্যদিকে, এবারের ঈদ কে কেন্দ্র করে বড় ধরণের জ্যামের স্বীকার হতে পারে ঢাকা শহর এই শিরোনামে বেশ সোচ্চার হয়েছিল গণমাধ্যম। বলা হয়েছিল যে, এ মাসের ২৫ তারিখ থেকে ঢাকা শহর অচল হয়ে যাবে।
কিন্তু সেই কথার সত্যতা মেলেনি। ২৫ তারিখের পরেও ঢাকা শহর স্বাভাবিক ছিল এবং এই লেখা প্রকাশ করার সময় পর্যন্ত তেমন কোনো যানজট দেখা যায়নি।
মানুষ নির্বিঘ্নে এবার নিজ গ্রামের বাড়িতে যেতে পারছে। তেমন কোনো দূর্ঘটনার খবরও আমাদের নজরে আসেনি। সব মিলে জ্যামের শহর ঢাকা খুব স্বাভাবিকভাবেই জ্যাম থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
আমরা সকলেই জানি, যানজট শুধু ঢাকা শহর নয় – গোটা জাতির জন্যই এক বিড়ম্বনার নাম। বিশ্বের মধ্যে যতোগুলো মেগাসিটি রয়েছে তন্মধ্যে ঢাকা শহরের নাম বেশ জোরালোভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
প্রায় সোয়া কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ঢাকা মহানগরীর জ্যামের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কয়েকদিনের জন্য ঢাকাবাসী মুক্ত বাতাস এবং মুক্তভাবে চলাচল করতে পারবে।
যেখানে ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে ২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যায় সেখানে এই কয়েকদিন মানুষ উপভোগ করবে দারুন কিছু। অর্থাৎ ১০ মিনিটের রাস্তা ১০ মিনিট কিংবা তার কমেই যেতে পারবে।
সব মিলিয়ে ঢাকা বাসীর জন্য এটিও একটি ঈদ আনন্দের অংশ। তবে ঈদ এর কয়েকটা দিন ঢাকা ফাঁকা হয়ে থাকবে এটা কোনো সমাধান নয়। সরকারের উচিত এ ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
আরও পড়ুন: সাধারন মানুষ যা করলে দুবেলা একটু খেয়ে বাঁচতে পারবে।
তাহলে ঢাকা বাসী ও দেশের বাইরে থেকে যারা এসে এখানে কাজ করছে তারা একটু ভালোভাবে ও সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। সবার ঈদ হোক আনন্দময় এবং দেশবাসীর জন্য শুভকামনা রইলো।