ডা. হিউজ একজন স্বনামধন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ছিলেন। তিনি ব্যক্তিজীবনে সবসময় হোমিওপ্যাথির উন্নতি সাধনে অনেক কাজ করেছেন।
আজ আমরা জানবো ডা. হিউজ এর জীবনের সেরা কিছু অভিজ্ঞতা অর্থাৎ চিকিৎসা সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা।
ডা. হিউজ কোন রোগের চিকিৎসায় কোন ওষুধ প্রয়োগ করে সফল হয়েছেন তা আমরা জানতে পারবো। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
ডা. হিউজ এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:
আর্সেনিক এল্ব: তাণ্ডব (কোরিয়া) রোগে আর্সেনিক এল্ব অতিশয় শ্রেষ্ঠ ওষুধ। রোগের কারণ নিরুপণ করতে না পারলে আর্সেনিক এল্ব ব্যবস্থেয়।
আর্সেনিক এল্ব: প্রকৃত বহুব্যাপী প্রতিশ্যার (ইনফ্লুয়েঞ্জা) রোগেও আর্সেনিক এল্ব ফলপ্রদ।
আর্সেনিক এল্ব: দূর্বল ব্যক্তিদের পর্যায়শীল, স্নায়বিক শ্বাসেই আর্সেনিক এল্ব বিশেষ উপকারী।
আর্সেনিক এল্ব: ক্রমশ বর্ধনশীল, অনিষ্টকর, স্বয়ম্ভূত এনিমিয়া রোগেও আর্সেনিক এল্ব প্রধান ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ইউপেটোরিয়াম পার্ফ: স্ত্রীলোকদের মূত্রাশয়ের উপদাহিতায় আমি ইউপেটোরিয়াম পার্ফ বিশেষরূপে ব্যবহার করি।
এনিমিয়া: ভুক্তদ্রব্যে লোহার পরিমাণ কম থাকলে সাধারণত এনিমিয়া বা রক্তাল্পতা সৃষ্টি হয়না। কিন্তু আত্তীকরণ বা সমীভবন প্রক্রিয়ার দোষে রক্তে লোহার অল্পতা ঘটে।
এন্টিম টার্ট: আমি বসন্ত রোগে এন্টিম টার্টের প্রথম ক্রমের বিচূর্ণ ভিন্ন কদাচিৎ অন্য ওষুধ ব্যবহার করি। জলবসন্তেও এটি ব্যবহার করা যায়।
এপিস মেল: পূর্ণ মাত্রায় এপিস মেল মূত্রকর, অতএব এতদ্বারা মূত্রপিণ্ড বা মাস্তক ঝিল্লির সাথে অসংসৃষ্ট যথা- হৃৎপৈণ্ডিক ও ডিম্বাশয়িক শোথেও উপকার পাওয়া যায়।
এপিস মেল: আভিঘাতিক বিসর্প রোগে এপিস মেল বিশেষ ফলপ্রদ।
এসাফোয়েটিডা: আমি পুরাতন অস্থিক্ষতে এসাফোয়েটিডা প্রয়োগ করে কোনো ফল পাইনি।
কলোসিন্থ: শূল রোগে কলোসিন্থ ছাড়া বড় অন্য কোনো ওষুধ ব্যবহারের আবশ্যকতা নেই।
কলোসিন্থ: কেবল সরলান্ত্রের বিকার সম্ভূত রক্তাতিসারে অতিশয় উদরবেদনা ও রক্তস্রাবের প্রাধান্য লক্ষণেই কলোসিন্থ ব্যবস্থেয়।
ক্যালি বাইক্রম: নাসারন্ধ্রে কৃত্রিম ঝিল্লি সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে ক্যালি বাইক্রম ওষুধের বিলক্ষণ উপকারিতা রয়েছে।
ক্যালি ব্রোম: জীবন বা জ্ঞান নাশের আশঙ্কা উপস্থিত না হলে অপস্মারে বা অন্যান্য আক্ষেপ রোগে ক্যালি ব্রোম প্রয়োগ করা উচিত নয়।
ক্যালি ব্রোম: ক্যালি ব্রোমের অধিক মাত্রার কারণে নানা ধরণের উপদ্রব উপস্থিত হয়।
কিউরেয়ার: অতিরিক্ত স্তন্যদান বা অবসাদকর রোগজনিত স্নায়বিক দৌর্বল্যে কিউরেয়ার সমধিক উপযোগী।
কোপেইভা: বৃদ্ধ স্ত্রীলোকদের মূত্র-মার্গ ও মূত্রাশয় গ্রীবার উপদাহ ও সেই কারণে স্রাব নিঃসরণে কোপেইভা বিশেষ উপযোগী।
কোরালিয়াম রুব্রাম: গুল্ম বায়ুজনিত কাশি ও অন্যান্য আক্ষেপিক কাশিতে কোরালিয়াম রুব্রাম অত্যন্ত কার্যকর।
গ্রাফাইটিস: সম্ভবত আর্সেনিকের মতো গ্রাফাইটিসের ত্বকের পরিপোষণ ক্রিয়ার উপর প্রভাব রয়েছে আর তাই গ্রাফাইটিসের দ্বারা চর্মরোগের আরোগ্য হয়।
চিনিমাম সালফ: রক্তসঞ্চয়জনিত পুরানো শিরঃপীড়ায় চিনিমাম সালফ ব্যবহার করা যেতে পারে।
চেলিডোনিয়াম মেজাস: সামান্য পাণ্ডুরোগে আমি প্রথমেই চেলিডোনিয়াম মেজাস ব্যবহার করে থাকি।
জেলসিমিয়াম: শিশুদের স্বল্প বিরাম জ্বর জেলসিমিয়াম দিয়ে হীনবল হয়ে থাকে।
নেট্রাম মিউর: আমি সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠার পর অতিশয় শিরঃপীড়া, রুটিতে অরুচি, লবণে অতিশয় প্রবৃত্তি, মলদ্বারের সংকোচন এবং ঋতুকালে বিমর্ষতাসম্পন্ন একজন রোগিনীকে ক্রিংশ ক্রমের নেট্রাম মিউর ওষুধ সেবন করিয়ে আরোগ্য করেছি।
নেট্রাম মিউর: পুরানো বিষমজ্বরে কঠিন মলবিশিষ্ট পুরাতন কোষ্ঠবদ্ধযুক্ত ধাতু বিকৃতির লক্ষণ প্রকাশ পেলেই নেট্রাম মিউর বিশেষ উপযোগী।
বেলেডোনা: পুঁজ উৎপত্তি হবার পূর্বে প্রদাহিক অবস্থায় পুনঃ পুনঃ বেলেডোনা সেবন করলে স্ফোটক বিলীন হয়।
ব্রায়োনিয়া: ক্রুপস নিউমোনিয়া ও প্লুরোনিউমোনিয়াতে ব্রায়োনিয়া বিশেষ উপযোগী। দশমিক প্রথম ক্রমে এই ওষুধ প্রয়োগ করলে প্রথমাবস্থাতেই রোগ ভালো হয়।
ব্রোমিয়াম: স্বরযন্ত্র ও কণ্ঠনালীসম্ভূত কাশি, স্বরভঙ্গ এবং বক্ষাস্থির নিচে বেদনা ও জ্বালা লক্ষণে ব্রোমিয়াম বিশেষ ফলপ্রদ।
মিলিফোলিয়াম: নাক থেকে বার বার রক্তস্রাবে ও রক্তকাশে মিলিফোলিয়াম ওষুধে বিলক্ষণ উপকার পাওয়া যায়।
সিস্টাস ক্যান: গলগ্রন্থির গণ্ডমালাজনিত স্ফীততায় গলকোষের লক্ষণে সিস্টাস ক্যান উপযোগী।
হেলোনিয়াস ডাইওইকা: আমি একজন ক্লোরোসিস রোগের রোগীকে হেলোনিয়াস ডাইওইকা ব্যবহার করে সত্বর আরোগ্য করেছিলাম।
পরিশেষে বলা যায়, ডা. হিউজ আজীবন হোমিওপ্যাথির উপর নির্ভর করেই চিকিৎসা করেছেন। আপনারা যারা বর্তমানে চিকিৎসক তারা ডা. হিউজ এর উপরের অভিজ্ঞতাগুলো প্রয়োগ করতে পারেন। আর যারা ছাত্রছাত্রী আছেন তাদেরও অনেক কাজে লাগবে এই তথ্যগুলো।
তবে যারা সাধারন পাঠক তাদের কাছে অনুরোধ, শুধুমাত্র একটি লক্ষণের উপর ভিত্তি করে এগুলো প্রয়োগ করতে যাবেন না। তাহলে ক্ষতি হতে পারে। যেকোন সমস্যায় অবশ্যই আপনার নিকটস্থ অভিজ্ঞ কোনো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন: যৌনশক্তি ফিরিয়ে আনতে হলে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাই যথেষ্ট।