ডা. ই.সি এলেন একজন স্বনামধন্য হোমিওপ্যাথি ডাক্তার ছিলেন। তিনি গভীর মনোযোগী হয়ে মানুষকে চিকিৎসা দিতেন।
হোমিওপ্যাথির সুক্ষ নিয়ম তিনি সঠিকভাবে প্রয়োগ করতেন। ডা. ই.সি এলেন কখনো হোমিওপ্যাথির বিরুদ্ধাচরণ করেননি।
ডা. ই.সি এলেন সম্পর্কে আজ আমরা জানবো। অর্থাৎ তিনি মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে কখনোই ব্যর্থ হননি বরং সমসময় জয়ী হয়েছেন।
তার অল্প কিছু চিকিৎসা বিষয়ক সফলতার কথা জানবো। তো আর কথা নয় – এবার চলুন জেনে নিই ডা. ই.সি এলেন এর হোমিও চিকিৎসা বিষয়ক মর্মবানী।
ডা. ই.সি এলেন এর হোমিওপ্যাথি বিষয়ক মর্মবানী:
অরাম ট্রিফাইলাম: অরাম ট্রিফাইলাম ওষুধের নিম্নক্রমে বা ঘন ঘন দেয়া ঠিক নয়, তাতে খারাপ ফল প্রকাশ পায়। উচ্চশক্তির ওষুধ দ্রুত ক্রিয়াশীল ও ফলপ্রদ হয়।
আর্জেন্ট নাইট: মস্তিষ্কের দৌর্বল্যজনিত মানসিক অবসাদে বা কোপনতায় এবং সেই সাথে সর্বাঙ্গীন দুর্বলতায় ও কম্পনে আর্জেন্ট নাইট বিশেষ ফলপ্রদ।
আর্নিকা মন্ট: দুষ্টব্রণের চেয়ে ছিন্নব্রণে আর্নিকা মন্ট অধিক উপযোগী।
ক্যালি বাইক্রমিকাম: কণীনিকার লুতারোগ (প্যানস) ও অস্বচ্ছন্দতায় ক্যালি কার্ব বিশেষ উপকারী বলে প্রমাণিত।
ক্যালি ক্লোর: বৃক্কে ক্রিয়াদর্শে বলে ডিপথেরিয়ায় ক্যালি ক্লোর বিপজ্জনক ওষুধ এবং অজ্ঞাত বা অবিবেচনাপূর্বক এর ব্যবহার কোনো কোনো রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
কুইনাইন: যদিও কুইনাইন দ্বারা উদ্ভিজ্জ জীবাণু , বিশেষত অনুপস্থানজাত ম্যালেরিয়া বিষের বিকাশ প্রতিরুদ্ধ হয় বটে, কিন্তু শরীরে সেই বিষ সম্যকরুপে প্রবিষ্ট হলে তার ফল কদাচিৎ বিনষ্ট হয়।
কোকা: কোকার গৌণফল বিপজ্জনক। কোকা ব্যবহারে অবশ্যই সাবধান হওয়া উচিত।
ডিপথেরিনাম: ডিপথেরিয়ায় প্রতিষেধক হিসেবে ডিপথেরিনাম ভালো কাজ করে।
টার্নেরা: পুরুষত্ব কমে যাওয়া, লিঙ্গত্থান না হওয়া, বাহ্য ও প্রসাবের বেগ হওয়ামাত্র শুক্রপতন হয়, অতিরিক্ত সহবাসের ইচ্ছা সত্বেও পরিতৃপ্তি হয় না, লিঙ্গ শিথিল ঠান্ডা ও ছোট হয়ে যায়, লিঙ্গ উত্থিত হয় না বা অল্প উত্থিত হয়েই শিথিল হয়ে যায় লক্ষণে টার্নেরা মূলারিষ্ট ১০ ফোঁটা করে ২/৩ মাস সেবন করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
ড্রসেরা: শয়নে ও মধ্যরাতের পরে কাশির বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ড্রসেরা ব্যবস্থেয়।
পালসেটিলা: কানে ভয়ানক বেদনা ও দপদপ করে, কানে যে পুঁজ হয় তা খুব ঘন এবং হলদে বা সামান্য সবুজ রঙের ইত্যাদি লক্ষণে পালসেটিলা ভালো কাজ কারে। পালসেটিলা মহিলাদের কানের ব্যথায় খুব ভালো কাজ করে।
পালসেটিলা: মলত্যাগের সময় অসাড়ে শুক্রপাত হয়, ফলে দুর্বলতা বাড়তে থাকে এবং দুর্বলতার উপশম না হলে হাত, মুখ ও ঊরুদেশ ক্রমশ শীর্ণ হতে থাকে, রোগীর প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে, প্রসাব ত্যাগের পর চলতে গেলে অসাড়ে ফোঁটা ফোঁটা করে শুক্র বের হয় লক্ষণে পালসেটিলা বিশেষ ফলপ্রদ।
বিউফো: রোগী হস্তমৈথুনের জন্য নির্জন স্থান খোঁজে, তা না পেলে প্রসাবের ভান করে যেখানে-সেখানে বসে পড়ে এবং হস্তমৈথুন করে ক্ষান্ত হয়, স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পরও হস্তমৈথুনের ইচ্ছা জাগে, সহবাসের সময় অতি অল্পসময়ে বীর্যপাত হয় এবং ক্রমে ক্রমে সম্পূর্ণ ধ্বজবঙ্গ হয়ে পড়ে লক্ষণে বিউফো বিশেষ উপকারী।
বেলেডোনা: কোনো ব্যথা হঠাৎ করেই আসে কিছুক্ষণ ব্যথা করে আবার ধীরে ধীরে চলে যায়, চুপ করে বসে থাকলে ব্যথার উপশম হয়, কথা বললে বৃদ্ধি পায়, কোনো কিছু ভালো লাগে না, কারো ভালো কথা শুনতেও বিষের মত মনে হয়, নড়াচড়ায় বৃদ্ধি ইত্যাদি লক্ষণে বেলেডোনা প্রদান করা হলে ভালো ফল দর্শে।
ম্যাগনেটিস পোলাস অস্ট্রিস: পায়ের বুড়ো আঙুলের নখ মাংসের মধ্যে ঢুকে নখকুনি সৃষ্টি করলে এবং সেখানে অসহ্য বেদনা ও পুঁজ সঞ্চয় লক্ষণে ম্যাগনেটিস পোলাস অস্ট্রিস সিএম শক্তির একমাত্রাই রোগীকে নিশ্চিতভাবে আরোগ্য করে।
সাইলেসিয়া: ফুসফসে স্ফোটক ও ক্ষত অত্যাধিক পরিশ্রমে শরীর উত্তপ্ত হলে বা শীতল জলে স্নান করলে বা মাথায় ও পায়ে ঠান্ডা বাতাস লাগার কারণে সাংঘাতিক ধরনের কাশি, শ্বাষরুদ্ধকর হাঁপানি, ফুসফুসে স্ফোটক পূঁজ, পূঁজ সঞ্চয় হবার পূর্ববস্থা পর্যন্ত সাইলেসিয়া বিশেষ উপকারী।
পরিশেষে বলা যায়, ডা. ই.সি এলেন জীবনে হোমিওপ্যাথিকে সঙ্গী করে নিয়েছিলেন। তাই কখনো তার চিকিৎসা বিফলে যায়নি।
যারা বর্তমানে চিকিৎসক হিসেবে প্রাকটিস করছেন তাদের জন্য এই তথ্যগুলো অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর যারা সাধারন পাঠক আছেন তারা দয়া করে একটিমাত্র লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ওষুধ প্রয়োগ করতে যাবেন না।
যেকোন সমস্যায় অবশ্যই নিকটস্থ কোনো অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
আরও পড়ুন: ডা. এস শওকত আলী যেভাবে হোমিও চিকিৎসা দিতেন।