ডাক্তার ই.বি নার একজন নামকরা ডাক্তার ছিলেন। তিনি হোমিওপ্যাথির সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলতেন। তিনি তার চিকিৎসার মাধ্যমে হাজার হাজার অসুস্থ্য মানুষকে সুস্থ্য করেছেন। আজ আমরা জানবো ডাক্তার ই.বি নার এর জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা। মূলত চিকিৎসা বিষয়ক অভিজ্ঞতা। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. অরাম মিউটেটিকাম: বার বার গর্ভস্রাব বা গর্ভপাতের ক্ষেত্রে অরাম মিউরেটিকাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। গর্ভপাতের ক্ষেত্রে যতগুলো ওষুধ কাজ করে তার মধ্যে এটা অন্যতম।
২. আর্জেন্ট নাইট: কোনো স্থানে যাবার প্রস্তুতি নিলে মলত্যাগের বেগ হয়, সকল কাজে ব্যস্ত, অত্যন্ত দ্রুত সবকিছু করতে চায়, সঙ্গমের সময়েই লিঙ্গ শিথিল হয়ে পড়ে, তার (প্রিয়জন) জন্য অত্যন্ত মনে কষ্ট, অনেক সময় সঙ্গমের ইচ্ছা আদৌ থাকে না এবং সঙ্গমের সময় লিঙ্গে বেদনা হয় এরকম লক্ষণে আর্জেন্ট নাইট প্রদেয়।
৩. আর্সেনিক এল্ব: ফুসফুসের ক্ষত থেকে স্রাবের মতো কালচে সবুজ বর্ণের দুর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মাসহ ফুসফুসের পচন হওয়া, পীড়া বৃদ্ধি পেয়ে রোগী দুর্বল ও অবসন্ন হয়ে পড়া, উদ্বেগ, নৈরাশ্য, ভয় কিংবা ছটফটানি, খিটখিটে মেজাজ প্রভৃতি, রোগীর গরম জল পানের ইচ্ছা থাকা এবং গরমে থাকার ইচ্ছা জাগা প্রভৃতি লক্ষণে আর্সেনিক এল্ব প্রয়োগ করা যেতে পারে।
৪. এইল্যান্থাস গ্ল্যান্ডুলোসা: যদি সকাল বেলায় গয়ের বা শ্লেষ্মা হলুদ বা তেঁতো বেশি হয় , তবে এইল্যান্থাস গ্ল্যান্ডুলোসা বিশেষ উপকারী।
৫. একোনাইট: ঠান্ডা লাগার জন্য হঠাৎ করে কানে ব্যথা- বেদনা যন্ত্রণা, কান কটকট-দপদপ করে, ছটফটানি ও ভয় কাজ করে, কোনো প্রকার শব্দ বা বাদ্যযন্ত্র সহ্য হয়না এমন লক্ষণে একোনাইট ভালো ফল প্রদান করে।
৬. এগনাস কাস্ট: অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করে অকাল-বার্ধক্য , পুনঃপুনঃ প্রমেহ আক্রমণ ও ধ্বজভঙ্গ, অতিরিক্ত শুক্রক্ষয় করিয়া অল্প বয়সেই বৃদ্ধের মতো অবস্থা, লিঙ্গ শিথিল, বক্র, ঠান্ডা ও আকারে ছোট হয়ে যাওয়া, কামেচ্ছা একেবারেই হয় না ইত্যাদি লক্ষণে এটা খুব ভালো কাজ করে।
এছাড়াও সুন্দরী ও যুবতী স্ত্রীও তার লিঙ্গে উত্তেজনা ঘটাতে পারে না, মনের সুখ শান্তি নেই, আত্মহত্যা করার ইচ্ছা, মেজাজ খিটখিটে ইত্যাদি লক্ষণে এগনাস কাস্ট বিশেষ উপকারী।
৭. এলুমিনা: যেসব শিশু মায়ের দুধের পরিবর্তে ফিডিং বোতলে দুধ খায়, তাদের কোনো রোগে এলুমিনা বিশেষ উপকারী এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগসহ কোষ্ঠবদ্ধতার ক্ষেত্রে এলুমিনা খুব ভালো ওষুধ।
৮. এসিড কার্বোলিক: ফুসফুসের স্ফোটক ও পচন, এর সকল ক্ষত দুর্গন্ধযুক্ত, পচা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, মলেও পচা দুর্গন্ধ, দুর্গন্ধযুক্ত গয়ের বের হয়, অনবরত খুসখুসে কাশি ইত্যাদি লক্ষণে এসিড কার্বোলিক প্রয়োগ করা হলে দ্রুত ফল লাভ করা যায়।
৯. এসিড ফস: অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়চালক যেমন- স্বপ্নদোষ, হস্তমৈথুন ইত্যাদি কারণে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ এতো দুর্বল হয়ে পড়ে যে, কথাও বলতে পারে না, কথা বলার সময় বুকে দুর্বলতা অনুভব করে, এরুপ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় রোগী সর্বদায় মন মরা থাকে, মাথা ঘোরে, শরীর কাঁপে, লিঙ্গ শিথিল হয়, পুরুষত্ব কমে যায়, লিঙ্গ হয়তো একেবারেই উথ্যিত হয় না, সমস্ত মুখে ব্রণ উটতে দেখা যায় ইত্যাদি লক্ষণে এসিড ফস উপকারী।
১০. কনভ্যালেরীয়া ম্যাজালিস: বুক ধরফড়ানি ও শ্বাসকষ্টে কনভ্যালেরীয়া ম্যাজালিস মূলরিষ্ট ঘন ঘন সেবন করতে হবে।
১১. ক্যামোমিলা: কানের ভেতর ব্যথা, কানে কটকটানি বেদনা, কানের ব্যথা বাইরে হাঁটলে উপশম হয়, ঘড়ে প্রবেশ করলে কানের ব্যথা বেড়ে যায়, শিশু কোলে নিয়ে হাঁটলে রোগে উপশম হয় ইত্যাদি লক্ষণে ক্যামোমিলা বিশেষ উপকারী ফল দর্শে।
১২. ক্যালেডিয়াম: দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্নদোষ হয়ে পরিশেষে ধ্বজভঙ্গ হলে, নিদ্রার উপক্রমে লিঙ্গোথ্যান ও জাগলেই লিঙ্গ শিথিল হয়ে পড়ে, কোন প্রকার কামোত্তেজক স্বপ্ন না দেখেও প্রায়ই স্বপ্নদোষ হয়, সোহাগ আলিঙ্গনেও লিঙ্গোথ্যান হয় না, যদিও সামান্য হয় সঙ্গমকালে শিথিল হয়ে পড়ে ইত্যাদি লক্ষণে ক্যালেডিয়াম প্রদেয়।
১৩. কোনিয়াম: লিঙ্গের দুর্বলতা, রোগীর কামরিপু চরিতার্থের ইচ্ছা অত্যন্ত প্রবল, কিন্তু স্ত্রি সহবাসে সম্পূর্ণ অক্ষম, স্ত্রিলোক দেখলে, আলিঙ্গন করলে এমন কি মনে মনে ভাবলেও অল্পতেই বীর্য বের হয়ে যায়।
লিঙ্গ একবার শিথিল হলে তা আর সহজে উথ্যিত হয় না , অনেক চেষ্টার পর কিছুটা হলেও আলিঙ্গন করার সাথে সাথেই শিথিল হয়ে পড়ে এবং তার জন্য মানসিক কষ্ট হয় লক্ষণে কোনিয়াম প্রদান করলে রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
১৪. কোনিয়াম ম্যাক: রোগী কারো সাথে মিশতে চায় না, আবার একা থাকতেও বেশ ভয় পায় লক্ষণে কোনিয়াম ম্যাক উপকারী।
১৫.মেফাইটিস: হাঁপানি রোগীর দেহে যদি কিছুটা স্বচ্ছ বা ডিমের সাদা অংশের মতো হয় আর তার স্বাদ যদি টক টক হয়, তবে মেফাইটিস বিশেষ উপকার দর্শে।
১৬. হ্যামামেলিস: অর্শ রোগে মলদ্বারে অত্যন্ত টাটানি ব্যথার সাথে জ্বালা থাকলে এবং অধিক পরিমাণে রক্তস্রাব হলে হ্যামামেলিসের মূলারিষ্ট বাহ্য প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায়, ডাক্তার ই.বি নুর আসলে শুধু একজন ডাক্তার-ই ছিলেন না তিনি ছিলেন উদার এবং মানবতাবাদী। রোগীদের কাছে থেকে অর্থ নেয়া তার উদ্দেশ্য ছিলো না বরং রোগ থেকে মুক্ত করাই তার ছিল মূল প্রচেষ্টা।
যারা বর্তমানে হোমিওপ্যাথি পড়াশোনা করছেন কিংবা যারা ডাক্তার তাদের উভয়ের জন্যই এ লেখা যথেষ্ট উপকার করবে আশা রাখছি। তবে সাধারন মানুষ যারা আছেন তারা ডাক্তার এর পরামর্শ ব্যতিরেখে কেবলমাত্র এ লেখার উপর ভিত্তি করে ওষুধ খেতে যাবেন না।
আরও পড়ুন: ভায়াগ্রা খেয়ে যৌন মিলনে আপনার যেসব ক্ষতি হতে পারে।