আজ কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিকটস্থ খাদে পড়ে গেছে। এতে ঐ বগিতে থাকা সবাই এবং পাশের বগিগুলো থেকে মোট ৭০ জনের মতো নিহত হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি থেকে তথ্যটি জানা গেছো। কঙ্গোর রাষ্ট্রীয় রেল কোম্পানীও বিষয়টি অবগত করেছে।
ঐ দেশের রেল কোম্পানীর অবকাঠামোগত পরিচালক মার্ক মানিয়োঙ্গা নোদাম্বোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঐ লাইনচ্যুত হওয়া ট্রেনটিতে মোট ১৫টির মতো বগি ছিল। অথচ ১২টি বগিই ছিল খালি। যদি ১২টি বগিই পূর্ণ থাকতো তবে আজ অনেক হতাহতের খবর পাওয়া যেত।
যাই হোক, ট্রেনটি কঙ্গো দেশের লুনেন নামক জায়গা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলো এবং গন্তব্য ছিলো টেনকে শহরের দিকে। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা বেজে ৫০ মিনিটের দিকে দূর্ঘটনাটি ঘটে অর্থাৎ ট্রেনটি বুয়োফওয়ে নামক গ্রামের অভ্যন্তরে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে ঐ এলাকায় একটি গিরিখাদ ছিলো। ট্রেনটি যখন লাইনচ্যুত হয়েছে তখন ১৫টি বগির মধ্যে ৭টিই খাদে পড়ে যায় এবং হতাহত হয় সবাই।
ট্রেনের এই দূর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। মৃতদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও ছিলো। আর আহত হয়েছে প্রায় ৫২ জন। আহতদের ট্রেন থেকে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঐ দেশের প্রাদেশিক গণমাধ্যমগুলোও একই খবর দিয়েছে।
মানিয়োঙ্গা বলেন, মালবাহী ট্রেনে সাধারণত যাত্রী উঠানো নিষিদ্ধ। কিন্তু ট্রেন কর্তৃপক্ষ গোপনে কয়েক শত যাত্রী নিয়েছিল। ট্রেনটি যখন খাদে পড়ে যায় তখন অনেকেই চিৎকার করছিলো এবং কারও কারও লাশ হয়তো এখনও খালের মধ্যেই পড়ে আছে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ট্রেনটি যাতে খাদ থেকে উঠানো যায় এবং রেল চলাচল যাতে স্বাভাবিক করা যায় সে দেশের স্থানীয় সরকার সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর আগেও দেশটিতে এরকম দূর্ঘটনা ঘটেছে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার মৃত্যু হয়েছে বেশি এবং ক্ষতিও হয়েছে বেশি।
কঙ্গো দেশটিতে যথেষ্ট রাস্তাঘাট নেই। থাকলেও অনুন্নত। যার ফলে মানুষ জন দূর-দূরান্তে যাওয়ার ক্ষেত্রে মালবাহী ট্রেনগুলো ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু সরকারিভাবে এভাবে ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
ট্রেনটিতে থাকা তেলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। খাদে পড়ে গিয়ে অনেক তেল সেখানে সংমিশ্রিত হয়েছে। আগুণ লেগেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অনেকের।
যারা নিহত হয়েছেন তাদের সবার পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন জায়গা থেকে সেখানে লোকজন যাচ্ছেন এবং মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
আফ্রিকার মধ্যে যতগুলো দেশ রয়েছে তন্মধ্যে কঙ্গো দেশটি অনুন্নত। তেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেখানে হয়নি। সরকারের পক্ষে সেটি করা হয়নি কেবল আর্থিক সংকটের কারণে।
পূর্বে এই কঙ্গো দেশটি জায়ার নামে পরিচিত ছিলো। কঙ্গোর রাজধানীর নাম হলো কিনসাসা। বর্তমান রাষ্ট্রপতি ফেলিক্স শিসেকেদি।
স্থানীয় সরকার উক্ত দূর্ঘটনার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নিচ্ছেন। আর সরকারের তরফ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। অতি দ্রুতই অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জীবন ও জীবনের চরম বাস্তবতা সম্পর্কে কিছু কথা।
কঙ্গোতে বাংলাদেশের অভিবাসী তেমন একটা নেই। হাতে গোনা কয়েকজন থাকতে পারে। তবে শিল্পের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। মানুষের জীবন মান উন্নত করার স্বার্থে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অনেক বাংলাদেশী কঙ্গোতে অবস্থান করছেন।