টাক যেমন বিভিন্ন কারণে পড়ে, তেমনি এগুলো সারাতেও বিভিন্ন ঔষধের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এসব ঔষধ কয়েক মাস ব্যবহার করতে হয়।
সাধারনত অনেকেই বলে যে, একবার টাক পড়লে আর সেখানে চুল গজায় না। কিন্তু কথাটি ভুল। আপনি যদি সঠিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করেন তবে অবশ্যই চুল গজাবে।
আজ আমরা টাক মাথায় চুল গজানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ সম্পর্কে জানবো। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. আর্নিকা মন্ট: আর্নিকা মন্ট ঔষধটির টাকে চুল গজানোর ক্ষমতা আছে। এটি নিম্নশক্তিতে (Q, ৩, ৬) তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন অথবা সরাসরি টাক পড়া স্থানে মালিশ করতে পারেন।
২. থুজা: টাকের একটি মূল কারণ হলো টিকা (বিসিজি, ডিপিটি, এটিএস, পোলিও, হেপাটাইটিস, এটিএস ইত্যাদি) নেওয়া।
টিকা নিলে কেবল খুসকিই হয় না বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং পাতলা হতে হতে টাক পড়ে যায়।
কাজেই কোন টিকা নেয়ার দুয়েক মাস থেকে দুয়েক বছরের মধ্যে খুসকি দেখা দিলে প্রথমেই থুজা নামক ঔষধটি খেতে হবে।
বিশেষ করে খুসকির সাথে যাদের আঁচিলও আছে তাদের প্রথমেই কয়েক মাত্রা থুজা খেয়ে নেওয়া উচিত।
৩. জ্যাবোরেন্ডি: জ্যাবোরেন্ডি ঔষধটি টাকে চুল গজানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়। এটি দীর্ঘদিন ব্যবহারে কিংবা খাওয়ার ফলে সাদা চুলও কালো হয়ে যায়।
এটিও নিম্নশক্তিতে (Q, ৩, ৬) তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন অথবা সরাসরি টাক পড়া স্থানে মালিশ করতে পারেন।
৪. লাইকোপোডিয়াম: লাইকোপোডিয়াম টাকের একটি শ্রেষ্ঠ ঔষধ বিশেষত চারদিকে চুল আছে কিন্তু মাঝখানে টাক এমন টাকের ক্ষেত্রে।
লাইকোপোডিয়ামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো সারা বছর প্রস্রাবের বা হজমের সমস্যা লেগেই থাকে, পেটে গ্যাস হয় প্রচুর, দেখতে তাদের বয়সের চাইতেও বেশী বয়স্ক মনে হয়, স্বাস্থ্য খারাপ কিন্তু বুদ্ধিমত্তা খুব ভালো ইত্যাদি।
১০,০০০ (১০এম) শক্তিতে পনের দিন পরপর একমাত্রা করে সেবন করুন। তাহলে শীঘ্রই খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
৫. সেলেনিয়াম: সেলেনিয়াম টাকের একটি ভালো ঔষধ তাদের জন্য যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, যারা অল্প পরিশ্রমেই একেবারে কাহিল হয়ে পড়েন এবং যাদের মনে যৌন চিন্তা বেশী কিন্তু যৌনশক্তি দুর্বল।
৬. ন্যাট্রাম মিউরিয়েটিকাম: মহিলাদের সন্তান প্রসব পরবর্তী সময়ে শরীরের যেকোন স্থান থেকে চুল পড়ে গেলে নেট্রাম মিউর সেবন করতে হবে উত্তম ফলাফলের জন্য।
৭. ফ্লোরিকাম অ্যাসিডাম: ফ্লোরিক এসিড টাকে চুল গজানোর ক্ষেত্রে একটি ভালো ঔষধ বিশেষত যারা খুব ফুর্তিবাজ লোক তাদের জন্য।
১০,০০০ (১০এম) শক্তিতে পনের দিন পরপর একমাত্রা করে খান কয়েকবার। পরবর্তীতে আরো উচ্চ শক্তিতে সেবন করার প্রয়োজন পড়তে পারে।
৮. ফসফোরিকাম অ্যাসিডাম: শোক, দুঃখ, বিরহ, প্রেমে ব্যর্থতা, মারাত্মক ধরণের অসুখে (যেমন- টাইফয়েড) ভোগে শরীরের বারোটা বেজে যাওয়া ইত্যাদি কারণে চুল পড়ে গেলে ফসফোরিক এসিড ঔষধটি নিম্নশক্তিতে দীর্ঘদিন সেবন করতে হবে।
তাহলে দ্রুতই চুল গজাবে। পরবর্তীতে ফসফোরিক এসিড উচ্চ শক্তিতে সেবন করার প্রয়োজন হতে পারে।
৯. ভিনকা মাইনর: ভিনকা মাইনর বেশ কিছু দিন খেলে টাকের মধ্যে চিকন চিকন ছোট ছোট চুল গজাতে দেখা যায়। তবে ধৈর্য্য ধরে দীর্ঘদিন সেবন করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, অল্প বয়সে যাদের চুলের এরকম সমস্যা হয় অর্থাৎ মাথায় টাক পড়ার মতো অবস্থা তৈরী হয় তাদের অবশ্যই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
তবে নিজের ইচ্ছে মতো ঔষধ সেবন করতে যাবেন না। তাহলে হীতে বিপরীত হতে পারে। মাথার টাক দূর করার একান্তই যদি ইচ্ছে থাকে তবে অভিজ্ঞ একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন: শিশুদের রোগে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন।