জানা অজানা অনেক প্রশ্নের বিষয়েই আমাদের মাথায় ঘুরপাক খায়। হয়তো ভাবি, এটা ঠিক কিনা? এটা মানা যাবে কিনা? এর আরও কোন উত্তর আছে কিনা?
তো সব মিলে এখানে এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর আমরা সংযোজন করবো যার কারণে আপনার জ্ঞান শক্তি বাড়বে ইনশাআল্লাহ এবং আপনি অবশ্যই নতুন কিছু শিখতে পারবেন। তো আর কথা নয়, চলুন জেনে নিই জানা-অজানা প্রশ্নের উত্তরগুলো।
১. আমি ছোটবেলা থেকেই হস্তমৈথুন করি। সপ্তাহে ২ বার কিংবা ৩ বার। এখন আমি ২২ বছরে পা দিয়েছি। বিয়ের পরে আমার কোন সমস্যা হবে কিনা?
উত্তর: সমস্যা হবে কিনা তা আপনি কিছুটা হলেও টের পাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়। হয়তো লিঙ্গ ছোট হয়ে যায়, চিকন হয়ে যায়, উত্তেজনা আসতে দেরি লাগে ইত্যাদি।
তবে এখনও সময় আছে। আপনি আল্লাহর কাছে তওবা করে এই পথ থেকে সরে আসুন। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন। দ্বীনদার একজন মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিন।
কারন, বিয়ে ছাড়া আপনি নিজেকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। কারন, যখনই একা থাকবেন তখনই আর নিজেকে কোনভাবেই সামলাতে পারবেন না।
আর এখন থেকেই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। বিশেষ করে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, বাদাম, খেজুর, কিসমিস ও মধু নিয়মিত খান। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং সকালবেলা ব্যায়াম করুন। আশা করি, যেটুকু ক্ষতি হয়েছে তা কোনরকমে পুষিয়ে নিতে পারবেন এবং আপনার স্ত্রীকে সুখ দিতে পারবেন।
২. হিরো আলম সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।
উত্তর: হিরো আলমের প্রথম স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি’র সাথে বিয়ে হয় ২০১০ সালে। সেই সংসারে আলো ও আঁখি নামে দুই মেয়ে ও আবির নামে একটা ছেলে সন্তান রয়েছে তার।
২০১৪-১৫ তে একজন পাতি কমেডিয়ান হিসেবে ফেসবুকে ডেব্যু হয় হিরো আলমের। মডেল আরিফ খানকে ছেড়ে উৎসাহী তরুণরা ঝুঁকে পড়ে হিরো আলমের দিকে।
তার ভুল বানানে লেখা পোস্ট, কমেডি অভিনয়ের ক্লিপগুলো শেয়ার দেয়া, তার নামে ফানি গ্রুপ, ইভেন্ট খোলা ও একাধিক ফেইক আইডি খুলে তাকে মোটামুটি আলোচনায় নিয়ে আসা হয়।
এরপর ধীরে ধীরে অভিনয় জগতে ছড়িয়ে পড়ে তার আধিপত্য। তৎকালীন ফেসবুক কমেডিয়ান টুনটুনি আদৃতার সাথে কয়েকটি ভিডিও গানে অভিনয় করে পরিচিতির ব্যপ্তি বাড়ে অনেকাংশে। তার ভাইরাল হওয়ার পেছনে মডেল আরিফ খান আর টুনটুনি আদৃতার অবদান অনস্বীকার্য।
পরিচিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে হিরোর ব্যক্তি অহমিকা। একাধিক মেয়ে অভিনেত্রীর সঙ্গ পেয়ে শুরু হয় গরীব, অশিক্ষিত, অসুন্দর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি’র সাথে দাম্পত্য কলহ।
অভিনয়ের খাতিরে ঢাকায় এসে একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে হিরো আলম। তন্মধ্যে অন্যতম নুসরাত জাহান। ঢাকা থেকে বগুড়ায় ফিরে রাতদিন নুসরাতের সাথে ফোনে কথা বলা নিয়ে দ্বন্দ্ব কলহ চলে সংসার জীবনে।
একপর্যায়ে স্ত্রীকে মারধর আর নির্যাতন শুরু করে সে। ২০১৯ সালের মার্চে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয় হিরো আলম। আদালতে তার স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ের কথা তুলে ধরলে হিরো তা অকপটে অস্বীকার করে।
অতঃপর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি মামলা তুলে নিয়ে পুনরায় হিরোর সঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত জানায়। এপ্রিলে তার জামিন হলে স্ত্রী সুমিকে তাৎক্ষণিক তালাক দিয়ে গোপনে বিয়ে করা নুসরাত জাহানকে ঘরে তোলে হিরো আলম।
হিরোর আগের সংসারের স্ত্রী সন্তানদের কথা কিছুদিন গোপন থাকলেও একসময় নুসরাত জানতে পারে সে বিবাহিত এবং তার সন্তানও রয়েছে। তাদের সাথে কোন প্রকার সম্পর্ক নেই বলে নুসরাতকে মানিয়ে নেয় হিরো।
কিন্ত তিন বছরের মাথায় হিরোর একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ও পরকীয়ায় আসক্তির কথা জানতে পেরে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় নুসরাত। হিরোর বর্তমান স্ত্রীর নাম রিয়া মনি।
ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক এবং অনেকগুলো অশালীন ভিডিও ক্লিপ রয়েছে তার ইউটিউব ও ডেইলি মোশন সাইটে যা সামাজিক দৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং বর্জনীয় বটে।
অপ্রিয় হলেও সত্য যে, হিরো আলমের রাজনৈতিক প্রচারণায় সর্বাধিক ভুমিকা রয়েছে হুজুরদের। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও ফেসবুকের ইসলামিক পেইজে তাকে তুলে ধরা হয়েছে শ্রেষ্ঠ চরিত্রবানের মূর্ত প্রতীক হিসেবে।
“দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, আমরা সমাজকে বদলে দেব” – একটি বই এটি। বইটি লিখেছেন সৌরভ আলম সাবিদ। ২০১৯ সালের বইমেলায় হিরো আলমের নামে বইটি লঞ্চ করেছে তরফদার প্রকাশনী।
পাঠকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য লেখার ভাষায় কিছুটা বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষার ফ্লেভার দেয়া হয়েছে। যেমন রিকশাকে রিসকা লেখা হয়েছে বইতে।
বিজনেস মাইন্ড নিয়ে অনেকেই হিরো আলমকে ব্যবহার করছে এই বইটি তার একটি নমূনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেইজের রিচ বাড়াতেও বর্তমানে ইউটিউবারদের প্রধান কনটেন্ট হিরো আলম।
পাবলিক সিমপ্যাথি অর্জনের লক্ষ্যে তার পজিটিভ দিকগুলোকে হাই-লাইট করা হচ্ছে। কৌশলে কিংবা অজান্তে গোপন রাখা হচ্ছে তার চারিত্রিক ত্রুটিগুলো।
সিনেমা জগতের অভিনেতা/অভিনেত্রীরা সাধারণত অশ্লীলতা, পরকীয়া ও একাধিক বিয়েতে আসক্ত। আমরা তাদের অভিনয় দেখে বিনোদিত হই। তাদের ব্যক্তি চরিত্র মূখ্য বিষয় নয়। কিন্ত যখন তারা আমাদের প্রতিনিধি হতে চাইবে, নিশ্চয়ই চারিত্রিক গুণটাও দেখা জরুরী। [লেখাটি নেয়া হয়েছে: অচিকীর্ষু লৌকিক, কুয়োরা থেকে]
৩. ভারতে ১টি ডিমের দাম বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭ টাকা, পাকিস্তানে ৫ টাকা আর চায়নাতে ৩ টাকা। তাহলে বাংলাদেশে কেন ১টি ডিমের দাম ১৫ টাকা?
উত্তর: বাংলাদেশের কেবল ডিম নয়, সব ধরণের খাবারের যোগানই চাহিদার তুলনায় খুব সীমিত হয়ে গেছে। জনসংখ্যা এই ভূমির ধারণ ক্ষমতার শেষ সীমায় চলে এসেছে। তাই দ্রব্যমূল্যের দামের লাগাম ধরে রাখা আর সম্ভব হচ্ছেনা। ভারত বা পাকিস্তানে এখনো সেই তুলনায় উৎপাদনযোগ্য অনেক ভূমি রয়ে গেছে।
৪. আমার পরিবারের কেউ নামাজ পড়ে না। আমি পড়ি। আমি তাদেরকে নামাজ পড়তে বলি কিন্তু তারা তা শোনে না। এমতাবস্থায় আমার কি করা উচিত?
উত্তর: অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি কোন কিছুই ভালো নয়। যেসব জঙ্গী হিজরতের নামে বাসা থেকে গুম হয়ে পাহাড়ে জঙ্গলে ট্রেনিং নিতে যায়, এদের পরিবারের সাক্ষাৎকার দেখুন।
হলি আর্টিজানের হামলায় প্রত্যেকটা বড়লোকের দুলালদের পরিবারের কথা শুনুন, একটা ব্যাপারে মিল পাবেন। এরা ধর্মীয় ব্যাপারে এদের পরিবারের উপরেও নিজের ইচ্ছার অনিচ্ছার জোর-জবরদস্তি চালাতো।
স্বাভাবিকভাবেই পারতো না, তাই ভাবতো, তালেবানদের মতো কিছু একটা দেশে এসে কট্টর ইসলামী আইন বলবৎ করতে পারলেই তার বা তাদের ইচ্ছামতো সবাই চলতে বাধ্য হবে।
কিন্তু সবাই তো আপনার ইচ্ছামতো চলতে বাধ্য না। এমন পরিবেশ আফগানিস্থানে অলরেডি বিরাজ করছে, সেখানে পরিবারসহ পাঠালে কেউ যেতে রাজী নয়, কিন্তু যেখানে নিজের ইচ্ছামতো চলা যায় সেইসব ইউরোপ আমেরিকার দেশে সবাই যেতে ঘটিবাটি বেচতেও রাজী।
উপরের উত্তরটি কারও কাছে নেতিবাচক মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু এমনই। আপনার পরিবারের কেউ নামাজ পড়তে চায় না কিংবা আপনার কথা শোনে না – এই জন্য তাদের উপর জোর জবরদস্তি চালানোর দরকার নেই।
আপনার দায়িত্ব তাদের বলা, আপনি বলছেন। তারা তাদের পাপের বোঝা ভারী করছে। সুতরাং আপনার চিন্তার কোন কারন নেই।
৫. নিয়মিত কালোজিরা খেতে চাচ্ছি, কেননা এতে অনেক উপকারিতা রয়েছে শুনি। কেউ কি বিশদভাবে বলতে পারবেন দৈনিক কীভাবে খাবো এবং কালোজিরার কী কী বিশেষ উপকারিতা রয়েছে?
উত্তর: আপনি যেকোন বয়সেই কালোজিরা খেতে পারেন। বলা হয়ে থাকে যে, সর্বরোগের মহৌষধ হলো কালোজিরা। সত্যিই তাই। বাজারে কালোজিরা কিনতে পাওয়া যায়।
আপনি ভালো কোম্পানীর একটি বোতলজাত কালোজিরা কিনে আনতে পারেন। সেটা আপনি কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন কিংবা ভর্তা করে ভাতের সাথেও খেতে পারেন।
কালোজিরার উপকারিতার শেষ নেই। এতে রয়েছে অমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, ফলিক এসিড, জিংক এবং সেলেনিয়াম।
কালোজিরার উপকারিতাগুলো বিশদভাবে বর্ননা করা সম্ভব নয়। তারপরেও একটু বলি আর তা হলো- এর মধ্যে অমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা হৃদয়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়াও ভিটামিন ডি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে যা হাড় এবং মাংসপেশীর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন বি১২ স্বাস্থ্যকর নার্ভাস সিস্টেম বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আবার, কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্ট জনিত সমস্যা উপশম করে। ডায়াবেটিস রোগ উপশমে বেশ কাজে লাগে কালোজিরা।
এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা এক গ্লাস পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে দেখুন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া রং চা বা গরম ভাতের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ২ বার করে খেলে উপকার পাবেন।
জানা অজানা পর্বের প্রতিটি পর্বে মোট ৫টি করে প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়। আপনি চাইলে আপনার লিখা পাঠাতে পারেন। আমরা তা জানা অজানা পর্বের মাধ্যমে মানুষকে জানিয়ে দেব এবং আপনার নামেই লিখা প্রকাশ করবো। সবাই ভালো থাকুন – কথা হবে পরবর্তী পবে।