চোখ খুব মূল্যবান অঙ্গ। যার চোখ নাই তার কাছে দুনিয়ার সব কিছুই অন্ধকার। বিভিন্ন কারনে আমাদের চোখে ব্যথা হয়। এই চোখের ব্যথা দূরীকরনে নিয়মিত কিছু কাজ করতে হবে আমাদের।
এখন তো আর আগের মতো যুগ নাই। এখন কম্পিউটারে বসে কাজ করার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। দীর্ঘক্ষণ একটানা কাজ করার কারনে আমাদের চোখে প্রেসার পড়ে।
আবার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কাজ শেষ হলে আবার রয়েছে মোবাইল ফোন। আসলে এই সব মিলে আমাদের চোখে অতিরিক্ত প্রেসার পড়ে যায় এবং তখনই শুরু হয় চোখের ব্যথা।
আজ আমরা চোখের ব্যথা দূরীকরনে কিছু টিপস জানবো। আশা করি, টিপসগুলো আপনাদের কাজে লাগবে। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
এমনিতে দীর্ঘদিন ও দীর্ঘক্ষণ ধরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ ব্যবহার করলে শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গ হিসেবে পরিচিত চোখের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ে। ফলে মাঝে মধ্যেই চোখ থেকে পানি পড়া বা চোখ লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই সেগুলোকে পাত্তা দিতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে ব্যথার মাত্রা ও পরিধি উভয়ই বাড়তে থাকে।
সে সময় অনেকের চোখের নিচে ব্যথা হয়। কখনোবা সেই ব্যথা কপালের রগ ছাড়িয়ে মাথাতেও ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসা পরিভাষায় একে ‘ক্লাস্টার হেডেক’ বলা হয়। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় একই সময়ে ব্যথা শুরু হয়। তখন অতিরিক্ত আলো বা আওয়াজ সব কিছুই অসহ্য লাগতে শুরু করে।
চিকিৎসকরা বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে কতগুলো নিয়ম মেনে চলা উচিত। নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করা যায় সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে।
প্রতি ৩-৪ সেকেন্ড পর পর চোখের পাতা ফেলা চোখের অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। বিশেষ করে যাদের একভাবে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হয়, তাদের জন্য মাঝেমাঝেই চোখের এই ব্যায়ামটি করে নেওয়া ভাল।
টানা ১ মিনিট ধরে ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলাও চোখের জন্য খুব উপকারী একটি ব্যায়াম। এতে দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়।
চোখের মণি ঘোরানোও চোখের জন্য বেশ কার্যকর একটি ব্যায়াম। ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং পরে তার বিপরীত দিকে ৪ বার করে মণি ঘোরান। তারপর চোখ বন্ধ করে রাখুন ২-৩ সেকেন্ড করে। দিনে ২ বার এই ব্যায়ামটি করলে চোখের পেশি ভালো থাকবে।
টানা ২০ মিনিট কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার পর ২০ ফুট দূরের কোনো জিনিসের দিকে ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। ২০ মিনিট পর পর এই চর্চাটি করা গেলে তা চোখের জন্য খুবই উপকার বয়ে আনবে।
দিনে অন্তত কয়েকবার পরিস্কার এবং ঠান্ডা পানি দ্বারা চোখ ধৌত করুন। তাহলে চোখের শুষ্কতা থাকবে না এবং চোখ ভালো থাকবে।
একান্ত প্রয়োজনে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চশমা ব্যবহার করুন। প্রচন্ড রোদে সাধারন সানগ্লাস ব্যবহার করুন। কাছের জিনিস বা দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধা হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
পরিশেষে বলা যায়, অমূল্য সম্পদ চোখের যত্নে কোন ত্রুটি যাতে না হয় সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখা উচিত। মোবাইল বা কম্পিউটার একটু হিসাব করে ব্যবহার করুন।
কাজ করতে করতে চোখে ব্যথা শুরু হলে নিজেকে একটু রেস্ট দিন। চোখগুলো বন্ধ করে একটু জিরিয়ে নিন। প্রয়োজনে পানি দিয়ে একটু ধুয়ে নিন। নিয়ম মেনে চললে সারাজীবন আপনার চোখ ভালো থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুন: কিডনী নষ্ট হওয়ার কারনগুলো কি আপনি জানেন?