পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি রোববার দিবাগত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর আগে মধ্যরাত থেকে প্রবল জোয়ার ও বৃষ্টিতে খুলনার কয়রা উপজেলার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয়রা।
কয়রা, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেড়িবাঁধের অন্তত ৫৩টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত এক ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।
কয়রার গাতিরোঘের বাসিন্দা গৌতম রায় বলেন, “বাঁধটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি কিন্তু এখন আবার বিপদে পড়েছি।”
এলাকার আরেক গ্রামবাসী সাধন সরকার বলেন, “আইলার সময় আমরা প্রায় দুই বছর পানির নিচে ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় আমপান এবং ইয়াসও আমাদের প্রভাবিত করেছে। কয়েকদিন আগে বাঁধটি মেরামত করা হয়েছে।”
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, হরিণখোলা ও গাতিরঘেরী এলাকায় বাঁধের বাম পাশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বাঁধ মেরামতের প্রস্তুতি চলছে। নদীতে জোয়ার বাড়তে শুরু করেছে। গ্রামের সবাই আতঙ্ক ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। প্রবল বাতাস থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে, তিনি বলেন।
৫০ কিলোমিটার বাঁধের মেরামত কাজ এবং পোল্ডারের দুই কিলোমিটার নদী ব্যবস্থাপনার কাজ। দাকোপ উপজেলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট ৩২, এই বছরের জুনে শেষ হবে বলে আশা করা হয়েছিল।
প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই একটি নতুন ফাটল তৈরি হয়। এখন ভবনটি সংস্কারের জন্য প্রায় ১৫২ কোটি টাকার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
যারা ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায় সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজকের (২৪ অক্টোবর, ২০২২) মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে।
আরও পড়ুন: মায়ের জীবন বাঁচাতে ছেলে কিডনী বিক্রি করতে চান।