বাজারে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ পাওয়া যায়। একই কোম্পানীর কয়েক ধরণের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ রয়েছে। খোঁজ নিলে জানতে পারবেন যে, সারাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ চলে, অন্য সব রোগ মিলে এতো ওষুধ চলে না।
তাই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়া কমান। কারণ, এটা বেশি খেলে নানা ধরণের ক্ষতি হতে পারে। দীর্ঘদিন সেবন করলেও ক্ষতি হয়। তাই যেসব খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক কম হয় কিংবা নিয়ন্ত্রণ হয় সেসব খাবার খাওয়ার প্রতি মনোযোগী হোন।
খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম না করা, পানি কম খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে।
প্রথমদিকেই সচেতন না হলে পরবর্তীতে আলসার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তো আজ মূলত এসব ব্যাপারেই কথা বলবো। এখন তাহলে মূল আলোচনায় যাই।
১. আদা:
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার হলো আদা। এই উপাদান গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, হজমে সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রুত সমাধানে সক্ষম।
পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে কাঁচা আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যার দ্রুত সমাধান পাবেন।
৩. দই:
দইয়ে ল্যাকটোব্যাকিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডাসের মতো নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়া দ্রুত খাবার হজমে সাহায্য করে সেই সঙ্গে খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
তাই দই খেলে হজম ভালো হয়, গ্যাস কমে। এজন্য খাবারের পর দই খাওয়া বেশ কার্যকর। বিশেষ করে টক দই।
৩. শসা:
পেট ঠাণ্ডা রাখতে বেশ কার্যকরী খাবার শসা। কাঁচা শসা হজমেও সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।
এছাড়া এতে আছে প্রচুর সিলিকা ও ভিটামিন-সি। যা দেহের ওজন কমাতে আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়।
৪. পেঁপে:
পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। তাই নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের সমস্যা কম হবে। পেঁপে কাঁচা-পাকা দু’অবস্থায় খেতে পারেন। সবটাতেই উপকার পাবেন।
৫. আনারস:
আনারসে রয়েছে ৮৫ শতাংশ পানি এবং ব্রোমেলিন নামক হজমে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম যা অত্যন্ত কার্যকরী একটি পাচক রস। এটি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। তাছাড়া আনারস ত্বকের জন্যও উপকারী।
৬. হলুদ:
হজম সংক্রান্ত সব ধরনের সমস্যা সমাধানে হলুদ দারুণ কার্যকর। এটি চর্বিজাতীয় খাবার হজমে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া হলুদে প্রদাহনাশক উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমায়।
৭. কলা:
যারা বেশি করে লবণ খান, তাদের গ্যাস ও হজমে সমস্যা হতে পারে। কলায় যে পটাশিয়াম আছে তা শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। কলা হজমেও সাহায্য করে। দেহ থেকে দূষিত পদার্থ দূর করে দেয়।
৮. পানি:
পানির বহু গুণ। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস করে পানি পান করবেন, দেখবেন সারাদিন আর গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা সইতে হবেনা। কারণ পানি হজম শক্তি বাড়াতে বেশ কার্যকরী।
তাছাড়া পানি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতেও কাজ করে। গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। শুধু একটু নজর রাখতে হবে নিজের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি।
উল্লেখিত খাবারগুলোর সঙ্গে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন তাহলে দেখবেন আপনাকে আর গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায় ভুগতে হবে না। কিনতে হবে না ওষুধ এবং সাশ্রয় হবে আপনার উপার্জিত অর্থ।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস নির্মূল করতে যে গাছের পাতার রস মাত্র ১৫ দিন খাবেন।