গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গাইবান্ধা-৫ আসনের মনিটরিং সেলে বসে সিইসি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নিজের চোখে দেখেছি মানুষ গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে এবং বেআইনিভাবে ভোট দিতে।
প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ওই কেন্দ্রগুলো তালাবদ্ধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ইসি পরে বিবেচনা করবে।
“আমরা ফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি যে আমরা এখান থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে এগুলো দেখেছি।
তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ভোট বন্ধ করে দিয়েছি। কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না, তাহলে তা বন্ধ করতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আপনি এটাও দেখবেন যে, গোপন কক্ষে কী ঘটছে এবং নির্বাচন সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে আমি তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারব না কেন এমন হচ্ছে, ” যোগ করেন সিইসি।
ভোটার ছাড়া অন্য লোকজন প্রবেশ করে কাকে ভোট দেবেন তা নির্দেশ করে এমন মানুষের আচরণ এখানে ভুল বলে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, তা আমরা এখনই বলতে পারছি না। ইভিএমে কোনো ত্রুটি আছে কিনা দেখুন।”
“এটা একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচনের বিরুদ্ধ বা অন্তরায়। তারা ডাকাত, তারা দুর্বৃত্ত। যারা আইন মানে না, তাদের ডাকাত ও দুর্বৃত্ত বলে সম্বোধন করতে পারি।
কারণ সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সবাই আইন না মানলে নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন দিতে পারবে না,” যোগ করেন তিনি।
এর আগে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়া সব প্রার্থীই ভোট বর্জন করেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাঘাটা উপজেলার বাগেরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে চার প্রার্থী তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এদিকে, ‘অনিয়মের’ অভিযোগে উপনির্বাচনে ৪০টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ (১২ অক্টোবর, ২০২২) সকাল ৮টায় সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলার ৫৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরাসরি মনিটরিং করছি।
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা আমরা বলব না! আমরা অনিয়ম দেখেছি, সে কারণেই। গুরুতর অনিয়ম হয়েছে।”
“আমরা নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন কমিশন। কিছু অনিয়ম হয়েছে, সেখানে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না। এতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না। তাই আমরা ওই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা পরিস্থিতি আরও পর্যবেক্ষণ করছি। চলতি বছরের ২৩ জুলাই গাইবান্ধা-৫ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়।
এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকাশ ধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন।
আরও পড়ুন: ৬০০ নারী পোশাক কর্মী নেবে জর্ডান – সরকারি খরচ মাত্র ১২০০ টাকা।