গনোরিয়া রোগটি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। এটি একটি যৌনবাহিত রোগ এবং পুরুষের হয়। এ রোগ হলে একজন মানুষ নানা দিক থেকে ভেঙে পড়ে।
বিভিন্ন জটিলতার কারণে রোগাক্রান্ত ব্যক্তিটি অনেক সময়ে যৌন অক্ষম হতে পারে। মানসিক সমস্যা হতে পারে। রোগ হলে ভয় করতে নেই।
যে কোন রোগের ক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা নিয়ে চললে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আজ আমরা আলোচনা করবো গণোরিয়া রোগ নিয়ে। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
ভূমিকা: গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত সংক্রামন (STI) যা নাইসেরিয়া গনোরিয়া অথবা গনোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে হয়। এটা “আঘাত” হিসেবে পরিচিত।
এই ব্যাকটেরিয়া প্রধানত পুরুষদের লিঙ্গ এবং মহিলাদের যোনীর নিঃসরন থেকে হয়। গনোরিয়া খুব সহজেই মানুষের মধ্যে যেভাবে যেতে পারে- অনিরাপদ যোনী , মুখ অথবা পায়ুপথে সেক্স।
কম্পন সৃষ্টিকারী অথবা অন্যান্য সেক্স পুতুল যা ধৌত করা হয়েছে এবং নতুন কনডম দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাকটেরিয়া সারভিক্স বা ডিম্বাশয়ের প্রবেশপথে সংক্রামন করতে পারে, মূত্রনালী (একটি টিউব যা শরীরের মূত্র বহন করে), পায়ুপথ এবং খুব কমভাবে গলা অথবা চোখে সংক্রামন করে।
এই সংক্রমন একটি গর্ভবতী মা থেকে তার বাচ্চার কাছে যেতে পারে। গনোরিয়া চুম্বন, আলিঙ্গন, একসাথে গোসল, একই তোয়ালে, সুইমিং পুল, টয়লেট সিট, অথবা কাপ, প্লেট, এগুলো ভাগ করার মাধ্যমে ছড়ায় না, কারন ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরের বাহিরে বেশিক্ষন টিকে থাকতে পারেনা।
লক্ষন এবং উপসর্গ: গনোরিয়ার স্বাভাবিক উপসর্গ হল যোনী অথবা লিঙ্গ থেকে মোটা সবুজ অথবা হলুদ তরল নিঃসরন হওয়া , মূত্রত্যাগের সময় ব্যাথা এবং মহিলাদের মাসিকের সময় রক্তপাত হওয়া।
তবে, ১ থেকে ১০ জন আক্রান্ত মানুষ এবং প্রায় আক্রান্তদের অর্ধেক কোন উপসর্গের অভিজ্ঞতা পায়না। পরীক্ষা করাঃ যদি আপনার গনোরিয়ার কোন উপসর্গ থাকে অথবা আপনি যদি চিন্তিত থাকেন আপনি STI নিতে পারেন , আপনার খুব শীঘ্রই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ।
গনোরিয়া নিঃসরনের কিছু নমুনা হাতলের সাহায্যে নিয়ে সেটা পরীক্ষা করার মাধ্যমে খুব সহজেই নির্নয় করা যায়। মূত্রের নমুনা পরীক্ষা করেও মানুষের মাঝে এটা নির্নয় করা যায়।
এটা যত দ্রুত সম্ভব নির্নয় করা উচিৎ কারন গনোরিয়ার চিকিৎসা যদি না করা হয় তবে তা স্বাস্থ্যে আরো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি মহিলাদের পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ (PID) বা বন্ধাত্বও সৃষ্টি করতে পারে।
গনোরিয়ার চিকিৎসা: গনোরিয়া সাধারনত একটি এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন এবং একটি এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দিয়ে ভাল করা যেতে পারে।
কার্যকরী চিকিৎসার সাথে, আপনার বেশীরভাগ উপসর্গ কিছুদিনের মাঝে উন্নতি করা উচিৎ। সাধারনত এক বা দু সপ্তাহের একটি তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তাই আপনি যদি সংক্রামনের ব্যাপারে নিশ্চিত থেকে থাকেন তবে অন্য পরীক্ষাও করানো উচিৎ। আপনার সেক্স উপেক্ষা করা উচিৎ যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি সবকিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হউন।
কারা আক্রান্ত বেশি হয়: যৌনক্রিয়ায় সক্রিয় যে কেউ গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন, বিশেষ করে যারা নিয়মিত পার্টনার পরিবর্তন করে থাকেন অথবা জন্মনিয়ন্ত্রনের বাধা হিসেবে সেক্সের সময় কনডম ব্যবহার করেন না। গনোরিয়ার অতীত সফল চিকিৎসা পুনরায় সংক্রামিত হওয়া থেকে আপনাকে বিরত রাখবেনা।
গনোরিয়া প্রতিরোধ: গনোরিয়া এবং অন্যান্য STIs সফলভাবে প্রতিরোধ করা করা হয়েছে সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রন ব্যবহার এবং অন্যান্য সতর্কতা মেনে যেমন- আপনার প্রত্যেক যোনী সেক্সে এবং পায়ুপথে সেক্সের সময় কনডম ব্যবহার করা।
যদি আপনি মুখে সেক্স করে থাকেন তবে লিঙ্গকে কনডম দিয়ে ঢেকে দিন -সেক্স পুতুল ভাগ না করা, অথবা তাদের কে পরিষ্কার করা এবং কেউ ব্যবহার করার আগে তাদের কে কনডম দিয়ে ঢেকে দেওয়া।
পরিশেষে বলা যায়, পায়ু পথে সেক্স, মুখে সেক্স এগুলো কোনো স্বাভাবিক নিয়ম নয়। সুতরাং এগুলো না করাটাই উত্তম। এভাবে সেক্স করলে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
তাই রুচি এবং মানসিকতার মধ্যে পরিবর্তন আনুন। আপনি যদি কলার ভেতরের অংশ না খেয়ে বাইরের অংশ (চোচা) খান তবে বিষয়টি অরুচিকর এবং অস্বাভাবিক।
আর আপনি যদি নিশ্চিত হয়ে থাকেন যে, আপনার মধ্যে গনোরিয়া রোগের সমস্ত লক্ষণ রয়েছে তবে দেরি না করে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং যৌন জীবনে পরিবর্তন আনুন।
আরও পড়ুন: গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায় – কোনো ওষুধ খেতে হবে না।