কুকুরের কামড়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা:
কুকুরের কামড় এর ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার জুড়ি নেই। দেশের সফল ও বিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ সফলতার সাথে এ ধরণের রোগের হোমিও চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। আজ আমরা কুকুরের কামড়ের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সম্পর্কে জানবো।
পাগলা কুকুর বা বিড়াল যদি দংশন করে বা কামড়ায় তাহলে সাথে সাথে এসিড নাইট্রিক বা কার্বলিক এসিড Q অথবা ১x শক্তি দিয়ে ভালোভাবে পুড়িয়ে দিতে হবে। পরে বেলেডোনা Q, ৩x শক্তি ২/৩ ফোঁটা করে দিনে ৪/৫ বার খাওয়াতে হবে।
কুকুর বা শিয়াল কিংবা বিড়াল যদি রেগে গিয়ে কামড়ায় বা আচড়ায় বা আচড় দেয় তাহলে সাথে সাথে বিষাক্ত হয়ে হাইড্রোফোবিয়া বা জলাতঙ্ক রোগ হয় না। ১৭/২০ দিন পরে হয়তো কুলক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কুকুর, বিড়াল বা শিয়াল যদি কাপড়ের উপর দিয়ে কামড়ায় তবে লালা তখন কাপড়ের উপরেই লেগে থাকে। বিষাক্ত হওয়ার তেমন কোনো ভয় থাকে না।
আর একটি কথা সব সময় মনে রাখতে হবে যে, কুকুর, বিড়াল কিংবা শিয়াল যদি কামড়ায় তবে কখনো মৃত্যু হবে না। কারণ, ঐ প্রাণীগুলো যদি পাগল হয় তবে ৩/৫ দিনের বেশি বাঁচে না।
যদি ঐ কুকুর, বিড়াল বা শিয়াল ১০/১৫ দিন বেঁচে থাকে তাহলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। তারপরেও রোগীকে নিয়ম করে ওষুধ খেতে হবে।
রোগীর দিকে নজর রাখতে হবে। স্বভাবে পরিবর্তন আসছে কিনা সেটাও দেখা জরুরী। যেমন, মানুষকে কামড় দিলে সেই মানুষ ক্রোধান্বিত বা পাগলা কুকুরের মতো ব্যবহার করে কিনা।
পাগলা কুকুর, বিড়াল বা শিয়াল চেনার উপায়: কুকুর পাগল হলে তার লেজ সোজা ও সর্বদা নিচে পায়ের দিকে রাখবে।
কুকুরের কামড় ও রোগ লক্ষণ:
সাধারণত কুকুরে কামড় দিলে ১ মাস পরে ক্ষতস্থানে সামান্য প্রদাহ ও স্থানসমুহ চুলকাতে থাকে, ক্রমেই রোগীর অস্থিরতা, খিটখিটে মেজাজ, রাত্রিকালে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে।
গলার পেশিগুলো সঙ্কুচিত হয়ে ঘাড় শক্ত হয়ে যায়। উজ্জ্বল আলোক সহ্য হয় না, আয়নার দিকে তাকাতে পারে না। অন্যদিকে, পানি জাতীয় পদার্থ দেখা মাত্রই চমকে ওঠে, ভয় পায়, ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ে।
তখন ধনুষ্টংকারে পরিণত হয় এবং তাড়াতাড়ি মৃত্যুমুখে পতিত হয়। কখনও উন্মাদের মতো চিৎকার করে এবং মানুষকে কামড়াতে চায়।
কুকুরের কামড় এর ক্ষেত্রে চিকিৎসা:
এসিড নাইট্রিক ও এসিড কার্বলিক এর Q, ১x শক্তি দিয়ে কামড়ানোর স্থানটি পুড়িয়ে দিতে হবে। অ্যাজা ৬x শক্তি ১ ফোঁটা করে দিনে ৪/৫ বার খাওয়াতে হবে।
বেলেডোনা ৩x, ৩০ শক্তি ১ ফোঁটা করে দিনে কয়েকবার খাওয়াতে হবে। সিকেলি কর ৬-৩০ শক্তি, স্বাভাবিক উত্তেজনা ও প্রলাপ করলে- স্ট্রেমোনিয়াম ১x দিনে কয়েকবার খাওয়াতে হবে।
ল্যাকেসিস ৬-৩০ শক্তিও প্রয়োগ করা যায়। তবে বেলেডোনা ১x ও আর্সেনিক ৬ প্রায় সময়ই আবশ্যক হতে পারে।
আরও পড়ুন: বুক জ্বালা পোড়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা।
পরিশেষে বলা যায়, আমরা কেউ-ই চাইনা যে, আমাদের কারও সাথে এমন ঘটনা ঘটুক। তারপরেও এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত কারও না কারও সাথে ঘটে যায়।
বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে তাদের সাবধানে দেখে রাখুন। কুকুর বা বিড়ালের সাথে খেলতে দেবেন না। জঙ্গলে সাবধানে হাঁটা-চলা করুন।
আর অনাকাঙ্খিত এরকম ঘটনা যদি ঘটেই যায় তবে নিকটস্থ অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে পারেন।