মানবদেহের অতীব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনী। আমাদের শরীরে দুটো কিডনী রয়েছে। একটি অকেজো হলেও আরেকটি দিয়ে কাজ চলে।
বিভিন্ন কারনে এই কিডনীগুলো নষ্ট হয়ে যায়। অনেক অনিয়ম রয়েছে যা কিডনীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা যদি সুস্থ অবস্থায় জেনে নিই যে কি কি কারনে কিডনী নষ্ট হয় তাহলে আমাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।
কিডনী সুস্থ রাখার প্রতি আমরা আর উদাসীন হবো না। তাই চলুন আজ জেনে নিই কি কি কারনে কিডনী নষ্ট হয়। আর অবশ্যই আমরা সচেতন হওয়ার চেষ্টা করবো।
ক. পরিমান মতো পানি পান না করা:
প্রতিদিন প্রতিটি মানুষেরই উচিৎ ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা। পানি ঠিকভাবে বা পরিমান মতো পান না করলে শুধু কিডনিই নয় দেহের অন্য অঙ্গও নষ্ট হতে পারে। যেমন যকৃতের ওপর চাপ পড়তে পারে। তাই প্রতিদিন পরিমান বা তার বেশি পরিমান পান করলে কিডনির উপর চাপ কম পড়ে।
খ. লবণ বা এসিডিক খাবার বেশী খাওয়া:
আমাদের খাবারের মাঝে লবণের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরী। কারন লবনাক্ততা স্বাদকে একত্রিত করে। কিন্তু মাত্রাতিক্ত লবণ গ্রহনের ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বেশী লবণ খাওয়া যাদের বদঅভ্যাস আছে তারা একটু চিন্তা করে লবণ খাবেন।
গ. প্রস্রাব আটকে রাখা:
প্রতিদিন অনেক কাজ থাকে সবারই। সময়ের কারনে অনেকেই প্রস্রাব আটকে রাখেন এবং তা দেরিতে ত্যাগ করেন। এটা মোটেও উচিৎ নয়। এতে করে কিডনির উপর মারাত্মক চাপ পড়ে।
ঘ. উদাসীনতা:
নিজের প্রতি উদাসীনতা একটা বড়ো কারণ। অনেকেই জানেন তার শরীরে সংক্রমন আছে কিন্তু সে অনুযায়ী চিকিৎসা করেননা। সংক্রমণ যদি বেশি পরিমানে ভিড় করে তবে কিডনি তো যাবেই সাথে অন্য অঙ্গও যাবে।
ঙ. বেশি বেশি মাংস জাতীয় খাবার খাওয়া:
অনেক সময় মাংস বদ হজমের কারন হয়। তাই বেশি মাংস খাওয়া কিডনি নষ্ট হওয়ার একটা বড় কারন। তাছাড়া মাংস বেশি খেলে কিডনীর ওপর চাপ পড়ে।
চ. পরিমাণ মতো খাবার না খাওয়া:
পরিমান মতো খাবার না খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। তাই ক্ষুধা হলে সাথে সাথেই খাবার খাওয়া দরকার। আর অবশ্যই প্রতিদিন সময়ের খাবার সময়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ছ. যত্রতত্র ঔষধ সেবন:
অনিয়মিতভাবে ঔষধ সেবন করলে কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে অনেক বেশি। তাই সঠিক সময় মতো ঔষধ সেবন করতে হবে। আর ব্যথার ঔষধ কিডনীর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকবেন।
জ. ঘুমের সমস্যা:
নিয়মিত না ঘুমালে বা বিশ্রাম না নিলে কিডনির সমস্যাতো হয়-ই সাথে শরীরের অন্য অঙ্গেরও সমস্যা হয়। জ্ঞান মানুষের জীবনে কখনও ক্ষতির কারণ হয়না। বরং উপকার বয়ে আনে।
নিজের প্রতি নিজের যত্নের বিষয়টাও জেনে রাখলে এবং সেই মতে নিয়মগুলো মেনে চললে সুস্থ থাকা যায়। তাইতো চিকিৎসকরা বলেন, প্রত্যেকেই যদি সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলে তাদের কাছে যাওয়ার দরকার হয় না।
পরিশেষে বলা যায়, এখানে যেসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো মেনে চললে সাধারনত কিডনী নিরাপদ থাকে। তারপরেও রোগ ব্যাধির কথা তো আর বলা যায় না।
তবে আমাদের সবার সচেতন থাকতে হবে এবং সাবধান থাকতে হবে। আর যদি মনে হয় কোন সমস্যা কিডনীতে হয়েছে তবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব চেকআপ করে নিবেন।
আরও পড়ুন: কিডনীর যত্ন নিন ঘরে বসেই