কানে পুঁজ বিভিন্ন কারনে হয়। ছোট থেকে বড় সবার এই ধরণের সমস্যা হতে পারে। তবে ছোট থেকে মাঝারী বয়সের ছেলেমেয়েরা একটু আক্রান্ত হয়।
তবে কানে পুঁজ পড়া সমস্যা বেশিদিন ধরে চলতে থাকলে শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে। কানে কম শুনতে হতে পারে। এছাড়াও আরও নানা প্রকার জটিলতা তৈরী হতে পারে।
এ সমস্যা দেখা দেয়ার পরে সময়মতো চিকিৎসা না করলে পরবর্তীতে জটিল অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। দেরিতে চিকিৎসা করা হলে চিকিৎসায় সফলতার সম্ভাবনাও কম থাকে।
তাই এই রোগ নিয়ে অবহেলা করা উচিত নয়। কানে পুঁজ বা অন্য কোন সমস্যা হলে যতো দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ ডাক্তারের কাছে (নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ) গিয়ে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
আজ আমরা জানবো কানে পুঁজ হওয়ার কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
আমাদের মধ্যে একটা ধারণা কাজ করে। সেটা হলো গোসল করার সময় কানে পানি ঢুকেছে এবং তারপর থেকে কানে পানি পড়ছে। এই ধারণাটা ঠিক নয়।
আমাদের কানের তিনটি অংশ। যথা- অন্তঃকর্ণ, মধ্য কর্ণ এবং বহিঃকর্ণ। বহিঃকর্ণ (শরীরের বাইরে যেটা দেখতে পাই) থেকে মধ্য কর্ণকে আলাদা করে একটি পর্দা।
এই পর্দা আমাদের শুনতে সাহায্য করে, বাইরের ময়লা থেকে রক্ষা করে এবং অন্ত:কর্ণকে নিরাপদ রাখে। যদি কোন কারনে এই পর্দাটি ফেঁটে যায় তখনই শুরু হয় নানা ধরণের সমস্যা।
কানে পুঁজ হওয়ার কারনসমূহ:
ক. ঘন ঘন ঠান্ডা সর্দি লেগে কানে ব্যথা হলে কিংবা কান বন্ধ হয়ে গেলে কানের পর্দা দূর্বল হয়ে যায়;
খ. বাইরে থেকে কানে খোঁচা লেগে পর্দা ফেটে গেলে;
গ. উচ্চ মাত্রার শব্দ কানে গেলে;
ঘ. কানে সরাসরি সজোরে আঘাত লাগলে;
কানে পুঁজ পড়ার বিভিন্ন কারনসমূহ:
ক. বাইরে থেকে কানে পানি গেলে;
খ. যেকোন কারনে মাত্রাতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগলে;
গ. রক্তে কোনো জীবানুর সংক্রমণ হলে;
চিকিৎসা ও পরামর্শ:
এক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রথমেই চিকিৎসা শুরু করলে সাধারণত তিন মাস ঔষধ খেয়ে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই পর্দা জোরা লেগে যায়। কিন্তু তাতে যদি ভালো না হয় সেক্ষেত্রে সার্জারী করে নিতে হবে।
চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আশা করা যায় রোগী উপকৃত হবে।
ক. মন চাইলেই যেকোন কিছু দিয়ে কান খোঁচানো যাবে না;
খ. কানে যাতে পানি না যায় বিশেষ করে পুকুরে বা নদীতে গোসলের সময় সেদিক নজর রাখতে হবে;
গ. ডুব দিয়ে গোসল না করাটাই ভালো।
ঘ. প্রয়োজনে কানে তুলা দিয়ে গোসল করতে হবে।
ঙ. ঠান্ডা যাতে না লাগে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, কান শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কানে না শুনলে জীবনে পথ চলতে অনেক অসুবিধা হয়। যারা বধির কেবল তারাই এর স্বাক্ষী।
তাই কানের নিয়মিত যত্ন নিন। যদি কোন কারনে কানে পুঁজ হয়েই যায় তাহলে দয়া করে চিকিৎসা নিন। অবহেলা করবেন না। আর কবিরাজ বা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা না নেয়াটাই ভালো।
আরও পড়ুন: কিডনীর ক্ষতি – ১০টি কারন সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ