ইসবগুল সম্পর্কে কম বেশি আমরা সবাই জানি। এটা চিনতে পারবে না এমন লোক হয়তো নেই। আমাদের জন্য এটা খুবই উপকারি।
ইসবগুলের ভুসি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। সাধারণত ঘুমানোর পূর্বে আমরা ইসবগুলোর ভুসি খেয়ে থাকি।
নিয়ম হলো- ইসবগুলের ভূসি রাতের খাবারের পরে অনেক্ষণ ভিজিয়ে না রেখে পানি দিয়ে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে হয়। এতে ফলাফল অনেক ভালো হয়। আজ আমরা এই ইসবগুলের ভূসি নিয়ে বিস্তারিত জানবো। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।
১. কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করে:
কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করতে হলে ৫-১০ গ্রাম ইসবগুল নিয়ে ১ কাপ ঠাণ্ডা বা গরম পানিতে আধাঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তাতে ২-৩ চামচ চিনি মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে বা রাতে শোয়ার আগে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
এতে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের পেটের পীড়া, কোষ্ঠকঠিন্যতায় উপকারী। যারা দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভুগছেন তারা ২ মাস নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকঠিন্য দূর হবে।
পেট স্বাভাবিক হলে সপ্তাহে ১-২ দিনের বেশি না খাওয়াই ভালো। বেশি মাত্রায় খেলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।
২. পেটের সমস্যা দূর করে:
পাকস্থলী ঠান্ডা বা শীতল রাখতে ও হজমের সমস্যা দূর করতে ইসুবগুলের তুলনা নেই। পেটব্যথার উপশম করে ইসবগুলের ভুসির শরবত।
এ ছাড়া আইবিএসের সমস্যা সমাধানে ভালো ফল দেয় ইসবগুলের ভুসি। যারা আমাশয়ে ভুগছেন, তাদের জন্যও ইসবগুল ভালো। যারা আমাশয়ে ভুগছেন, তাদের জন্যও ইসবগুল ভালো।
৩. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
আহার গ্রহণের ৩০ মিনিট আগে ১০ গ্রাম ইসবগুলের ভুসি এক গস্নাস পানিতে মিশিয়ে খেলে, খাওয়ার সময় অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা প্রশমিত করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
ইসবগুলের ভুসি একটি হাইপোকোলেস্টেরলিক ফুড, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় ও ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। এ ছাড়া এটি রক্তে ট্রাই-গিস্নসারাইডের পরিমাণ কমায়। ফলে হৃদরোগ ঝুঁকি কমে।
৬. রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ইসবগুলের মাত্রাধিক দ্রবণীয় ডাইটারি ফাইবার আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের খাদ্য শোষণ ভিলাইয়ের ওপর এক জালকের সৃষ্টি করে ফলে ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ শোষিত হয় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭. ডাইরিয়া কমাতে:
ডাইরিয়ার সময় ইসবগুলের ভুসি ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে অতিরিক্ত পানি শুষে নেয় ও স্টুলকে ঘন করে ও বারবার টয়লেটে যাওয়া থেকে বিরত রাখে।
৮. অর্শরোগে:
কোষ্ঠবদ্ধতা অর্শরোগের প্রধান কারণ। তাই অর্শরোগীরা নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খেলে ভালো উপকার পাবেন।
৯. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া:
যে কোনো কারণে প্রস্রাব হলুদ হয়ে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হলে, ইসবগুলের ভুসি তা সারাতে সাহায্য করে।
১০. যৌনতা বৃদ্ধি করতে:
প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গস্নাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে মধু ও ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খেলে যৌনতা বৃদ্ধি পায়।
১১. হাত-পা জ্বালাপোড়া:
মাথা ঘোরা বা হাত-পা জ্বালাপোড়া হলে এক গস্নাস আখের গুড়ের শরবতের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায়, ইসবগুলের ভুসি যেহেতু নানা ধরণের ঘরোয়া কাজে লাগে তাই বাড়িতে এটা সবসময়ই রাখুন। এটা অল্প দামেই কিনতে পাওয়া যায়। তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। তাই বিভিন্ন উপকারিতার স্বার্থে এটা নিশ্চিন্তেই ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ুন: কচুর ঔষধি গুণাগুণ জেনে নিন।