শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান যে আসামী আশরাফুল ইসলাম জিতু তাকে এবং তার প্রেমিকাকে বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
আসামী আশরাফুল ইসলাম জিতু ও তার প্রেমিকা একই স্কুলে পড়াশোনা করতো। এ ঘটনা ঘটার পরে স্কুলের একাডেমিক কাউন্সিল থেকে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।
গত জুন মাসের ৩০ তারিখে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান এমন তথ্য জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুসারে জিতুকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। আর ঐ ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে যদি ঐ ছাত্রী ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ হয় তবে তাকেও স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর এই ঘটনার কারণেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিতুকে গ্রেফতার করেছে। জিতুকে গ্রেফতার করার পরে যখন পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন পুলিশের কাছে জিতু স্বীকার করেছে যে, প্রেমিকার সামনে হিরোইজম দেখাতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
অধ্যক্ষ কর্তৃক সইকৃত নোটিশে বলা হয়েছে যে, জুন মাসের ২৫ তারিখে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে নৃশংসভাবে আঘাত করা হয়। আঘাত করার পরের দিনই তার মৃত্যু হয়।
ঐ ঘটনার পরে তদন্ত ও আসামীর জবানবন্দীতে ঐ ছাত্রীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। আর তাই এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদের দুজনকেই বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কলেজ চত্বরে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম জিতু গত শনিবার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করে।
ঘটনার পরের দিন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। সত্যিকার অর্থে, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক।
ঘটনার দিনই নিহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় দ্রুত মামলা করেন। পরে বুধবারে অভিযুক্ত ছাত্র ও তার বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রত্যেক আসামীকে ৫ দিনের করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের জন্য এমন ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। ছাত্রের হাতে শিক্ষক খুন বিষয়টি শুনলেই কেমন যেন মনে হয়। কোন যুগে বাস করছি আমরা?
সত্যিকার অর্থে, বর্তমান যুবসমাজ এবং ছাত্র সমাজ নষ্টের পথে। শিক্ষক ভক্তি এখন গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রীর কাছে হয়তো পাওয়া যাবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। সমাজ থেকে কেন জানি ভদ্রতা, বড়দের সম্মান এসব উঠে যাচ্ছে। বাংলাদেশে যে এমন ঘটনা আবার ঘটবে না তার কোন গ্যারান্টি কেউ দেবে না।
অতএব এসব ঘটনাকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা প্রতিটি সচেতন মানুষের চাওয়া।
আরও পড়ুন: বায়োজিদ পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু কেন ও কিভাবে খুলেছিল।